[প্রখ্যাত মার্কিন লেখক Edgar Allan Poe সারা বিশ্বের সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে একটি অতি পরিচিত নাম। তাঁর লিখিত জগদ্বিখ্যাত সম্পূর্ণ্ উপন্যাস The Narrative of Arthur Gordon Pym of Nantucket (1838) এর বাংলা রূপ এটি । বাংলা রূপান্তর © হামিদ]
উপক্রমণিকাঃ
এই অভিযাত্রার অভিজ্ঞতার গল্প লিখে প্রকাশ করার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। কিন্ত কয়েক মাস আগে দক্ষিণ সমুদ্র এবং তার আশেপাশের এলাকায় চমৎকার এই দু: সাহসিক অভিযাত্রা পর্ব্ শেষে যখন মার্কিন মুলুকে ফিরলাম তখন একটি দুর্ঘ্টনা আমাকে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডের কয়েকজন ভদ্রলোকের সান্যিধ্যে নিয়ে আসে। এই অভিযাত্রায় আমি যেসব অঞ্চল ভ্রমণ করেছি সেসবের ব্যাপারে ঐ ভদ্রলোকদের ছিল গভীর আগ্রহ । তারা ক্রমাগত আমাকে জ্বালাতন করতো লাগলেন যাতে আমি আমার সেই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা লিখে প্রকাশ করি। এটাকে যেন তারা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে নিলেন। নানা কারণে আমি এটা করতে উৎসাহী ছিলাম না। কিছু কারণ ছিল একান্তই ব্যাক্তিগত।
যেসব কারণে আমি লিখতে চাই নি তার একটি হল এই ভ্রমণের অনেক কিছুই আমি কোথাও টুকে রাখি নি। তাই আমার ভয়, কেবল স্মৃতির উপর ভর করে লেখতে গেলে অনেক ভুল হয়ে যেতে পারে। কোনো ঘটনার বিষদ বিবরণ দিতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তাতে কিছু রঙ লাগে। এটা মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা এবং এটি মানুষের কল্পনাশক্তিকে ধারালো করতে শক্তিশালি নিয়ামক হয়ে থাকে। এমনকিছু বর্ণনা স্মৃতি থেকে দেওয়া গেলেও সঠিক তথ্যে বিভ্রান্তি থেকে যেতে পারে।
না লেখতে চা্ওয়ার আরেকটি কারণ হল, ঘটনাপ্রবাহ এতটাই চমকপ্রদ আর বিস্ময়কর ছিল যে, সবার কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। স্বাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া কেবল আমার মুখের কথায় কে বিশ্বাস করবে এসব কাহিনী? (একজন বর্ণসঙ্কর ভারতীয় ছাড়া আর কোনো স্বাক্ষীও আমার নেই)
তবে এতটুকু ভরসা আছে যে আমার পরিবারের লোকেরা আমাকে অবিশ্বাস করবে না। আরও অবিশ্বাস করবে না আমার সেসকল বন্ধুরা যারা সারা জীবন ধরে আমাকে দেখে এসেছে। আমার সততার উপর তাদের অনাস্থা আসবে না। কেবল সাধারণ মানুষদের নিয়েই আমার ভাবনা। তারা হয়তো আমার বর্ণনা উর্বর ধৃষ্ট মস্তিষ্কের কল্পনা ধরে নিবে। তবে না লেখার বড় কারণগুলির একটি হল লেখক হিসেবে আমার নিজের উপর নিজের আস্থাহীনতা। এই বিস্ময়কর কাহিনী আমি ফুটিয়ে তুলতে পারব কি-না তাতে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এই কারণেই শুভাকাঙ্ক্ষিদের অনুরোধ সত্ত্বেও আমি লেখতে চাই নি।