পুরাণ
জিউস একদা সাইকিয়াস (Syceus বা Sykeus) নামের এক টাইটান ও তার মাতা, ধরিত্রী দেবী গেইয়াকে (Gaia) তাড়া করে ফিরছিল। পুত্রকে বাঁচানোর জন্য গেইয়া তাকে ডুমুর গাছে পরিণত করে ফেলে এবং সবুজ বনানীতে শাখা প্রশাখার আচ্ছাদনে লুকিয়ে রাখে। প্রাচীন গ্রিক নগরী Sykea-র নামকরণ হয় পৌরাণিক এই কাহিনীর উপর ভিত্তি করে, এবং গ্রিক শব্দ sykea বা sycea-র মানে দাঁড়ায়, ডুমুর বৃক্ষ। বৈজ্ঞানিকভাবে বললে, Ficus sycomorus।
এবার খানিক ইতিহাস
খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতকের দিকে, বর্তমান গ্রিসের যে স্থানটি এথেন্স তথা এটিকা নামে পরিচিত, তা হয়ে উঠে ডুমুরের জন্য বিখ্যাত। শাসক সলোন ফরমান জারি করলেন, কোনো ডুমুর রপ্তানি করা যাবে না, শুধুমাত্র গ্রিকদের খাওয়ার জন্যই ডুমুর। সে যুগে ধনী, দরিদ্র সকল গ্রিকের কাছে ডুমুর বিবেচিত হত খুব গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র খাবার হিসেবে।
কিন্তু সলোনের আদেশের পরও গোপনে ডুমুর রপ্তানি হতে লাগল, চোরাই বাজারেও চলল বেচাকেনা। এদিকে রাজার অনুগ্রহলোভী কিছু মানুষও তৈরি হয়ে গেল, গোপন বেচাকেনার খবর পেলেই তারা রাজার কানে তুলত। এ কাজটির মাধ্যমে তারা কামনা করত রাজার কাছ থেকে ব্যক্তিগত অনুদান লাভের। এদের নির্দেশ করার জন্য শীঘ্রই জন্ম হলো একটি শব্দের, sycophant: sycon- মানে ডুমুর, -phanein মানে দেখানো; সুতরাং sycophant হচ্ছে এমন ব্যক্তি যে ডুমুর দেখিয়ে দেয়।
যেহেতু এই ডুমুর দেখিয়ে দেওয়া লোকেরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবশত নয়, বরং ব্যক্তিগত লাভের জন্য, চাকরসুলভ চাটুকারের ন্যায় আচরণ করত, সাধারণ মানুষ তাদেরকে খুব অপছন্দ করত।
আর এ কারণে ডুমুর দেখানো লোক,
sycophant এর বর্তমান মানে চাটুকার, তোষামুদে, অন্যের মোসাহেবী করে ব্যক্তিগত অনুগ্রহ কামনা করে এমন মানুষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১০:১৬