ছোটবেলা থেকে আমি খুব শান্ত শিস্ট। কেও আমাকে মারলে আমি মার খেয়ে চলে এসেছি কিন্তু প্রতিবাদ করি নাই। আমার কাছের মানুষ গুলো খুব ভাল যার কারণে এই রকম অবস্থায় আমাকে বেশি পড়তে হয়নি। তারা আমাকে বোঝে যে এর সাথে মারামারি করে মজা পাওয়া যাবে না। তাই তারা মারামারির বদলে ইয়ারকি টাই বেশি মারে। যা হোক আমি আমার জীবনের প্রেম কাহিনি নিয়ে আজ কিছু কথা বলল- সেগুলো আপনাদের কেমন কেমন লাগবে আমি জানি না। তবে বেশি খারাপ লাগবে না আমার মনে হয়। মজা টাই বেশি পাবেন আশা করি.........
আমার প্রথম স্কুল কিন্টার গার্ডেন। সেখানে আমি ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পরেছি। যখন শিশুতে পড়তাম তখন প্রেম জিনিস টা কি এত ভাল ভাবে বুঝি নাই। আস্তে আস্তে ক্লাস এর পরিমান বাড়ার সাথে সাথে আমার ভিতর প্রেম ভালবাসা টাও বাড়তে থাকে। আমার সাথে একটা মেয়ে পড়তো রাখি (ছদ্মনাম)। তাকে বেশ ভালই লাগত। আমার বাসার পাশে তাঁর বাসা হওয়ার কারণে প্রতিদিন আমরা এক সাথেই স্কুলে যেতাম আর আসতাম। সারাক্ষন তাঁর সাথে থাকতে আমার খুব এ ভাল লাগতো (আচ্ছা এটা কি প্রেম??)। তখন প্রেম জিনিস টা প্রথম উপলব্ধি করি।এটা আমার প্রথম প্রেম। সেও আমাকে খুব পছন্দ করত। নানা অজুহাতে সে আমার সঙ্গ পেতে চাইতো... আহারে কি মধুর ছিল্ল দিন গুলি। তবে লেখা পড়ার দিক থেকে কোন কম্প্রমাইজ ছিল না। তাঁর সাথে প্রতিটা বিষয়ে ভাল করা লাগবেই। আমি বেশির ভাগ সময় ই দ্বিতীয় হতাম আর সে হত তৃতীয়... তাইলে প্রথম হয়তো কে??? প্রথম হয়তো তমা (ছদ্মনাম)। যা হোক আমি তমা মেয়েটার সাথে পড়া লেখায় পেরে উঠতাম না।আত জন্য যে কত লজ্জা কর কথা শুনতে হয়েছে আমাকে টা বলার না। যা হোক আমার মেলা মেশা বেশ ভালই চলতেছি টানা তিন বছর...... এর পর রাখির বাবা চাকরী সুত্রে বদলি হয়ে চলে গেল সাথে সেও চলে গেল আর নিয়ে গেল আমার মনটাকে...... হায়রে দুঃখ। আমি পড়ে থাকলাম শুধু দেহ নিয়ে।তাঁর চুল গুলো খুব সুন্দর ছিল। তার চুলেও গন্ধ এখন আমি পাই।আমার প্রথম প্রেম এখানেই শেষ।
এরপর আমি যখন ক্লাস ফাইভ এ পড়ি তখন নতুন একটা মেয়ে আমাদের স্কুলে ভর্তি হল দেখতে অনেকটা রাখির মত...তো যাই হোক তাঁর সাথে আর ঐ ভাবে মেশা হয় নি। রাস্তায় মাঝে মাঝে দেখা হলে আমিও হাসতাম সেও হাসত। জানি না সে হাসির মধ্যে কি ছিল? প্রেম ভালবাসা ও থাকতে পারে আমার বন্ধুত্ব ও থাকতে পারে।
এরপর অনেক দিন কেটে গেল আমি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হলাম। আমার মাধ্যমিক স্কুল ছিল বয়েজ স্কুল। তাই আর কি মেয়েদের সাথে কিভাবে মিশতে হয় তা আমি জানতাম না। তখন মেয়ে দেখলেই মাথা নিচু করে হাটতাম। কোন মেয়ে যদি যেচে এসে কথা বলত আমি খুব এ লজ্জা পেয়ে তাঁর সাথে ভাল ভাবে কথাও বলতে পারতাম না। কোন মেয়েকে প্রোপস করা তো দুরের কথা তাকাতেই ভয় পেতাম। আমার মাধ্যমিক স্কুল টাতে কোন মেয়ের প্রেমে পরার মত কাহিনী ঘটে নি।তার জন্য এখন খুব আফসস হয়। হায়রে স্কুল জীবন.........
