আবার আমি ট্রাফিক জ্যাম নিয়েই লিখছি, জানি আমার লেখায় কোন প্রভাব পড়বে না তবু ব্লগ বন্ধুদের সাথে চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করা এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে চিন্তার খোরাক তৈরির উদ্দেশ্যেই লেখা।
একের পর এক ফ্লাইওভার হচ্ছে........... কিন্তু যানবাহনের জ্যাম কতটুকু লাঘব হয়েছে বা হচ্ছে!!!!
এখনতো কোন বারের হিসেব নেই কিছুদিন আগেও শুক্রবার বা শনিবার ট্রাফিক জ্যাম মুক্ত ঢাকা দেখা যেতো এখন মনে হয় এই দিনগুলোতেই আরো বেশী হচ্ছে।
ট্রাফিক জ্যামের কারণে আমাদের যে সময় ও কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে তার সঠিক হিসেব কি কেউ বের করছে....
এর কারণে কত রোগী মারা যাচ্ছে, বা সিরিয়াস অবস্থায় যাচ্ছে, আমাদের কতধরনের পণ্য নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বা সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি হচ্ছে না কিংবা অতিরিক্ত কত ঘন্টা ব্যয় হচ্ছে!!!!!!
ঢাকা কেন ট্রাফিক জ্যাম মুক্ত নগরী হচ্ছে না.... আমাদের প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, নগরবিদ, সুশীল সমাজের সব ধরনের চেষ্টাই কি বৃথা যাচ্ছে না কি কোন অশুভ শক্তির দাপটে সঠিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না।
আচ্ছা ঢাকা শহরের জন্য এই কাজগুলো করলে কেমন হয়-
১. ঢাকায় বের হলেই রিক্সা আর প্রাইভেট কার এর রাজত্ব চোখে পরে, তাই-
# রিক্সার সঠিক সংখ্যা নিরুপণ ও এলাকাভিত্তিক সংখ্যা নির্ধারণ করে সীমিত করা
# প্রাইভেট কারের সিএনজি জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করে তেল ব্যবহারে বাধ্যতামূলক করা
# কোন স্কুল, কলেজে, ভার্সিটিতে পড়ুয়ারা প্রাইভেট কার নিয়ে যেতে পারবে না। স্কুল, কলেজের বা ভার্সিটির বাসের ব্যবস্থা করা।
# কার লোনকে কঠিন শর্ত ও সীমিত করা
২. বাস ও তো কমসংখ্যা নেই নতুন নতুন রুট চালু হচ্ছে বাসের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কিন্তু রাস্তা বাড়ছে না, তাই-
# ঢাকার প্রতিটি রুটে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে দ্বিতল বাস চালু করা
# আমার মতে ১০০০ সিঙ্গেল বাস তুলে দিয়ে ১০০০ ডাবল ডেকার বাস চালু করা দরকার
# প্রতিটি রুটে মানসম্মত, সিটিং ও এসি সার্ভিস আছে এমন বাস দেওয়া যাতে করে প্রাইভেট কারের লোকজন এগুলোতে উঠতে উৎসাহ পায়
৩. রাস্তা তো ঢাকায় কম নেই শহরের তুলনায় কিন্তু হলে কি হবে......অর্ধেক থাকে কার পার্কিং, বাজার, অবৈধ দখলদারদের খপ্পরে, তাই
# যান চলাচলের জন্য রাস্তার পুর্ণ দখল প্রতিষ্ঠা করা
# প্রয়োজনে বাস স্ট্যান্ড রেললাইনের প্লাটফর্মের ন্যায় উচু করা যাতে বাস নির্দিষ্ট স্থানে ফুটপাথ ঘেষে দাড়ায় এবং যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করতে না পারে
# অনেক জায়গায় ইউলুপ হচ্ছে এবং এগুলো ব্যবহারে কার্যকারিতাও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। আরো বেশী ইউলুপ তৈরি করা।
# অফিস এরিয়াতে কারপার্কিং এর জন্য প্রতিটি ভবনে নিজস্ব ব্যবস্থা রাখার উপর জোর দেওয়া। এলাকাভিত্তিক কারপার্ক এর নির্দিষ্ট ভবন তৈরি করা
৪. মাননীয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সমপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের জন্য সার্বক্ষণিক হেলিকপ্টারে যাতায়াত ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ ও অবকাঠামো তৈরি করা। অনেকেই বলবেন এভাবে যাতায়াত অনেক ব্যয় সাপেক্ষ-- উ: জনগণের কতটাকা জ্যামে নষ্ট হচ্ছে সে হিসেব করলে এটা কিছুই না।
আরো অনেক কিছু করা যেতে পারে- ডে নাইট অফিস শিফট, জোড়-বিজোড় গাড়ি চালনা, সচিবালয়, জাজকোর্ট, বাস টার্মিনালগুলো ঢাকার বাহিরে স্থানান্তর ইত্যাদি।
তবে সবার আগে দরকার সূদুরপ্রসারি, দূরদর্শী ও দক্ষ পরিকল্পনা, সৎ উদ্যমী মনোভাব, সময় ও কর্মঘন্টা কাজে লাগিয়ে উন্নত বিশ্বের কাতারে ঢাকাকে আদর্শ ও অনুকরণীয় শহর হিসেবে উপস্থাপনা করার মানসিকতা এবং সর্বপরি জনসচেতনতা।
কষ্ট করে পড়ার জন্য- ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৮