কুরআন বলে আদম প্রথম মানুষ নয়;বিপরীতে শরিয়ত বলে আদম প্রথম মানুষ।
'দাম'শব্দের বহুবচন 'আদম'অর্থ: রক্ত,রুধির,প্রলেপ দেয়া,রং,রংএর প্রলেপ,কদাকার হওয়া,বদ হওয়া,নীচ হওয়া,ত্বক,চর্ম,ছালন মাখানো,ব্যঞ্জন মিশানো,মিল সাধন করা, পিংগলবর্ণ হওয়া প্রভৃতি;অর্থাত বিবর্তিত মনুষ্যজাত;কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তির নাম নয়।
অ এজ কালা—ইয়ালামুন (২: ৩০) অর্থ: এবং যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেস্তাদেরকে বলেছিলেন-নিশ্চয় আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব,তারা বলেছিল তুমি কি ইহাতে এমন সৃষ্টি করবে যে,তারা তম্মধ্যে অশান্তি উত্পাদণ করবে এবং শোনিত পাত করবে? এবং আমরাই ত তোমার প্রশংসাসহ মহিমা ঘোষণা করছি এবং তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করে থাকি;তিনি বলেছিলেন তোমরা যা অবগত নও নিশ্চয় আমি তা পরিজ্ঞাত আছি।
উল্লিখিত বাক্যের মূল শব্দ ৩টি:
ক. মালাএকাত= মালক/মূল্ক,মালাকা/মালিক থেকে মালাএকাত অর্থ: বড়,মালিক, কর্তা,জমিদার,ভিত্তি,মূল,কাঠামো,অপরিহার্য,শর্ত,ক্ষমতা,অধিকার,কর্তৃত্ব,স্বাধীন,ইচ্ছা, স্বেচ্ছা,রাজা,ফেরেস্তা।
খ. আর্দ্ব= ধরণী,ধরা,ভূমি,পৃথিবী।
গ. খলিফা= উত্তরাধিকারী,প্রতিনিধি,স্থলাভিসিক্ত।
সমালোচনা
ক/ক. ফেরেস্তা অর্থটি মূলত: বাংলা অর্থ/অনুবাদ নয়;উহা ভ্রান্ত শিয়াদের কাছ থেকে ছুন্নিদের অনর্থক ধার করা শব্দ।কারন: আরবি মালাকাত ও ইরানী ফেরেস্তা উভয়ই বাংগালীদের কাছে সমান দুর্ভেদ্য।
খ/খ. আর্দ্ব অর্থ ধরণী বা ধরা;অর্থাত যা ধরা,ছোয়া,অনুভব,উপলব্ধি বা দর্শনজ্ঞানে প্রমান করা যায়;উহাই ধরা বা ধরণী;এ অর্থে নিউট্রন,প্রোটন,ইলেক্ট্রন ও এ্যটাম এবং ইহাদের নব আবিস্কৃত স্রষ্টা: কোয়ার্ক,ল্যাপটন,বোসন ও ফার্মিয়ানও ধরা বা ধরণী।আর্দ্ব অর্থ পৃথিবী নয়,পৃথিবীর আরবী শব্দ দুনিয়া।
গ. খলিফা শব্দার্থটি সংগত এবং যথার্থ।
সঠিক ও সংগত অর্থ:
এবং তোমার প্রভু (স্ব স্ব জ্যোতিদেহ) মুল/কর্তা জ্ঞানী/সাধকদের (মালাএকাত) যখন খবর দেন/উপলব্ধি করান (বলেন) যে,বস্তুর (আর্দ্ব) উত্তরাধিকারী (খলিফা) হয়;অর্থাত বস্তু বিবর্তনশীল;তখন জ্ঞানীরা (মালাকাত) ভাবে/কামনা যে,‘উত্তরাধিকারী বা বির্বতনের (ঘর্ষনে) কারণে কষ্ট-ক্লেস,অশান্তি,রক্তারক্তি হয়;আমাদের বিবর্তন না হয়ে অপরিবর্তনীয়/চিরস্থায়ী হোক! আমরাই তো স্রষ্টার নিখুত (নুকাদ্দেছু=পবিত্র, নিষ্কলুষ,খাটি) স্বয়ংক্রিয় (নুছাব্বেহু= কর্ম ব্যস্ততা,সন্তরণ,পানিতে ভাসা,বিশ্রামে থাকা)স্বীকৃত যথার্থ বাস্তবতা। কিন্তু আমিত্ব সত্তা/শক্তির নিয়ম (আমি যা জানি) ওরা জানে না।
অতএব 'আদম' প্রথম সৃষ্টি, প্রথম মানুষ বলে ধারণা করার কোনই আকার ইংগীত আয়াতে নেই।
প্রচলিত অনুবাদ মতেও আদম প্রথম মানুষ নয়
১. খলিফা বা উত্তরাধিকার বলতে পূর্বাধিকারীর পরবর্তি অধিকারীগণ;পূর্বাধিকারী না থাকলে উত্তরাধিকারী বা খলিফার প্রশ্নই অবান্তর হয়;সুতরাং কথিত আদম বলতে পূর্বাধিকারীর পরবর্তিগণ।
২. তার পূর্বে মানুষ না থাকলে তার উত্তরাধিকারী হয় কিভাবে? পূর্বে মানুষ না থাকলে সে কার প্রতিনিধি বা নেতা হবে?
৩. কথিত ফেরেস্তাগণ বলে,ওরা তো রক্তারক্তি ও অশান্তি সৃষ্টিকারী-;অর্থাত কথিত আদমের (মানুষ) পূর্বের আদমজাত সম্বন্ধে বাস্তব ও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে যে,তারা অশান্তি ও খুনাখুনী করে।
৪. আল্লাহ যে জ্ঞান দেয় তা ব্যতীত কথিত ইরানী ফেরেস্তাদের অগ্রীম জ্ঞান থাকা শরিয়ত বিরোধী বিধায় অনুবাদটি স্ব বিরোধী ও সাংঘর্ষিক।
বিবর্তনচক্র বা সাইকেলিং ব্যতীত সৃষ্টির শুরু নেই,শেষও নেই;'আমি'র আমিত্বের বার বার শুরু এবং বাব বার শেষ চক্রে চক্রিত হয়।
এক্ষণে এতদসম্বন্ধে মৌলবাদের ১৪শ বছরের পালিত ভ্রান্ত বিশ্বাসের সংস্কার করুক!অনুবাদ সংশোধন করুক!
বিনীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১৮