৮। আল্লহু আকবার বলে রুকু করা: এবং রুকুতে (তিন বার) বলা
রুকুর তাসবীহ্: সুবহানা রব্বিয়াল আযীম (আমার মহান প্রভু পবিত্র)
রুকু( ঝুকা/ নিচা হ্ওয়া/শ্রদ্ধায় নত করা)-: সুবহান এসেছে মুল শব্দ সাবাহা থেকে অর্থ যা ভাসে/ ভাসমান অবস্থা/ পিছলায় না, যা বুঝায় এমন কিছু যা ডুবে যায় না বা পড়ে যায় না - কিন্তু এটার স্তর বজায় রাখে/ সর্বদা নিজের উচ্চতা বজায় রাখা/ সর্বদা নিজেকে ধরে রাখে।
এজন্যই আল্লাহ বলেছেন: নিজ সর্ম্পকে 'সুবহানাল্লাহ" মানে সর্বদা নিজের উচ্চতা বজায় রাখেন ,যখন অবিশ্বাসীরা আল্লাহর সর্ম্পকে অপবাদ দেয় /কুৎসা রটনা করে যে আল্লাহর সন্তান বা মেয়ে বা অংশিদার আছে।
সুবহ=পরিপূর্ণতা/পূর্ণাঙ্গ রূপে ভাসমান বা উচ্চ অবস্থায় সকল মিথ্যা ও খারাপ হতে ও সকল অংশিদার হতে,
সুবহ-আন=অজস্র্র/আধিক্যপূর্ণ/অনেক/ পরিপূর্ণতা/পূর্ণাঙ্গ
অর্থ তিনি পরিপূর্ণ
তাই সুবহানা রাব্বি বলাতে আমরা বলি অনেক(বহু/ঢের/অজস্র্র/) পরিপূর্ণ আমার রব/ আমার কর্তা/আমার মালিক/আমারপ্রভু/আমার পরিচালক ।
রুকুর সাথে এর অর্থ হচ্ছে: আল্লাহর কাছে আমরা রুকু করে ( ঝুকা/ নিচা হয়ে) আমরা এমন অবস্থায় যাই যা আমাদের নরমাল/সাধারন অবস্থা হতে নীচে. যা বুঝায় আমরা 'সুবহ-আন' পরিপূর্ণতা/পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় নেই ( পুর্ন ব্যলেন্সড/সামঞ্জস্য বজায় রাখা/ভারসাম্যবজায় রাখা এবং দাড়ান অবস্থায় নেই) এবং আমরা রুকু করছি/নীচা হচ্ছি তার কাছে যিনি সর্বদা পরিপূর্ণতা/ পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় আছেন।
এর অপরূপ সৌন্দর্য: এই জন্যই আমরা সবাই রুকুতে বলি "সুবহানা রাব্বি" (পরিপূর্ণতায় আমার প্রভু /পূর্ণ উচ্চতায় তিনি আল্লাহ), আমরা নম্র ভাবে / নিজেকে নত করে/নিরহঙ্কার ভাবে/অবনমিত হয়ে দেখাচ্ছিযে আমরা আল্লাহর পরিপূর্ণতায় নিজেদেরকে শ্রদ্ধায় নত করছি।
আল-আযীইইম ( العظيم ) এসেছে আযম( عظم ) থেকে যার অর্থ= হাড্ডি
হাড্ডি হচ্ছে শক্ত এবং দৃঢ় মজবুত,কঠিন এবং আমাদের দেহে হাড্ডিতে সকল শক্তি ও দেহের গঠনের উপাদান বিদ্যামান
তাই আল্লাহ হচ্ছেন আযম = শক্ত,দৃঢ় , শক্তিশালী
আল-আযীইইম( العظيم ) (এখানে ঈয়া অক্ষর দ্বিতীয় মুল অক্ষরের পরে উল্লেখ করছে 'অটল/দৃঢ়/অবিচল'= তিনি সর্বদা অটল/দৃঢ়/অবিচল, শক্তিশালী =সুবহানা রব্বিয়াল আযীম হচ্ছে আমার প্রভু পরিপূর্ণ, তিনি সর্বদা অটলদৃঢ়/অবিচল, এবং শক্তিশালী
