ছেলে শিশুদের বিভিন্ন স্থানে যখন পালক গজায়, তখন তারা বালকে পরিণত হয় ... বয়সটা ১৩-১৪ বছর... ক্লাস সেভেন-এইটে পড়ুয়া একটা ছেলে তখন নিজেকে খুব বড় হয়ে গেছে বলে মনে করে... প্রকৃতির এক আশ্চর্য নিয়মে এই বালকেরা খুব সুন্দর খিস্তি শিখে যায়... আমিও এর ব্যতিক্রম ছিলাম না... গল্পটাও আমাকে নিয়ে...
ক্লাস সেভেনে পড়ি... আম্মার সাথে নানাবাড়ি গিয়েছি, তবে সেটা আমার নানির ছোট বোনের বাড়ি... তো সেই নানির ছোট মেয়ে (নাম- #চুমকি) মানে আমার সেই খালাও সেভেনে পড়ে এবং অনেক সুন্দরী... তবে বয়সে আমার থেকে বছর খানেকের ছোট (আমি বুঝি না, মেয়েরা এই বয়সে কিভাবে যে এত সুন্দর হয় ... আর ছেলেগুলোকে এই বয়সে দেখতে ঠিক খচ্চরের মত লাগে ... (আমার কথা নাই বা বললাম )...
চুমকির সাথে ছাঁদে বসে গল্প করছি... হঠাৎ ছোট মামা গর্জন করে উঠল... সারা বাড়ি মাথায় তুলে ফেলেছে... কারণ আর কিছুই না... আমার এই খালার সাথে কথা বলার জন্য একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে প্রায়ই ফোন আসে... এই নিয়ে বেশ কয়েকবার তুলকালাম কাণ্ডও বেঁধে গেছে... চুমকি আমার কাছে সল্যুশন চাইল...
আমি আমার সদ্য উঠা গোঁফে তা দিয়ে বললাম, “যা, মোবাইল ফোনটা নিয়ে আয়...” সে ফোন নিয়ে আসল... রিসিভ নাম্বারগুলো বের করলাম... প্রথমে যেটা ছিল ঐটা দেখিয়ে বললাম, “এইটা কি সেই নাম্বার???”
-হ্যা
-খাড়া... ওর ফরটিন্থ জেনারেশন আমি উদ্ধার করে দিচ্ছি...
নাম্বারটায় কল দিলাম... আমি তো তখন ফুল ফর্মে আছি... একে তো পাশে সুন্দরী মেয়ে দাড়িয়ে আছে, তার উপর একজন ইভটিজারকে শায়েস্তা করব... ভাবতেই আমার ২৪ইঞ্চি বুক ফুলে ২৮ইঞ্চি হয়ে গেল...
ওপাশে কল রিসিভ হোল... “হ্যালো... স্লামালিকুম”
-তোর সালামের **** মারি... ঐ **** পো... একটু আগে ফোন কইরা কারে কি বলছিস...
-ভাই আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না...
-************************* (ছাপার অযোগ্য ভাষা)
-ভাই আপনি কিন্তু লিমিট ছাড়িয়ে যাচ্ছেন...
-******************(ছাপার অযোগ্য ভাষা)
-আরে ভাই আপনি এইগুলা কি বলেন, আমি তো এইগুলা কিছুই করি নাই
-********************(ছাপার অযোগ্য ভাষা)
ফোন কেটে বললাম, “যা, ফোনটা জায়গা মত রেখে আয়...”... আমার মধ্যে তখন #Dabang এর সালমান খান ভর করেছে
ফোন রেখে আশা হোল... আমরা আবার গল্প করছি...
দু মিনিট না যেতেই আবার হইচই... ছোট মামা এবার বাড়ি না, পুরো এলাকা মাথায় তুলে ফেলেছে... নিচে যেয়ে জানতে পারলাম, একটু আগে তার সুমন্ধি ফোন করেছিল... মামার মোবাইল থেকে কে যেন তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে...
আমি তো তখন পুরো বঙ্কিমচন্দ্র হয়ে গেছি... আমি ফিসফিস করে চুমকিকে বললাম, “ঐ শয়তান ছেমড়ি... তোরে যে নাম্বার থেকে ডিস্টার্ব করে... সেটা মুখস্থ করে রাখবি না...”
-ভুল হয়ে গেছে...
একটু পরে মামার সুমন্ধি বাড়ি এসে হাজির, মামাকে ধোলাই দেয়ার জন্য... আর মামিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য... এখনি কুরুক্ষেত্র বেঁধে যাবে...
তখন আমি আবার নায়কের ভুমিকায় অবতীর্ণ হলাম... ওদেরকে বুঝিয়ে বললাম, “Call divert হয়ে গেছিল... এবং কিভাবে Call divert হয়ে এই ঘটনা ঘটল সেটাও বুঝিয়ে বললাম...” এভাবে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হল...
এই ঘটনা এভাবে সমাপ্ত করার জন্য অবশ্য চুমকি আমাকে একটা কাঠি লজেন্স (ললিপপ) খাইয়ে ছিল...
আমি আক্ষেপ করে বলেছিলাম, “শুধু এই লজেন্স দিলি... আমি তো অন্য কিছু আশা করেছিলাম...”
চুমকি কি উত্তর দিয়েছিল জানেন???
-“তুই আমার ছোট ভাইয়ের যে সর্বনাশ করতে যাচ্ছিলি... তোকে যে এখনও আমি ঝাঁটার বাড়ি দেইনি, এইত অনেক...”
সাধে কি রবি ঠাকুর বলেছিলেন, "তের-চৌদ্দ বছরের ছেলেদের মত বালাই পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই..." :v :v :v