পরকাল আছে কি নেই সেই সম্পর্কে অবিশ্বাসীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। সুতরাং তাদের কাছে বেহেস্ত কিংবা দোজখ রূপকথার মতই। কাজেই এসবের উপমা নিয়ে হাস্যরস করা তাদেরই সাজে।
বর্তমান সময়ে বিশ্বের প্রধান তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে খ্যাত স্টিফেন হকিং ২১ বছর বয়স থেকে দূরারোগ্য মটর নিউরোন রোগে ভুগছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের সামর্থ্য ও ভাষ্য অনুসারে তার খুব জোর দুই থেকে তিন বছরের বেশি বেঁচে থাকার কথা ছিলনা। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো! মস্তিষ্ক ছাড়া প্রায় সর্বাঙ্গ বিকলাঙ্গ অবস্থায় তিনি এখনও বেঁচে আছেন। বিজ্ঞানের সকল আশঙ্কা ও ভবিষ্যত্বাণীকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে তিনি ৭১ তম বছর বয়সে পদার্পণ করেছেন। শুধু তাই নয়, হুইল চেয়ারে বসে কম্পিউটারের সহায়তায় একের পর এক মহাকাশ বিজ্ঞানের চমকপ্রদ তথ্য উদঘাটন করে চলেছেন। কিন্তু হায়! তারপরও তিনি পার্থিব খ্যাতির মোহে ঠুনকো বিজ্ঞানের উপর ভর কোরে স্রষ্টাকে অস্বীকার করার মত একতরফা বক্তব্য দিয়ে অন্ধ ভক্তদের বিভ্রান্ত করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না।
তিনি পরকালকে নাকি রূপকথা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। (However, this is way beyond our present capabilities. I think the conventional afterlife is a fairy tale for people afraid of the dark.) যেহেতু তার বিশ্বাস শুধুমাত্র বিজ্ঞান নির্ভর। তাই বর্তমান বিজ্ঞানের অগ্রগতির আলোকে তার এই আখ্যান তার কাছে এবং অন্য অনেকের কাছে যথার্থ ও গ্রহণযোগ্য মনে হলেও, বিজ্ঞান জগতের এমনও অনেক মানুষ আছেন যাদের কাছে তার এইরূপ কথন শুধু হাস্যকরই নয়, বরং তাকে ওভারকনফিডেন্সে আক্রান্ত বলে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। নিজের বাঁচা-মরা সম্পর্কে বিজ্ঞানের ব্যর্থতাকে তিনি উপলব্ধি করতে পারেন নাই বলেই হয়ত পরকাল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সেই বিজ্ঞানকেই তিনি পরম মানদণ্ড হিসেবে ধরে নিয়ে চরম সিদ্ধান্ত দেয়ার দুঃসাহস দেখানোর মত বোকামি করেছেন।
বিজ্ঞানের সহায়তায় চর্মচক্ষে যে অন্তত পরকালকে পুরোপুরি দেখা সম্ভব নয়, স্টিফেন হকিং এর অপারগতাই সেই সাক্ষ্য বহন করছে। তবে তাত্ত্বিকভাবে কম্পিউটারে মস্তিষ্কের প্রতিলিপি তৈরি করে মৃত্যুর পরেও যে জীবনকে ধরে রাখা সম্ভব, (I think the brain is like a program in the mind, which is like a computer, so it's theoretically possible to copy the brain on to a computer and so provide a form of life after death.) এই কথাটা স্বীকার করে তিনি তো মনের অজান্তেই পরকালের একটি বিশেষ অংশকে বিশ্বাস করার কথাই ব্যক্ত করেছেন। সম্ভবত হুইল চেয়ার ও কম্পিউটার নির্ভর মস্তিষ্ক সর্বস্ব দীর্ঘ জীবনই হয়ত অবচেতনভাবে তার অন্তরে এরূপ অশরীরী ভাবনাকে জাগিয়ে তুলেছে। ইমান হীন ও পার্থিব বিজ্ঞান নির্ভর একপেশে চিন্তা ও একরোখা মনোভাব থেকেই হয়ত শরীর ও মস্তিষ্কের সমন্বয়ে গঠিত পরকালীন পূর্ণাঙ্গ জীবনকে তার কাছে রূপকথা বলে মনে হচ্ছে।
কিন্তু আমরা যারা মহান স্রষ্টার প্রতি ও পরকালীন জীবনে বিশ্বাস করি, তারা মৃত্যুর পর এবং শেষ বিচারের ক্ষণে মস্তিষ্কের প্রতিলিপি তৈরির সাথে সাথে দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের প্রতিলিপি গঠন করাও সম্ভব বলে বিশ্বাস রাখি এবং আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, একমাত্র সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালাই সেই মহাবিজ্ঞানময় ক্ষমতার অধিকারী।
................................................................
*সামুর এ ধরনের অদ্ভুদ ব্যবহার সত্যি আমাকে অবাক করেছে!!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