somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে পরিবার ও রাষ্ট্রীয় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাদক শব্দের ইংরেজি অর্থে বলা আছে – an intoxicant consisting of opium, used for smoking; ‘মদ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Wine, port; liquor, alcoholic beverage, (alcoholic) drink, intoxicant, inebriant, booze; alcohol, sprits ইত্যাদি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর মাদকদ্রব্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, হেট্রোসাইক্লিক ঔষধযুক্ত একটি প্রাকৃতিক বা আধা- প্রাকৃতিক বা সিনথেটিক নাইট্রোজেন যা সাধারণভাবে ঘুম বা অচেতন হয়ে উদ্বুদ্ধ করে উপশম প্রদান করে এবং এর সাথে আসক্তি জড়িয়ে দিয়ে ইহার উপর নির্ভরশীল করে তোলে তাকে মাদকদ্রব্য বলে।

UNDCP- মাদক যে সংজ্ঞা দিয়েছে তা হল – “Intoxication (N): It is the state that results from the intake of a quantity of a substance which exceeds the individual’s tolerance and produces behavioural and physical abnormalities.”

মাদক সমস্যা বাংলাদেশের অন্যতম সমস্যা। বিভিন্নভাবে মাদকের ভয়াবহতা রূপ নিয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মাদকসেবীদের মধ্যে রয়েছে যুব সমাজ, রিকশা চালক, শ্রমিক, ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, এমন কোনো শ্রেণি পেশার মানুষ নেই, যে পেশার কেউ না কেউ মাদকাসক্ত নয়। এর ফলে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া এতে সন্দেহ নেই। মাদকাসক্ত মানুষ নিজ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করছে।

ইয়াবা হচ্ছে নতুন নেশাদ্রব্য। ইয়াবা গ্রহণকারী মাদকাসক্তরা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তার মধ্যে কিডনি, লিভার ছাড়াও মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী,শতকরা ৮০ ভাগ খুনের সঙ্গে মাদকাসক্তরাও কোনো না কোনোভাবে জড়িত।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশের মূল আইন হচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০। এই আইনকে যুগোপযোগী করার জন্য ২০০০, ২০০২ ও ২০০৪ সালে মোট তিনবার সংশোধন করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৭ এর খসড়াও চূড়ান্ত পর্যায়ে। এটি মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ চাহিদা হ্রাস, অপব্যবহার ও চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে প্রণীত আইন।

যেসব পরিবারের সদস্যরা মাদক গ্রহণ করে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কিংবা যারা দরিদ্র শিশু, তারা সহজেই মাদকাসক্তের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া যেসব পরিবারের অভিভাবকরা সন্তানদের প্রতি নজর রাখেন না; সেইসব পরিবারের শিশুরা মাদকাসক্ত বেশি হয় । এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।
পরিবারকে বেশি সক্রিয় হতে হবে। মাদকাসক্তি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে সরকারকে সবার সহযোগিতা করার মনোভাব থাকতে হবে। মাদকদ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতি যেমন, শারীরিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষতির দিকগুলো তুলে ধরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বিশেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়ে থাকতেই মাদকাসক্তির শারীরিক ক্ষতির দিকটি বুঝাতে হবে।
মাদকদ্রব্যের চোরাচালান, বিক্রয়, বিপনন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ও সরকারী সংস্থা যেমন পুলিশ, বিজিবি এবং আইন বিভাগকে আরো বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নিতে হবে অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে, যাতে ছেলেমেয়েরা পাড়ার বা মহল্লার বখাটে ছেলেদের সাথে মিশে আড্ডা না দেয়। কেননা বখাটে বন্ধুদের খপ্পরে পড়েই প্রথম মাদক গ্রহণ করে থাকে।প্রচার মাধ্যমে মাদকাসক্তির কুফল আরো ব্যাপকভাবে প্রচার করা প্রয়োজন। দেশে চোরাচালানের সম্ভাব্য পয়েন্টগুলোতে চোরাচালান রোধের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির সমাবেশ ঘটানোসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
মাদক সমাজকে গ্রাস করতে শুরু করেছে। মাদকের গ্রাসে দেশের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে অপরাধ। এখন পাড়া-মহল্লা,অলিগলিতেও হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। মাদকাসক্ত কিশোররাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এরাই বেশি নারী ও কিশোরীদের ইভটিজিং করছে বেশি। তাই মাদকের সর্বগ্রাসী ছোবল থেকে আমাদের দেশের যুবসমাজকে রক্ষায় পরিবার ও রাষ্ট্রকে নিতে হবে সম্মিলিত উদ্যোগ।  গড়ে তুলতে হবে গ্রাম ও মহল্লায় সামাজিক আন্দোলন ।

৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×