১.
রাস্তাঘাটে ফিনিশ মাতাল লোকজন দেখে ফিনল্যন্ডে আসা এক বাংলাদেশীর হঠাৎ ইচ্ছা হল মাতাল হওয়ার। খুবই কঠিন পণ। মাতাল তাকে হতেই হবে। মাতাল হওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে একদা একটি বারে গেল। একদিনে একজন খরিদ্দারের কাছে যে পরিমান মদ বিক্রি করার অনুমতি আছে, বার কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কয়েকবারে সেই পরিমান মদ তাকে সরবরাহ করা হল। ঐ পরিমান মদ পান করা অনেক ফিনিশ লোকজনকে মাথা নিচের দিকে আর পা উপর দিকে কিংবা হাত পা বেঞ্চের উপর আর মাথা মাটিতে; এমন রকমারী অবস্থায় এখানে সেখানে প্রায়ই দেখা যায়। অর্থাৎ পুরোররি টালে পরিনত হয়। মাগার বাংলাদেশী ছেলেটার ঐ মদে কিছুই হল না। সে মাতাল হল না। বাংলাদেশী বার হওয়ার অনুরোধ করার পর আরও মদ দেওয়া হল। বিধি বাম। তাতেও কোন কাজ হল না। যে পরিমান মদ পান করলে একজন প্রফেশনাল মাদখোরকেও হাসপাতালে নেওয়া লাগে, সেই পরিমান মদ পান করার পরও দেশী মাতাল হল না। দোকানী আর মদ না বিক্রি করায়, দেশী মনে করল বাসে উঠলে মাতাল মাতাল ভাব আসতে পারে। না বাসে উঠার পরও কিছু হল না। দেশী এবার ভাবল বাসায় গেলে নিশ্চয় মাতাল হব। কিন্তু না। বাসায় আসার পরও মাতলামীর কোন লক্ষন দেখা গেল না। সবাই তো হেসে কুটিকুটি, মদে মনে হয় ভেজাল ছিল!!
২.
হেলসিংকির সাথে লাগোয়া এস্পো সিটিতে বেশ কিছুদিন একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করতাম। প্রায়ই আমার সাথে আরেক বাংলাদেশীও কাজ করত। ফিনল্যান্ডে তখন সে একেবারেই নতুন। কয়েকটি মাত্র শব্দ ছাড়া ফিনিশ ভাষা তার একেবারেই জানা ছিল না। আমি অবশ্য একটু পুরনো হওয়ায় ক্রেতাদের সাথে প্রাথমিক কিছু কথাবার্তা চলিয়ে নিতে পারতাম। তবে ক্রেতারা খাবার সম্পর্কিত কোন কিছু জানতে চাইলে কথার অংশ বিশেষ বুঝতে পারলেও উত্তর দিতে পারতাম না। ফিনল্যান্ডের বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টের মত ঐখানেও হোম ডেলিভারী সিস্টেম চালু ছিল। কাস্টমার ফোন করে নির্দিস্ট খাবারের অর্ডার দিলে এক ঘন্টার মধ্যে বাসায় পৌছে দেওয়া হয়। আমরা দুই বাংলাদেশী একসাথে কাজে থাকলে সাধারনত আমিই ফোন রিসিভ করতাম। একদিন একজন ক্রেতা ফোন করলে দৌড়ে গিয়ে রিসিভ করলাম। কিন্তু সে বিভিন্ন খাবার সম্পর্কিত নানান প্রশ্নের অবতারনা করলে উত্তর দেওয়া আমার জন্য বেশ কঠিন হয়ে যায়। তখন আমি তাকে বললাম, Puhutko Englantia। যাইহোক তার সাথে ইংটেরীতে কথোপকথন শেষ হল। কিছুক্ষন পর আমার সহকর্মী আমাকে বলছে, বস আপনি কি বললেন এটার মানে কি। আমি বললাম বস Puhutko Englantia মানে তুমি কি ইংরেজীতে কথা বলতে পার। দেশী হাসতে হাসতে উত্তর দিল, বস আমিতো এতদিন মনে করছি Puhutko Englantia মানে "প্যাটেল ইন্ডিয়া গেছে।" (আগে ঐ রেস্টুরেন্টের মালিক ছিল প্যাটেল নামে এক ইন্ডিয়ান)
৩.
একদিন হঠাৎ এক বাংলাদেশী বন্ধু বলা শুরু করল,সাহারা খাতুনের বয়স ১২০। আমরা তো শুনে হতবাক। তাকে বললাম এই মিয়া আপনি কি ফাজলামো করেন আমাদের সাথে। সে বলল, না সাহারার বয়স ১২০ ই, আমি প্রমান দিতে পারব। আমরা খুবই অবাক হলাম। এটা কি করে সম্ভব। আত্মবিশ্বাসের সাথে সে বলল এটাও সম্ভব। তাকে বলা হল, কিভাবে এটা সম্ভব। সে জিজ্ঞেস করল, আবুল হোসেনের বয়স কত? একথা শুনে আমরা আরও আশ্চর্য হলাম। আবুল হোসেনের বয়সের সাথে সাহারা খাতুনের বয়সের কি সম্পর্ক। সে বলল, সম্পর্ক আছে। কিভাবে? উত্তর না দিয়ে উল্টো আবার আমদেরই প্রশ্ন করে বসল। সে আমাদের কাছে জানতে চাইল, আবুল হোসেন কি? আকাশ ভেঙ্গে পড়ল আমাদের মাথায়। কি সব আবোল তাবোল বলছে ও। ওর মাথা ঠিক আছে কি না তা নিয়েই কানাঘুষা চলল। বন্ধু মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলল, আবুল হোসেনের বয়স হল ৬০ আর সে হল অর্ধপাগল। তাই সাহারা খাতুনের বয়স ১২০। কারন সে ......পাগল।