"হ্যালো"
ওপাশ থেকে ভেসে আসে সেই চেনা কণ্ঠস্বর,
কিছু বলতে গিয়ে মনে হল
আমার কাঁপা কন্ঠে সে যদি খুঁজে পায়
এক ছটাক আবেগ?
না না, সে জানে আমি মৃত।
এত বছর পর আবার কেন
তার কাছে জীবিত হয়ে উঠব?
"হ্যালো, কে বলছেন?"
আসলেই? আমার হাত কি আসলেই কাঁপছে?
পলাশীতে চায়ের কাপ ধরা হাত
যেদিন প্রথম কেঁপেছিল তাকে দেখে
অনেকটা কি সেরকম?
না না, আসলে সব ই বয়সের দোষ,
বুড়ো হাড় আর কত সইবে?
"হ্যালো? কথা বলছেন না কেন?"
নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে
সেদিনের মত যেদিন প্রথম তার পাশে বসেছিলাম
আর তার অবাধ্য চুলগুলো
উড়ে এসে ছুঁয়ে যাচ্ছিল আমায়
বারবার।
নাহ! কী যা তা ভাবছি?
রাতে বোধহয় দুই পেগ বেশি খাওয়া হয়ে গেছে
নিঃশ্বাস আবার এমনি এমনি ভারী হয় নাকি?
"অনিক, তুই নাকি বাবা?"
ওর বড় ছেলে? হবে হয়তো।
মনে পড়ে যায় ক্লাস ফাঁকি দিয়ে
টি এস সি তে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো
মনে পড়ে তার গালের লালচে আভা
যখন তাকে বলেছিলাম বাকি জীবন
তার সাথে এভাবেই কাটিয়ে দিতে চাই।
আর বলেছিলাম, " আমাদের প্রথম সন্তানের
নাম রাখব অনিক।"
প্রতিশোধ এটা? নাকি কর্মফল?
জানি না।
গলা ভারী হয়ে আসছে,
কান্নায়?
নাহ! টনসিল ফুলেছে বোধহয়,
সিগারেট খাওয়া কমিয়ে দেব।
খট করে ফোন রেখে দেয়ার শব্দ।
আমার চোখে পানি জমছে নাকি?
যখন তাকে বলেছিলাম,
"তুমি ভালো থেকো, আমি চলে যাচ্ছি"
তখন তার চোখে যা দেখতে পেয়েছিলাম
সেরকম কিছু?
আরে নাহ! বয়স হলে চোখ দিয়ে
দু' এক ফোঁটা পানি পড়বেই।
ডাক্তার দেখালেই ঠিক হয়ে যাবে।
আমি শারীরিক ও মানসিক ভাবে
"প্রায়" সুস্থ একজন।