রুকু: (শ্রদ্ধায় নত করা)- আমরা আল্লাহকে প্রশংসা করি গুণগান করি যেন আমার প্রভু আল -আযীম =দৃঢ়,শক্তিশালী, এবং আমরা জানি আযম (হাড্ডি)=অটল/অবিচল তাই আল্লাহ তিনি সর্বদা অটল/দৃঢ়/অবিচল, এবং শক্তিশালী
এখন দেখুন একটা বিষয় যা আমরা চিন্তা করি না: শেখ আব্দুল নাসির জান্দা বলেছেন তার আফসিরে (মনেহয় সুরা হাক্কা ৬৯.৫২ তে) যে যখন আমরা রুকু করি(নীচা হই) আল্লাহর কাছে তখন আমরা সবচেয়ে দুর্বল/ঠিক স্বাভাবিক অবস্থায় নয় এমন /শক্তিহীন / নরম/ভঙ্গুর /অক্ষম অবস্থায় থাকি. – তাই যদি খুবই শক্তিশালী লোকও যদি রুকু রত অবস্থায় থাকে এবং একটা ছোট ছেলে/শিশুও যদি তার কাছ দিয়ে দৌরিয়ে যায় এবং ঘটনাক্রমে/অকস্মাৎ/হঠাত তাকে ধাক্কা দেয় তবে সেই শক্তিশালী লোকটাও খুব সম্ভবত পরে যাবে এবং তার স্থায়ী অবস্থা হারাবে - তার মানে এই যে আমরা সর্বদা অটল/দৃঢ়/অবিচল নই ।
এর অপরূপ সৌন্দর্য এই যে আল্লার কাছে শ্রদ্ধায় নত হওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের দুর্বলতা এবং শক্তিহীনতা/ দৃঢ় হীনতা আল্লার কাছে প্রকাশ করছি যিনি সর্বদা অটল/দৃঢ়/অবিচল, এবং শক্তিশালী তাকেই মানছি আমাদের মালিক/প্রভু/ একমাত্র ইলাহ।
শিক্ষা: রুকুর মাঝে শ্রদ্ধায় নত হয়ে আমাদের দুর্বলতা এবংশক্তি হীনতা/ দৃঢ় হীনতা আল্লার কাছে প্রকাশ করে আমরা বুঝি আমাদের জীবন সর্বদা এক অবস্থায় থাকে না , জীবনে ভাল সময় খারাপ সময় উত্থান পত্তন আসে আর সকল সময়ে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রাখি তিনি যেন আমাদের সঠিক পথ দেখন।
**************************************************
৯। রুকু হইতে উঠিবার তাসবিহ্
সামিআল্লাহু লিমান হামিদা
(যে আল্লাহর প্রশংশা করে, আল্লাহ তা শোনেন)।
**************************************************
১০। রুকু হইতে উঠে সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়ার তাসবিহ্
রব্বানা লাকাল হাম্’দ্
(হে আমাদের রব! তোমার জন্যই সকল প্রশংসা)।
বিদ্র: আমি যথা সাধ্য চেস্টা করছি কোরআন বা সহীহ হাদিসের রেফারেন্স + ছবি ও ভিডিও সহ দিতে . যদি ভুল ভ্রন্তি হয় ক্ষমার চোখে দেখবেন এবং আমাকে অবশ্যই জানাবেন যাতে শুধরে নিতে পারি। সাথে থাকুন ইনশাআল্লাহ পযায়ক্রমে বাকি গুলোও পোস্ট করব
অর্থপূর্ন ও বরকতময় নামাজ পুর্বের পোস্ট সমুহ দেখতে
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১২ দুপুর ১২:৩৭