সময়টা ১৮ শ শতকের মাঝামাঝি । ভুমি অবমুক্ত ও রায়তের খাজনা আদায় এবং নানা অত্যাচার অনাচারের বিরুদ্ধে সাধারন
প্রজারা বিদ্রোহ করেছিল । পরগনা সাতলাখি সেলবরস । কথিত
রয় বাংলা ভুমির মধ্য সবচাইতে বড় জমিদারি ষ্টেট । তখনকার
সময় ৭লক্ষ টাকা ভুমি খাজনা প্রতি পলান আদায় হত ।
জমিদার তুতা মিয়া , হাতি শালে হাতি ঘোড়া শালে ঘোড়া / ছিল খানদানী ঝাকজমক পূর্ণ এক অতি শৌখিন তেজস্বী প্রবাদ পুরুষ ।একদিকে সুনামগঞ্জের উত্তর পূর্ব অঞ্চল অন্যদিকে কংসের ঘের
মোহনগঞ্জ নেত্রকোনার কিছুঅংশ এবং হিমালয় পাহাড়ের পাদদেশ
পর্যন্ত বিশ্রিত ছিল তার জমিদারি ।
প্রজা বিদ্রোহ দমন করতে তার লাটিয়াল ও রক্ষি বাহিনির খড়গ হস্ত ছিল খুবই সিদ্ধ ।
প্রজা বিদ্রোহের মুল হোতা আনিক /মানিক দুই ভাই প্রথমে জমিদার এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় । তাদের গাঁয়ে এত টুকু শক্তি
ছিল যে কুটার ছাড়াই বড় বড় গাছের ডাল ছিড়ে লাকড়ি বানিয়ে
ফেলতেন ।
কোনের কুঁড়া যা দিয়ে পানি সেচের কাজে লাগে । এই কোনের কুঁড়া কে লাটি বানিয়ে হাজার খানেক পাইক পেয়াদা কে সামাল
দিয়েছিলেন ।
জমিদার লোক লাগিয়ে রাতের অন্ধকারে দুই ভাইকে গুলি করে
হত্তা করে এবং লাছ মনাই নদীতে ফেলে দেয় । আনিক মানিকের মা ফৌজ রানি লোক লস্কর লয়ে লাছ উদ্ধার করে
সিলেট আদালতে সরাসরি হাজির হয় । এবং হাকিমের নিকট
সবিস্তার বর্ণনা দেন এবং অনেক টাকাও দেন ।
বিচারক কারন জানতে চাইলে উত্তর আসে জমিদার মানুষ মেরে
আপনাদের বস্তার বস্তা টাকা দিতে পারে । আর আমি মা হয়ে
সন্তানের লাছ লয়ে উপযুক্ত বিচারের দাবিতে টাকা দিলে সেটা
অবেধ্য হবে কেন ।
হাকিম সেদিন লজ্জাবনত হয়ে উপযুক্ত বিচারের কাট গড়ায় দাড়
করাতে তুতা মিয়া ও তার ভাই লাল মিয়া কে গ্রেফতার করে ।
বিচারে জমিদার দের যাবত জীবন দণ্ডাদেশ দেয়া হয় ।
বহুদিন পর জেল থেকে তুতা মিয়ার কানে আসে একটি আচানক সংবাদ । বাঘের কবলে এলাকাবাসি জিম্মি যারা এই
বাঘের কবল থেকে এলাকা বাসিকে মুক্ত করতে পারবে তাকে
ইচ্ছামাফিক পুরস্কার প্রধান করা হবে ।
তুতা মিয়া হাকিম কে তার বাঘ শিকারের ইচ্ছার কথা ব্যক্ত
করেন এবং তাও খালি হাতে ।
তুতা মিয়া বাঘের সাঝ পড়ে বাঘের সামনে গিয়ে হাজির হয় এবং
বাঘের নকল ডাক ছাড়ে । বাঘ তুতা মিয়ায় দিকে হা করে লাফ
দেয় । তুতা মিয়া সুযোগ মত তার হাত গলায় ডুকিয়ে বাঘের
জিব্বা ছিড়ে বাঘটিকে শায়েস্তা করে এবং জেল থেকে মুক্তি লাভ
করে ।
বাঘের চামড়াটি দিয়ে স্থানীয় এক লোক তার ঘর ছাউনি দিয়েছিল ।কথিত আছে তুতা মিয়া অনেক বাঘ সিংহ ও হরিণ
কৌশলে যন্ত্র ছাড়াই শিকার করেছেন ।
কালের গর্বে হারিয়ে গেছে তাদের আদি ঐতিহ্য জৌলুষ ।
বর্তমানে ১৪ গুম্ভুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ তাদের স্মৃতির মিনার
হয়ে দারিয়ে আছে , জুড়া পুকুর পাড়ে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৫৯