গত পর্ব সমুহে আমরা রুকু, সিজদা ও তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) এর অর্থ এবং কেন পড়ি তা জানতে পারি এখন দেখবো নামাজ শেষ করার আগে ও পরের দোয়া সমুহ
২২।দরুদ পড়া:
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ
[হে আল্লাহ্! হযরত মোহাম্মদ (দঃ) এবং মোহাম্মদ (দঃ)-এর আওলাদগনের উপর তোমার খাস রহমত নাযিল কর, যেমন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর আওলাদগনের তোমার উপর খাস্ রহমত নাযিল করেছ, নিশ্চয়ই তুমি প্রসংশার যোগ্য এবং সর্বোচ্চ্ সন্মানের অধিকারী]।
আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাক্’তা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ
[হে আল্লাহ্! হযরত মোহাম্মদ (দঃ) এবং মোহাম্মদ (দঃ)-এর আওলাদগনের উপর তোমার খাস বরকত নাযিল কর, যেমন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর আওলাদগনের তোমার উপর খাস্ বরকত নাযিল করেছ, নিশ্চয়ই তুমি প্রসংশার যোগ্য এবং সর্বোচ্চ্ সন্মানের অধিকারী]
২৩। বরকতের দু‘আ পড়া: অত:পর নামাজ শেষ তাশাহ্হুদ ও দুরুদ পড়ার পর আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে জাহান্নামের আজাব ও কবরের আজাব থেকে, জীবন-মৃত্যূর ফেতনা থেকে এবং মসীহ দাজ্জালের ফেতনা থেকে। তারপর আপন পছন্দমত আল্লাহর কাছে দু’আ করবে, বিশেষ করে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত দু‘আ গুলো ব্যবহার করা সবোর্রত্তম। তন্মধ্যে একটি হল নিম্নরূপ:
«اَللهُمَّ أعِنِيْ عَلَى ذِكْركَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِِ عِبَادَتِكَ»
«اللهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّلا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلا أنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ»
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আ-ইনী আলা-জিক্রিকা ওয়া শুক্রিকা ওয়া হুস্নি ইবাদাতিক। আল্লাহুম্মা ইন্নী জালাম্তু নাফসী জুলমান কাসীরাউ” ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্জুনু-বা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলী মাগফিরাতাম্ মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আন্তাল গাফুরুর রাহীম।
অর্থ: হে আল্লাহ ! আমাকে তোমার জিকির, শুকরিয়া আদায় ও ভালভাবে তোমারই ইবাদত করার তাওফীক দাও। আর, হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজের উপর অনেক বেশী যুলুম করেছি, আর তুমি ছাড়া গুনাহসমূহ মাফ করতে পারেনা, সুতরাং তুমি তোমার নিজ গুনে আমাকে মার্জনা করে দাও এবং আমার প্রতি রহম করো, তুমিতো মার্জনাকারী অতি দয়ালু”।
দরুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বের দোয়া :
রব্বানা- আ-তিনা- ফিদ্দুনিয়া- হাসানাতান, ওয়া ফিল আখেরাতি হাসানাতান, ওয়াক্বিনা- আযা-বান্নার।
অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন এবং আখেরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।
আল্লা-হুম্মা ইন্নী- আ’ঊযুবিকা মিন আযা-বি জাহান্নাম, ওয়া মিন আযা-বিল ক্বাবরি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া- ওয়ালমামা-তি ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসী-হি দ্দাজ্জাল।
অর্থঃ আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় কামনা করি জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের ফেৎনা থেকে।
পিতামাতার জন্য দোয়া এবং আরও যত দোয়া আছে তা এখানে করা ভাল:
আল্লাহপাক এ দোয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়ে বলেছেন¬ বলুন! ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা’। হে প্রভু! তাদের (পিতা-মাতা) উভয়ের প্রতি রহম করো, যেমন তারা আমাকে শিশুকালে লালন-পালন করেছেন”।
রাব্বি জাআলনি মুকিম-আস-সালাতি ওয়া মিন জুররিয়াতি রাব্বানা ওতাওব্বাল দোয়া, রাব্বানা গিফিরলি ওয়ালি ওয়ালেদাইয়া ওয়া লিল মুওমিনিনা ইওমা ইয়াকুমুল হিসাব
হে আল্লাহ/মালিক/প্রভু আমাকে আমার প্রর্থনায় এবং আমার দানের উপর কায়েম থাকার তৌফিক দিন, হে আল্লাহ/মালিক/প্রভু আমার গুনাহ সুমুহ মাফ করে দিন এবং আমার পিতামাতার ও সকল বিশ্বাসীর গুনাহ মাফ করে দিন যখন শেষ বিচারের দিন আসবে।
২৪। সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করা:
প্রথমে মাথা ডান দিকে ফিরিয়ে বলা আসসালামু আলাইকুল ওয়া রাহমাতুল্লাহ এবং পরে বাম দিকে ফিরিবে বলা আসসালামু আলাইকুল ওয়া রাহমাতুল্লাহ যার অর্থ: আপনার উপর সালাম ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।
এভাবে দুরাকাত নামাজ পড়া হয়. নামাজ যদি তিন রাকাত( যেমন মাগরিব) হয় তবে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদার পড় বসে তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) পড়ার পর দাড়িয়ে যাবে এবং প্রথম রাকাতের মত পরবে সুরা ফাতিহা এবং বাকি সকল কিছু করার পড় সিজদা তে গিয়ে যদি তিন রাকাত হয় তবে দ্বিতীয় রাকাতের শেষের মত তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) , দরুদ ও বরকতের দু‘আ পড়ে সালাম ফিরাবে আর
