এইতো কালো বিড়াল- আমারদেশ
বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বর্তমান সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এবং আড়াই বছরের হাড় ভাঙ্গা সাধনা ও প্রচেষ্টায় প্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রথম রেলমন্ত্রী। ২০০৮ সালের সংসদ নির্চবানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন চৌদ্দ দলীয় জোটকে বিজয়ী করা হলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার দোয়াই দিয়ে বাবু সুরঞ্জিত নতুন সরকারের মন্ত্রীত্ব পাওনাই মনে করেছিলেন। কিন্তু নিয়তির সাথে সাথে একেবারেই নির্দয় হলেন জননেত্রী (!)। মঈন-ফকরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মীর জাফরি করায় বাবুর মন্ত্রীত্ব না পাওয়াকে অনেকেই স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলেন। কিন্তু বাবু সুরঞ্জিত সাধারনভাবে সেটা মেনে নিতে পারেন নি। কামরুল-টুকু-দীপুমনি-সাহারার মত নেতারা যদি মন্ত্রী হয়, সেটা কি সুরঞ্জিত বাবুর মত অপ্রতিদ্বন্দী মহাপার্নেওয়ালা রাজনীতিবিদের জন্য মেনে নেওয়া সম্ভব? কোনভাবেই না। তাই মন্ত্রীত্ব পাওয়ার ইচ্ছা-আকাঙ্খাকে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিলেন হালের ক্রেইজ বাবু সেনগুপ্ত।
চেহারা-সুরৎ আর পোষাক আশাকের অবস্থা যাই হোক বাবু সুরঞ্জিত কাউকে পাত্তাই দেন না। অন্য কিছুতে না হলেও কথা বার্তায় বড্ড জমিদারি ভাব। কথা বলার সময় বাকা একটা অট্ট হাসি লেগেই থাকে। তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের সুরে বেশিরভাগ সময়ে যা ইচ্ছে তাই ই বকে যান। নিকট অতীতে মন্ত্রীন্ত না পাওয়ার বেদনা থেকে বাবুর ভাল মানুষ সাজার প্রানপণ চেষ্টা অনেককেই আকৃষ্ট করেছে। পান থেকে চুন খসলেই বাবুর বাকাঁ হাসি মিশ্রিত ভাল কথার ফুলঝুড়ি আর ক্যামেরার মুহুর্মুহ ফ্ল্যাশ ছিল নতুন বার্তার পূর্বাভাস। রাজনীতি, ধর্ম, আইন, অধিকার, ন্যায় বিচার, সততা কোনটাই বাদ যায়না বাবুর বক্তৃতা বিবৃতি থেকে। দর্শক শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টিকারী স্বঘোষিত কিং খান ঢালিউড সেনসেশন (হিজড়া নামেও খ্যাত) সাকিব খানের মতই বাবু সুরঞ্জিতও আবির্ভূত হলেন রাজনৈতিক অঙ্গনের কিং হিসেবে। বর্তমান সরকারের উচ্চ মহলও বাধ্যে হল বাবুকে একখানা মন্ত্রীর কেদারায় আসন দিতে।
তিলকে তাল করতে সুরঞ্জিত বাবুর জুড়ি মেলা ভার। আর তা যদি হয় কোন ধর্মীয় বিষয় তাহলে তো কথায় নেই। ইসলাম এবং মুসলমানদের বাবু কোনভাবেই সহ্য করতে পারেন না। তিনি একজন ধর্মনিরপেক্ষও বটে। ধর্মনিরপেক্ষতার নানা ভাল দিক নিয়ে বেশ কবার অনেক কথাও বলেছেন। ৭২ এর সংবিধানের দোয়াই দিয়ে বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে কায়েম করার চেষ্টা করেছেন, সফলও হয়েছেন। সরকার বাবুদের খুশি করতে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সন্নিবেশন করেছে। বাবু সুরঞ্জিত যেভাবে নিজ দলের একাধিক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিলাপ করছিলেন তাতে আমাদের মত আম জনতার কাছে ধর্মনিরপেক্ষতার নতুন কোন চেহারা উকিঝুকি মারছিল। দেশে বর্তমান যে 'ধরো মারো খাও' অবস্থা, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করায় মনে হয়েছিল চুরি চামারি একটু কমবে। মাগার এখনতো দেখছি আমরা শিয়ালের কাছেই মুরগী বরগা দিয়েছি।
সুরঞ্জিত বাবু এর আগে সরকারের অনেক বাঘা বাঘা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন। ঐসকল মন্ত্রীদের ব্যক আপ থাকায় বহাল তবিয়তেই আছেন এখনও, বড়জোর কারো কারো দফতর পরিবর্তন হয়েছে এই যা। কিন্তু সুরঞ্জিত বাবুর কি হবে আমিতো সেটা ভেবেই কূল কিনারা হারাচ্ছি। ধর্মনিরপেক্ষরাই বা ব্যাপরাটা কিভাবে নিবে সেটাও ভাবনার বিষয়। এত বড় অপকর্মের পর এবার হয়ত বাবুর অহমিকাটা একটু কমবে। আবুলরা কি এবার সহজেই ছেড়ে দিবে? এখন দেখা যাচ্ছে যত বড় মন্ত্রী তত বড় চোর। আর সুরঞ্জিত বাবু আর একধাপ এগিয়ে। তিনি একজন বড় মাপের ধর্মনিরপেক্ষ চোর।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫০