মাঠে তার যত রক্ত ঝরুক অথবা অশ্রু ঘাম,
ফসলের গায়ে লেখা রইবে না, ওই কৃষকের নাম।
- ইমতিয়াজ মাহমুদ
সমালোচনা:
ফসলের গায়ে কৃষকের নাম লেখার দরকার নেই। কৃষক কত মহান ও কর্মঠ তাও প্রচার করে বেড়ানো অর্থহীন, কারণ কৃষক মহান নয় এমনকি কৃষি কাজের চেয়ে আরো অনেক পেশা আছে যা অনেক কষ্টের ও পরিশ্রমের। কৃষক বিনা স্বার্থে আমাদের ধান চাল গম দেয় না। আমরা মূল্য পরিশোধ করি; যেমন মূল্য পরিশোধ করি রিকশাওয়ালা, কাজের লোক বা দিন মজুরদের। খাদ্য উৎপাদন করলেই কেউ মহান হয়ে যায় না, করো পেশা কাউকে মহান বা নীচ করে না। যে যার যোগ্যতা, সুবিধা ও সুযোগ অনুযায়ী কাজ করে। সমাজে যে পণ্যের চাহিদা আছে, কেউ না কেউ উৎপাদন করবেই, কারো জন্যে উৎপাদন বন্ধ থাকবে না।
কৃষকদের নিয়ে এত আবেগীয় কথা বার্তার পেছনের একটা কারণ হতে পারে আমাদের জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশ কৃষক বা কোনোভাবে কৃষিনির্ভর অথবা পূর্বপুরুষ কৃষক। তাই এটা নিয়ে সমাজে একটা তীব্র আবেগ কাজ করে। সেই আবেগকে উস্কানি দিয়ে কৃষকদের নিয়ে এত মায়াকান্না চারপাশে, এত বড় একটি জনগোষ্ঠী আপনারে ধন্য ধন্য করলো। যেমনটা আমরা দেখতে পাই ধর্ম, জাতিগোষ্ঠী, দেশ বা দলকে মহৎ করে সেই মতের সাথে সহমত লোকেরা তাকে দিব্য জ্ঞান করে। অল্প পরিশ্রমে মানুষের কাছে প্রিয় হওয়ার এ এক অনন্য উপায়।
দ্বিতীয়তঃ সমাজে একটি ধারনা প্রচলিত যে কৃষকেরা নায্য দাম পায় না, সে কারণে লোকে তাদের নিয়ে আহাজারি করে। নায্য দাম কে পায় এই দেশে? দিন মজুর, গৃহকর্মী, শিক্ষক, বাড়িতে দিনরাত খেটে মরা গৃহিণী? পৃথিবীতে কেউই নায্য দাম পায় না। নায্য দাম বলে কিছু হয় না। আপনার যোগ্যতা ও কর্ম কতটা অর্থনীতির জন্য দরকারি ও বাজারে চাহিদা আছে তার উপর নির্ভর করে আপনি আয় করবেন। আপনি নায্য দাম না পেলে পেশা পরিবর্তন করুন। শহরে যদি রিক্সার চাহিদা কমে যায় তাহলে রিক্সাওয়ালাদের আয় কমবে। এখন সেই আয় তাদের কাছে পরিশ্রমের নায্য পারিশ্রমিক না মনে হলে তাদের সামনে একটাই পথ, তা হলো পেশা পরিবর্তন করা। এটাই বাস্তবতা, সবার জন্য একই নিয়ম। কৃষককেও এই বাস্তবতা মানতে হবে। তবে কেউ সিন্ডিকেট করে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে কৃষককে ঠকালে সরকারের দায়বদ্ধতা থাকবে।
০৫-০৬-২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:০০