আবার কোন কিছুই চাই না
তুমিই ইচ্ছা পূরণ দেবতা -
পার আমার সব চাওয়া পূরণ করতে।
তুমি আকাশের মত বৃষ্টি ঝরাতে পার
ফাগুনের মত লাল-বাসন্তী রঙে সাজাতে পার
রুপকথার তুষারমালার ঘুম ভাঙ্গাতে পার
শরতের মেঘ হয়ে ভাসিয়ে নিতে পার দূর কোন দেশে ।
তবুও আমি তোমার কাছে কিচ্ছু চাই না-
চাইলেই যদি ভীষন কিছু হয়,
হতে পারে হঠাৎ বজ্রপাত
বৈশাখী ঝড়ের মত লন্ডভন্ড হয়ে যায় সব
শীতের কূজ্ঝটিকায় ঢেকে যেতে পারে আমার সব চাওয়া
মিষ্টি সেই চাওয়াটি খরতাপে ঘেমে যদি নোনতা হয়ে যায়
তাইতো চাইতেই বড় সংকোচ।
তবুও এ পোড়া মন তোমার কাছেই চায়
মন বলে অন্য কোথাও এসব নাকি চাওয়া যায় না,
আমার চাওয়া গুলি যে ভারী অদ্ভুত!
প্রজাপতির ডানার মত রঙ্গিন, নকশা কাটা, চঞ্চল
সমুদ্রের ঢেউর মত স্বচ্ছ, উদ্বেলিত, ফেনিল
শঙ্কিত হরিনীর মত দুরন্ত, মায়াবী
লজ্জাবতীর লাজুক পাতা, পরশে আবিষ্ট।
অদ্ভুত চাওয়াগুলি আর কেইবা পুরণ করতে পারে?
তাও আমি তোমার কাছে কিছুই চাই না,
চাইলেই যদি রাত্রী হয়ে যায়,
যদি ছিটকে পড়ে গ্রহ নক্ষত্র
প্লাবন ধারা ভাসিয়ে নেয় জনপদ
খেলাঘর ভেঙ্গে ধুলোর ঝড় উঠে
বেলপাতায় পোড়ান কাজল ধুয়ে যায় অশ্রু ধারায়।
আমি কিন্ত তোমার কাছে ব্যাকূল হয়ে চাই-
প্রচন্ড খরায় বিপর্যস্ত মানুষ যেমন বৃষ্টি চায়
অন্ধকারে পথিক চায় শুকতারা
নদীর জোয়ার চায় পূর্ণিমার চাঁদ
জনঅরণ্য চায় নিরবতা
আমি ঠিক তেমনি করেই তোমার কাছেই চাই।
অবুঝ বালিকার মত চাই চাই কেবল চাই,
গাছের ডালে ছুটে চলা কাঠবিড়ালী ধরতে চাই
নীল আকাশে সুতো ছেড়া রঙিন ঘুড়ি
কাদা মাখামাখি জলে নীল শাপলা তুলতে চাই
মাছরাঙ্গার রঙিন পালক চাই
আরো কত কিছু যে চাই।
কিন্ত চাইতেই যে ভীষন ভয়-
তোমার চোখ রাঙ্গানীর ভয়
বিরক্ত হবার ভয়
ছেলেমানুষ বলে অবহেলা করার ভয়
খরস্রোতা নদীতে ডুবে যাবার ভয়।
পূজ়ারীর মত মনে মনে তোমার কাছেই সব চাই
কিন্ত মুখ ফুটে কখনো কিছুই চাই না,
হয়ত চাইলেই আমার খোপায় সাজ়াবে বাঁকা চাঁদ
নদী হবে আমার স্বচ্ছ সাদা শাড়ী
সমুদ্র সেচে হবে মুক্তর মালা
শঙ্খ হবে কানের দুল
পদ্মপাতায় মুড়ে হৃদয় তুলে দেবে আমার হাতে।
তোমার কাছে কখনোই কিছুই চাব না আমি
স্বপ্ন হয়েই থাক আমার সব চাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৪৬