“আমার মেয়ে একটা, তিনজনেরই খুব প্রয়োজন এবং পছন্দ, দু’জনাকে না দিলেই মান-ইজ্জত যায় যায়” এমন যখন অবস্থা ঠিক তখন সেই মেয়ের বাবার সিদ্ধান্ত নিতে বড্ড কঠিন দিন ও রাত ঠিকই পোহাতে হয়। অনেক ভাবনাতেও উত্তর মেলাতে না পেরে হাঁটতে শুরু করে একটা অজানা গন্তব্যে ঠিক যেমন চলছে এই সুন্দরী দেশটার অবস্থাও। সবাই ইহাকে খুব পছন্দ করে কিন্তু আপনি কাকে দিবেন তাহা আপনার একান্ত ভাবনা।
বাংলাদেশকে রূপের রাণী বলে অনেকেই অখ্যায়িত করেন। কেউ কেউ এই দেশকে সাফল্যের দেশ, উন্নয়নের দেশ, কম শ্রম মূল্যের দেশ, প্রগতির সহ রূপ লাবণ্যের দেশ বলেও অখ্যায়িত করেন। ইহাকে তৈল বলবো নাকি সুনাম বলবো তাহাও আমাকে কখনো কখনো ভাবিয়ে তুলে কিন্তু আমার মতন এই নগণ্য মানবের ভাবনারা অতটা দূরে গিয়ে আঁচড় কাটেনা। আর কাটেনা বলেই এই ভাবনারা মেলেনা দৃষ্টির পাখাও।
নির্বাচন নিয়ে সকলের মাথাতেই ছিলো এক বড় মাথাব্যাথা। যেহেতু সরকার নিজেই নির্বাচন পরিচালনা করছেন সেহেতু তাহারা যা চাচ্ছেন তাই হচ্ছে ক্রমশ। বিপক্ষ দলের প্রতি সহনীয় পর্যায় তো দূরেই থাকলো বরং তাদের নিধন ছিলো চোখে পড়বার মতন। কেমন জানি একজন নায়কের শাসনের মতই চলছে চক্রটা। যাহারা দেশের উন্নয়নে এতটা কাজ করেছেন বলে বেড়াচ্ছেন তাহাদের এই ভয়ে আমি শিহরিত। তরুণ হিসেবে আমাকে ইহা ভাবিয়েছে অনেকবার।
ভোটের দিন রাতে ঘুম আসছিলো না। যাহাদের খুব গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দিতে দিতে ফ্যানা তুলতে দেখতাম সেই মানুষগুলোই কিন্তু আমাকে ভোট দিতে দেননি। যদি অন্য দল ক্ষমতায় আসলেও আমার মহামারি কোন উন্নতি সাধিত হতোনা, এখনোও হয়নি তবে যখন স্বাধীন দেশে নিজের মত জানাতে আঘাত খাই ঠিক তখন ভাবায় আসলে আমি কোন দেশের একজন। তখন ভাবায় আমি আসলেই বাংলাদেশী...!