যদি চার কাত হয় তবে তবে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদার পড় বসে তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) পড়ার পর দাড়িয়ে যাবে এবং প্রথম রাকাতের মত পরবে সুরা ফাতিহা এবং বাকি সকল কিছু করার পড় সিজদা তে গিয়ে দাড়িয়ে যাবে ফলে তিন রাকাত পরা হল এখন চতুর্থ রাকাত শুরু করবে (সুরা ফাতিহা, রুকু সিজদা করে)এবং দ্বিতীয় রাকাতের মত তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) পড়ার পর দরুদ ও বরকতের দু‘আ পড়ে সালাম ফিরাবে ।
সালাম ফিরানোর পরের তাসবীহ সমুহ : আস্তাগফিরুল্লাহ্ (আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি)
**আল্লা-হুম্মা আনতাস্ সালা-মু, ওয়ামিনকাস্ সালা-মু, তাবা-রাকতা ইয়া-যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।
অর্থঃ হে আল্লাহ্, তুমি প্রশান্তি দাতা, আর তোমার কাছেই শান্তি, তুমি বরকতময়, হে মর্যাদাবান এবং কল্যাণময়।
سبحان الله (সোবহানাল্লাহ্) (আল্লাহ্ মহাপবিত্র) ৩৩ বার, الحمد لله (আল-হামদুলিল্লাহ্) (সকল প্রশংসা আল্লাহর) ৩৩ বার এবং الله أكبر ( আল্লাহু আকবার) (আল্লাহ্ সবচেয়ে বড়) ৩৩ বার পড়বে আর একশত পূর্ণ করতে নিম্নের দো’আটি পড়বে।
(لاَإِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَشَرِيْكَ لَهُ ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَعَلىكُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ )
উচ্চারণঃ (লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারী-কালাহু,লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু,ওয়া হুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইইন ক্বাদী-র।)
অর্থঃ আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সব কিছুর উপর ক্ষমতাশালী।
**লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারী-কালাহু,লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু,ওয়া হুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইইন ক্বাদী-র। আল্লা-হুম্মা লা- মা-নি’আ লিমা- আ’তাইতা, ওয়ালা- মু’তিয়া লিমা- মানা’তা, ওয়ালা ইয়ানফা’উ যালজাদ্দি মিনকালজাদ্দু। লা- হাওলা ওয়ালা- কুওওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়ালা- না’বুদু ইল্লা- ইয়্যা-হু, লাহুন্নি’মাতু ওয়ালাহুল ফাদ্বলু, ওয়ালাহুস্ ছানা-উল হাসানু, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিসী-না লাহুদ্দী-না ওয়ালাউ কারিহাল কা-ফিরূন।
**অর্থঃ আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপরেই ক্ষমতাশালী। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করেছো, তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা নিষিদ্ধ করেছো তা প্রদানকারীও কেউ নেই। এবং কোন সম্মানী ব্যক্তি তার উচ্চ মর্যাদা দ্বারা তোমার দরবারে উপকৃত হতে পারবে না। তোমার শক্তি ছাড়া অন্য কোন শক্তি নেই। আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই। আমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি, নেয়ামতসমূহ তাঁরই, অনুগ্রহও তাঁর এবং উত্তম প্রশংসা তাঁরই। আল্লাহ্ ছাড়া কোন (সত্য) মা’বূদ নেই। আমরা তাঁর দেয়া জীবন বিধান একমাত্র তাঁর জন্যই একনিষ্ঠ ভাবে পালন করি। যদিও কাফেরদের নিকট তা অপছন্দনীয়।
আয়াতুল কুরসীঃ আল্লাহু লা- ইলাহা ইল্লা- হুওয়া, আল হাইয়্যুল কাইয়্যু-ম, লা-তা’খুযুহু ছিনাতুউঁ-ওয়ালা-নাউ-ম, লাহু- মা- ফিচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা- ফিল ‘আরদি; মান্ যাল্লাযী- ইয়াশফা’উ ‘ইন্দাহু- ইল্লা- বিইয্ নিহি, ই’য়ালামু মা-বাইনা আইদী-হিম ওয়ামা- খালফাহুম, ওয়ালা- ইউহী-তূ-না বিশাইয়িম্ মিন ‘ইলমিহী-, ইল্লা- বিমা-শা-আ, ওয়াছি’আ কুরছিয়্যুহুচ্ছামা-ওয়া-তি, ওয়াল ‘আরদা, ওয়ালা- ইয়াউ-দুহু হিফজুহুমা- ওয়াহুয়াল ‘আলিয়্যুল আযী-ম।
অর্থঃ আল্লাহ্;তিনি ছাড়া অন্য কোন (সত্য) মাবূদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব,সবকিছুর ধারক, তাঁকে তন্দ্রা এবং নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর। কে আছে এমন যে,তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে তা তিনি অবগত আছেন। যতটুকু তিনি ইচ্ছে করেন, ততটুকু ছাড়া তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসী সমস্ত আকাশ ও পৃথিবী পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করা তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি মহান শ্রেষ্ঠ। [সূরা আল-বাকারাহঃ ২৫৫]
অর্থপূর্ন ও বরকতময় নামাজ পুর্বের পোস্ট সমুহ দেখতে
Click This Link
অর্থপূর্ন ও বরকতময় নামাজ বই আকারে পিডিএফ ফাইল পড়তে ও ডাউনলোড করতে
Click This Link
Meaningful Prayer in English PDF Document Read or Download
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১২ দুপুর ১:০৯