চাঁদের দেশে সেইদিন
দুপুরের খাওয়াটা ভারী হয়ে গিয়েছিল । তাই আরিফ রাতের খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে গেল । সে ক্লাস টেনের ছাত্র । আজকাল লোড শেডিং এর পাল্লায় পড়ল সে । যখন শোয়া তখনি বাতির গন্ডগোল , তাই সে সকালের ব্যগ গুছিয়ে নিল । তখন রাত ১১ টা । সে বালিশে হেলান দিয়ে মোবাইল ফোন টিপতে থাকল । তার এ কাজটা খুব প্রিয় । জানালা খোলা , ঝিলমিল তারার ডিম লাইটের নীচে শুয়ে সে মোবাইলের সঙ্গী । হঠাৎ তার খুব ঘুম পেল , হাই তুলতে তুলতে সে সেখানেই পড়ে ঘুম ।
চোখ খুলল তো দেখল বিশাল গোল গোল জিনিস উপরে ঝুলে আছে । সেগুলো অবিরাম ঘুরছে , হঠাৎ তার হাতে মোবাইলটা কেঁপে উঠল । তাকাতেই সেটা ওয়াকিটকীতে পরিবর্তিত হয়ে উঠল । কার যেন খসখসে গলা শোনা গেল । সে বলল , " wellcome to the moon , you are about 360 , 000,00 km away from the earth surface . it's now rotating the west part of the solar system , over & out . " সে কিছুই বুঝল না । সে উঠে দাঁড়াতে চেস্টা করল , তবু পারল না । সে তার পরেও খুব কষ্টে উঠল । তারপর ডিরেক্টলি উড়তে আরম্ভ করল। এ দেখি উভয় সংকট ; না উঠলেও বিপদ , উঠা যায় না । উঠলেও বিপদ , নামা যায় না । তারপরও সে কোনমতে নামল । মূহুর্তের মধ্যে সে নিজেকে হালকা অনুভব করল ; তারপর সে বুঝতে পারল কোন বড় ভারী জিনিস তাকে ঢেকে রেখেছে । পরে সে বুঝল যে তার উপরে জড়ানো রয়েছে স্পেস কস্টিউম । সে আরো দূরে আগালো , দেখল বিশাল দেহী একটা স্পেস রকেট , ঠিক তখনি ওয়াকিটকী বেজে উঠল । এবার একজন নারীর কন্ঠ , সে বলল , " This space rocket can run over 218,8600 km/ hour , over & out ". সে আবারো আকাশের দিকে তাকালো , সেখানে কত নক্ষত্র কত গ্রহ ! তার হঠাৎ ইচ্ছে জাগল জানার যে সে কোন গ্রাভিটেশনএ অবস্থান করছে । ওয়াকিটকী হাতে নিয়ে বলল , " Can I know the gravitation of the surface area where I am standing ? over & out ." সাথে সাথে একটি মেয়েলী কন্ঠ বলে উঠল , "It is 6003 degree , over & out ." সে জানতে পেরে খুশী হল ।
সে ইনফরমেশনটা লিখবে বলে খাতা কলম খুঁজতে লাগল । হঠাৎ পকেটে একটা সিলিন্ডার পেল । ওয়াকিটকীটা বলে উঠল , " You can collect some soil from here , over & out ." সে কিছু না ভেবে হাতে করে কিছু মাটি নিয়ে ঢেলে দিল , এরপর আবার হাটা । হঠাৎ সে মাটিতে পড়ে থাকা একটি পতাকা দেখতে পেল ; সেখানে তারই ছবি ! ওয়াকিটকীটা বলে উঠল , "Dig it into the soil , over & out ." সে তাই করল ।
সাথে সাথে ভূমিকম্পের মত সে অনুভব করল । তবে চাঁদে আর্থকোয়েক ? সে বুঝতে পারল না । সে জ্ঞান হারাল ।
জ্ঞান ফিরল তো মায়ের ডাকে , " তাড়াতাড়ি উঠ , সকাল সাতটা বাজে । " সে উঠে একটু মোচড় খেল তারপর হাতের দিকে তাকাল ; দেখল হাতে তার মোবাইল , ওয়াকিটকী না ।
সমাপ্ত ।
পাদটীকা : বিশ্বজুড়ে আমার মা । দিনের সাথে বয়স বাড়ছে , বাড়ছে মায়েদের সংখ্যা ; তাদের ভালবাসায় জীবন কানায় কানায় পূর্নতা পায় , শিখে নেই ভালবাসতে অন্যকে । আজ " মা দিবস " এ সকল মমতাময়ী মায়েদের জন্য শ্রদ্ধা ।
আমার ছোট মা , বুড়ী মায়ের লেখা পোষ্ট করে দিয়ে তার কন্যার দায়িত্ব পালন করার প্রচেষ্টা আমার । আমি তো তার কন্যা বিশেষ । তার স্কুলে " বিশেষ বাংলা " ক্লাসে এ লেখা ।