গ্রিক পুরাণে, কাইমেরা (Chimera) হলো দৈত্য-দম্পতি টাইফন (Typhon) ও ইকিডনা'র (Echidna) সন্তান, অগ্নি-নিঃসরণকারী অদ্ভুত এক প্রাণী। কাইমেরার ব্যাপারে সাহিত্যের সর্বপ্রাচীন সূত্রটি পাওয়া যায় হোমারের ইলিয়াডে এক সংক্ষিপ্ত বর্ণনায়: অমর জগতের সৃষ্টি, মানুষ নয় সে—দেহের অগ্রভাগ তার সিংহ, পশ্চাৎভাগ সর্প, মধ্যভাগ ছাগল। তার নিঃশ্বাসে ঝরে উজ্জ্বল অগ্নির ভ্য়ঙ্কর শিখা।
হিসিয়ডের (Hesiod) থিয়গনি (Theogony)-তেও হোমারের অনুরূপ বর্ণনা পরিলক্ষিত হয়: ইকিনডার কন্যা কাইমেরা, যে নিঃসরণ করে জ্বলজ্বলে অগ্নিশিখা, ভয়ঙ্কর সে প্রাণী এক, বিশাল, ক্ষীপ্র-পায়ের অধিকারী এবং শক্তিশালী, যার মস্তক তিনটি, একটি নির্মম সিংহের; দেহের পশ্চাৎভাগে ড্রাগন সে এক, মধ্যভাগে ছাগল, ছুঁড়ে চলে আগুনের তীব্র হলকা নিঃশ্বাসের সাথে।
এশিয়া মাইনরের লিশিয়া (Lycia) অঞ্চলে একদা ব্যাপক আতঙ্ক জাগিয়ে তুলেছিল এই কাইমেরা—চলার পথে যাকেই পেত সে, আগুনে পুড়ে মেরে ফেলত। শহরের বাইরে পাহাড় উপত্যকায় তার ক্রমাগত তাণ্ডবে অতীষ্ঠ হয়ে উঠল লিশিয়ার মানুষ। অবশেষে করিন্থের (Corinthian) বীর বেলেরোফনকে (Bellerophon) পাঠানো হলো কাইমেরাকে দমন করতে। কিন্তু দায়িত্বটি ছিল শাস্তিস্বরূপ, রাজা ভেবেছিল কাইমেরার হাতে নিহত হবে বেলোরোফন।
তীব্র আগুনের হলকায় কাইমেরার কাছে যেতে পারত না কেউ। বেলোরোফন তাই উড়ন্ত অশ্ব প্যাগাসাসের (Pegasus) সহায়তায় শূন্য থেকে তীর নিক্ষেপ করে কাইমেরাকে দুর্বল করে ফেলল, তারপর তার মুখে নিক্ষেপ করল সীসার পিণ্ড। কাইমেরার আগুনে সীসা গলে গলে ঢুকে গেল তার শরীরের ভেতর, আর জমাট বেঁধে হয়ে গেল শক্ত। এক সময় মারা গেল কাইমেরা।
কাইমেরিক্যাল (Chimerical): যেহেতু কাইমেরার মতো অদ্ভুত, অবাস্তব প্রাণী কেবলমাত্র মানুষের অলীক, উদ্ভট কল্পনায়ই বসবাস করে, Chimerical বিশেষণটির বর্তমান মানে
অলীক, উদ্ভট, অবাস্তব, কাল্পনিক—dreamlike, wildly fanciful, hallucinatory, imaginary, unreal: "A chimerical plan."
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৯:০২