আমি সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম না তবে এখন সাহিত্য নিয়ে ভাবি কিছুটা। কেননা ভাবতে ও লিখতে ভালোলাগে বলেই। একটি দল ১০ বার ক্ষমতায় আসুক তাতে আপত্তি ছিলোনা কখনোই কিন্তু তাই বলে ভোটাধিকার হরণ মোটেই কাম্য নয় বরং এতে ক্ষোভ ও ঘৃণাই বেড়েছে। যেমনি ঘৃনা হয় সব জেনে পণ্য কেনার পর দেখি সেই পণ্যটি কিনে আমি ঠকেছি শুধুমাত্র বিক্রেতার কারনে। তিনি আসলে ভুল বুঝিয়েছেন, তিনি আসলে ইহা বিক্রি করেছেন মাত্র, সেবা দেবার ইচ্ছেটা এখানে তাহার লেশ মাত্র নেই।
দেশের এই রাণী রাণী ভাব চলবে ততদিন যতদিন এই দেশটাতে রাজারা এসে, বসে, তেল দিয়ে কিংবা কোন প্রকার প্রলোভন দিয়ে তাদেরকে বিছানার সঙ্গী বানিয়ে রাত্রি যাপন করবেন এবং রাণী তাহার সকল কিছু নিলামে উঠাবেন শুধুমাত্র রাজার অবর্তমানে ক্ষমতার ব্যবহার করবেন বলে। এই সকল রাণীরা আসলে কোন রাণীই না। এরা আসলে ক্ষমতার মুখোশের এক একজন দুষ্টু মাত্র।
আমার দৃষ্টিতে এই তিন পাত্র হলেন আমেরিকা, ভারত ও চীন। এই তিন পাত্রই বাংলাদেশ নামক পাত্রীকে খুব কাছে পেতে চায়। পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করে পাত্রীর অভিভাবকদের উপর। পাত্রির অভিভাবক যখন লোভী হয় তখন একসাথে দু’জনকেই ম্যানেজ করে টিকে থাকেন। কাউকে রান আর কাউকে সিনা দেখিয়ে চলতে থাকেন। তাহারা বিশ্বাস করেন সিনা আর রান দেখিয়ে ক্ষমতা পেলে মন্দ কি? তবে সিনা আর রান দেখার শেষে যখন তারা আরেকটু নীচে নামবেন তখন কি করা হবে একবার ভাবুন তো...!!
জানি, এই ছোট মুখে বড় কথা মানায় না তবে বিশ্বাস করি দেশকে এগিয়ে নিতে সকলের সু-দৃষ্টির নিশ্চই প্রয়োজন কিন্তু বেশী প্রয়োজন একজন অভিভাবকের। একটি কুমারী নারী ততক্ষণ ঠিক থাকেন যতক্ষণ তাহার অভিবভাবক থাকেন অবিচল, কর্মঠ, বলিষ্ঠ, আত্মপ্রত্যয়ী এবং ন্যায়ের পথে। যখনই সে কোন না কোন মোহে আটকে যাবে ঠিক তখনই হারিয়ে যাবে তাহার সকল গুণাগুণেরাও।
মনে রাখবেন সিগারেট খাওয়া বাবার ছেলেদের ৭০ ভাগই কিন্তু সিগারেট খায়, মদ খাওয়া বাবাদের বেলাতেও একই। কেনতা তাহারা দেখে দেখেই ইহা শিখে, আগ্রহ তৈরী হয়। নষ্টা মায়েরা তার মেয়েকে সঠিক বানাতে এজন্যই ব্যর্থ হন। নিজে নিজেকে পছন্দ করেন না কিন্তু অর্থের সাম্যন্য লিপ্সার কারনে বিকিয়ে দেন একই অঙ্গে নিজের সঙ্গের সাথে নিজের সন্তানের অঙ্গও। এটা কতটা নীচ মানের তা নিজেই ভেবে দেখুন একবার... তাইতো নেপলিয়ান বলেছিলেন “আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি শিক্ষিত জাতি উপহার দিবো”
আর তাইতো আমরাও ক্রমশ নষ্ট হচ্ছি সেই অভিভাবকের খেসারতের ফলেই। ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে শিক্ষিত থেকে শুরু করে একজন দিনমজুরের ভাষাও। অথচ তাহারা বুঝেইনা তাহাদের মৃত্যুটাও কিন্তু অনিবার্য্য। তাহাদের প্রতিটি বিন্দুকণার হিসেব হবে একদিন। সেদিন আর পার পাবেনা শত ছলছাতুরি থেকে। পার পবোনা আমিও। রক্ষা হবেনা শত শত ক্ষমতাধর বিজিবি, র্যা ব, পুলিশ কিংবা বিলিয়ন, ট্রিলিয়িন ডলারেও। সেখানে একটাই মুক্তির পথ, যার নাম সঠিক পথ, ন্যায়ের পথ, যে পথের নাম সিরাতাল মুস্তাকিম।
রূপের আসল নারীর রহস্য খুঁজি আমি / মিনহাজ উদ্দিন
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:১০