শিউলি কুড়ানো ভোরের শিশিরে যখন শিহরিত হতাম বালিকা আমি
সেই ফুল কুড়ানোর আনন্দে থেকেই তোমাতে গাহনের দিনের শুরু।
ফ্রকের কোঁচরে হাজারী গোলাপ ,ঝুমকো জবা্ কাবেরি কিংবা নয়ন তারা আর ভিনদেশী কসমস,চেরী
মোরগ ফুল ,দোপাটি,কাঠ গোলাপ, নীলকণ্ঠ অথবা কখনো সদ্য ফোটা গোলাপের ঘ্রান যখন মিলেমিশে একাকার হত ভেবে দেখ সেই সুবাসে আকুলিত চিরন্তন বালিকা হৃদয়ে তুমিই থাকো ।
চঞ্চলা চড়ুই হৃদয়ে র ছটফটানি র নিস্তব্ধতায়
দুহাতে ভরতি বড়ই ,কাঁচা তেতুল নিয়ে পালিয়ে বেড়ানো আমি তোমার ই ছিলাম তোমার হয়ে ।
দুই বিনুনির লাল সারটিনের ফিতায় ফুল ফোটানোর আনন্দের মুহূর্তে
ঘোর বর্ষার মধ্যদুপুড়ে তলিয়ে যাওয়া ধানক্ষেতে শ্রাবন ধারার গাহনে
কোন এক আষাঢ়ে ঢলে লাল মাটির রাস্তায় ঝরে যাওয়া বেলির হাহাকার বুঝে নেয়ার তীব্রতায় সাথে আমি তোমার হয়েছিলাম ।
খেলার সাথির হিজল ভাসা টলটলে নবীন জলের স্বচ্ছ দৃষ্টিতে তাকিয়ে
বিরান চরে ঘুঘুর ফাঁদ পাতার দুঃসাহসিকতায় মুগ্ধ হয়েছি যখন
উথল হাওয়ার বুকে চাদিয়াল ভাসানো কিশোরের আকাশ চাওয়া অপেক্ষায়
বিষন্নতা খুঁজে পেতে শুরু করার হু হু করা দিনগুলোতেও।
স্মৃতি জাগানিয়া আম আঁঠির ভেঁপুর সুর
চকচকে কাঠের সেতুতে দাঁড়িয়ে খালের পানিতে ঝিলমিল বট পাতার খেলা দেখার মগ্নতায়
বয়সন্ধির চৌকাঠ পেরিয়ে সেবা রোমান্টিকের নায়ক হয়ে ,দূরবীনের ধ্রুব ,একা এবং কয়েকজনের সূর্য ,পার্থিব এর হেমাঙ্গ , হীরক দীপ্তি র হিরক কে ভালবাসায় ।
শহরতলীর দিনগুলিতে দুর্গা অষ্টমীর দিন ভেসে আসা মাইকে কিশোর কুমারের
“সে যেন আমার পাশে আজো বসে আছে “ গানের সুরে
অবেলায় কাঁথা মুরি দিয়ে বুকের ভিতর কেমন করতে থাকা অনুভুতিতে
আমি তোমার হয়েছিলাম ………….
ভাবো তো
ফেব্রুয়ারির পলাশ রোদ আর শোকের সাদা কালো শাড়ী র ভাজে কাকে লুকাতে চাইতাম ?
বৈশাখি মেলার সবুজ কাচের চুড়ি র রিনঝিন সজীবতায় ছিলাম
মার্চের উত্তাল কবিতা দিন ,দোলন চাঁপা গুচ্ছের খোঁপায় শোভা পাবার লাজুক নত চোখ
আর
পাতা ঝড়া বসন্ত থেকে শীত ক্যাম্পাসের ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠার মিষ্টি সুবাসে আমি তোমাতে বিলীন হয়েছিলাম ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৪৭