অসহ্য খরতাপে একলা যুবক দূর দূর আকাশে তাকায় চাতক পাখির মতো। মেঘ নয়, একটু বৃষ্টির আশায়। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে যুবক এলোচুলে আঙ্গুল বোলায়, যুবকের কপাল থেকে ঘাম গড়িয়ে পরে নাকের ডগায়, মুছে দেয়ার কেউ নেই চিকচিকে ঘাম! যুবক বাসা থেকে বের হয়, আনমনে সিঁড়ি ভেঙে নামে, তারপর হাঁটতে থাকে ছঁকে বাঁধা জীবনকে তুচ্ছ করে। ধূলো উড়া রাস্তা, ব্যস্ত নগর, নিরানন্দ জ্যাম, রমনীর বিরক্তিমাখা চিবুক এড়িয়ে যুবক পা চালায় উদাশ রাস্তায়। চলতে চলতে হাফিয়ে উঠে যুবক, তবুও যুবক হাটে বৃষ্টি দেবতার বাড়ি যাবে বলে! কেউ কি জানে বৃষ্টি দেবের বাড়ি কোথায়? যুবকের চোখে হতাশার ছায়া। এই শহরে একটু শীতলতার পরশ দরকার, একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস দরকার, রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রয়োজন একটু সজীবতা কোমলতার। কিন্তু কিভাবে! যুবক আনমনে বোকা হাসে, আর হাটে... সাথে ঘামে ভিজতে থাকে সাদাশার্ট। নীল জিন্সের পকেটে একহাত অন্য হাতে বিষাক্ত নিকোটিন পুড়ানো সস্তা সিগারেট নিয়ে খুলে যাওয়া জুতোর ফিতে ঠিক করে যুবক আকাশপানে তাকায়। সেখানে কয়েকখন্ড সাদা মেঘ ছুটোছুটি করছে দুষ্ট কিশোরের মতো। আস্তে আস্তে বুড়ো হবে মেঘগুলো, তারপর পানি হয়ে ঝরে পরবে মরা পৃথিবীতে... যার নাম বৃষ্টি! যুবক দ্রুত পা ফেলে, ছুটতে থাকে কচি কদমের ঠিকানায়। কদম আর যুবক একসাথে ভিজবে, অনেক দিনের জমা কথা ছড়িয়ে দিবে বৃষ্টির স্রোতে, কদমের মন ভুলানো ঘ্রান আর যুবকের নীল কষ্টের বিনিময় হবে। যুবক হাটতে থাকে কদমের উদ্দেশ্যে, বৃষ্টিদেবের বাড়ি যেতে হবে না আর! যুবক হাটে, পিছনে পরে থাকে... ব্যস্তজনপদ, বোকা রোড, উদাশ দুপুর, আলসে বাতাস, কাকের কর্কশ ধ্বনি, রমনীর অদ্ভুত চাহনী, আর একটুকরো চাঁপা নীলকষ্ট!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