ছোট বেলা থেকেই আম্মুর প্রতি এক রাশ অভিমান জমা করে নিয়েই বড় হয়েছি।এখনকার বাচ্চাদের মত কোন কিছু মুখ দিয়ে বের করার আগেই পেয়ে ফেলেছি এমনটা হয়নি।আব্বুর সরকারী চাকুরি মাসের পনের দিন যেতেই টানাটানির গল্প শুনে বড় হতে হয়েছে।আম্মুকে কোন দিন ভালো দামী শাড়ি পড়তে দেখিনি।আমাদের দুই বোনের খুব অভিযোগ ছিলো ছোট বেলায় ওর এই জিনিস আছে আমাদের কেন নেই??ছোট বেলায় বুঝতাম না এখন বড়বেলায় বুঝি অভাব ছিলো আসলে ব্যাপারটা তা না।আম্মু চাইতেন আমারা অল্প নিয়ে ভালো থাকতে শিখি।প্রতিটা জিনিসের মূল্য দিতে শিখি আর শিখি যে কোন কিছু পেতে হলে আমাকে কষ্ট করতে হবে।মানুষ কোন জিনিস চাওয়ার সাথে সাথে যদি পেয়ে যায় তবে তার মূল্য দিতে শেখে না।আমার আর আমার বোনের একটা প্রচলিত কথা ছিলো 'ঐ যে শুরু হইছে আম্মুর অভাবের গান'। ঐ দিনের ঐ অভাবের গান আজকের এই আমাকে সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত করে তুলেছে। এখনও দোকানে কোন কিছু কিনতে দশবার ভাবি।দুই দিন আগে এক দোকানে একটা সানগ্লাস পছন্দ হয়েছে। দাম শুনে বের হয়ে চলে আসছি।দাম শুনে প্রথম যে চিন্তাটা মাথায় আসছে এই টাকায় একটা নিম্নবিত্ত পরিবার দশ দিন খেতে পারবে আর সেই টাকায় আমি এই বিলাসিতাটুকু না হয় না ই করলাম। আমার ভারসিটি লাইফে আমাকে কোনদিন অর্থের কষ্ট করতে হয়নি বরং প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ই আমার কাছে ছিলো।আমি আমার মায়ের কাছে কৃতজ্ঞ যে শুধু মাত্র তার জন্যই আমি এভাবে ভাবতে শিখেছি,জীবনকে বুঝতে শিখেছি আর সাদামাটা মধ্যবিত্ত জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:২৮