এস এস সি পরীক্ষার আগে আমার পাড়ার এক মেয়েকে খুব ভাল লেগে গেল। কেন জানি মন টা খুব চঞ্চল হয়ে উঠত তাকে দেখার জন্য। তো তাকে প্রেম এর প্রস্তাব দেয়ার জন্য আমার এক বন্ধুকে খুব করে ধরলাম। সেও অবশ্য তাকে কম পছন্দ করতো না। আমার অনুপস্থিতিতে আমার বন্ধু আমার জন্য তাকে যেই প্রস্তাব দেয়ার জন্য ডাকল তনু (ছদ্মনাম) একটু শুনে যাও তোমার সাথে আমার একটু কথা আছে। আর তখন ই মেয়েটা বলল দেখেন ভাইয়া আমাকে এভাবে রাস্তার মধ্যে বিরক্ত করলে আমি কিন্তু স্যার কে বলে দিব। তখন আমার বন্ধু কি বলবে ভেবে না পেয়ে বলেই ফেলল আমি তোমার স্যার কে নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি। আমার সামনে এস এস সি পরিক্ষা তো তাই স্যার কে দিয়ে কিছু সমস্যা দেখিয়ে নিব। আমার প্রেম তো গেল। বুঝলাম সে আমার জন্য অনেক কষ্ট করল এবার তাকে নিস্তার দেয়া যাক। এক ছোট আপুকে ধরলাম আমার প্রেম করিয়ে দিতেই হবে। ছোট আপু তো খুব খুশি। বলে কোন ব্যাপার ই না, হয়ে যাবে। কিছু দিন পর ছোট আপু কে জিগাইলাম ব্যাপার কি? সে বলে আপনি যে তাকে পছন্দ করেন সে খুব ভাল ভাবেই জানে। আমি তো শুনে আল্লাদে গদগদ। আমি বললাম আর কিছু বলে নাই প্রেম করবে কিনা? সে বলে শুধু হেসেছে কিছুই বলে নাই। সেই হাসির মানে কি আমি আজ ও বুহি নাই।
তখন আমি কলেজ এ পরি।উফ কি দারুন লাগছে। কিন্তু খুব আহত লাগছে বলতে যে কলেজে আমি কোন মেয়ের সাথে কথা বলেছি কিনা মনে পড়ে না। বাংলার ইতিহাসের কালো তম দিন ঘুল আমার কলেজ লাইফ। এইস এস সি পরিক্ষা দিয়ে আমি ভাবতেছি কার সাথে প্রেম করা যায়। মেয়ে খুজে পাইনা। রাতে ঘুমানোর আগে চিন্তা করি ও ঘুম থেকে উঠে চিন্তা করি কিন্তু মেয়ে কোথায় পাই?
হাইরে মেয়ে তো আছে। এতদিন কেন তাকে মনে ধরেনি? তাঁর সাথে প্রায় দুই বছর ধরে একই স্যার এর কাছে পরেছি। যদিও সে আমার থেকে প্রাই ৬ বছরের ছোট। তাতে কি সে তো অনেক বড় হয়েছে। তারও প্রেম করার বয়স হয়েছে। তাকে দেখি সে রাস্তা দিয়ে হেটে যাই আর আসে কিন্তু তাঁর সাথে কথা বলার সাহস তো আমি পাই না। সে যত নিকটে আসে আমার হার্ট বিট তত বেশি বেড়ে যাই, আবার সে যখন আমার থেকে দূরে চলে যাই তখন আমার স্বাভাবিক হয়ে আসি। অনেক কষ্ট করে তাঁর মোবাইল নুবার জোগার করলাম। তাকে ফোন দেই কেও ধরে না। এস এম এস দেই কোন রেসপন্স পাইনা। এভাবে কি দিন চলে......। পড়ে জানতে পারলাম যে মোবাইলে মাই ফোন দেই সেটা তাঁর মায়ের নাম্বার তাঁর কোন মোবাইল ফোন নাই। হাইরে লজ্জা। প্রায় এক বছর আমি নিষচুপ নিলাম। তারপর আবার চেষ্টা করতে থাকলাম। হ্যা এবার তাঁর নাম্বার পেয়েছি। প্রথম দিন দুই বার ফোন দিলাম কেও ধরল না, তাঁর পরদিন ফোন দিলাম এবার ধরল।
- হ্যালো কে??
- আমি .... বলছি।চিন্তে পারছো??
- ও ভাইয়া কেমন আছেন?
- হ্যা ভাল আছি।তুমি কেমন আছো?
- এই তো ভাইয়া ভাল।
- আচ্ছা তোমাকে ফোন দিলে ফোন ধরনা কেন?
- ও ভাইয়া অপরিচিত নাম্বার তো তাই ধরি না।
- তাইলে আমার টা ধলে যে.........?
- এই নাম্বার টা কয় দিন ধরে ফোন দিতেসে তো তাই ধরছি না।
- আমি তো কয় দিন ধরে ফোন দিচ্ছি না। গতকাল দুই বার দিয়েছিলাম। আজ দুই বার দিলাম। তারপর তুমি ধরলে।
- হা হা হা (মিষ্টি হাসি)
- আচ্ছা তোমার তো সামনে পরিক্ষা। কেমন চলছে পড়াশুনা?
- কোন রকম।
- তোমার আম্মু-আব্বু কেমন আছে?
- ভাল ভাইয়া। আপনি কোথায়?
- আমি ঢাকাতে আছি।
- ওঃ
- আচ্ছা আমি যদি তোমাকে মাঝে মাঝে ফোন দেয় তুমি কি ফোন ধরবা?
- দেখেন ভাইয়া আমার সামনে পরিক্ষা তো তাই কারও সাথে এখন আর কথা বলি না।
- আমার সাথেও বলতে পারবা না?
- হা হা হা (মিষ্টি হাসি)
- এখন কি করছিলা?
- পড়তে ছিলাম।
- আসে পাশে কেও আছে নাকি তোমার?
- না নাই কেন??
- না এমনি তেই। তুমি আর ঐ স্যারের কাছে পড়তে যাও?
- না ভাইয়া আর ঐ স্যারের কাছে পড়ি না।
- ও আচ্ছা। ভালো খুব ভাল।ভাল থাকো।
- আচ্ছা ভাইয়া। রাখছি।
বলেই ফোন লাইন কেটে দিল। আমি খুব খুশি। তাঁর সাথে কথা বলতে পারছি.........
তাকে একটা এস এম এস দিলাম... I think I am in love with u.কোন রেসপন্স নাই। মাঝে মাঝে এস এম এস দিতাম কোন রেসপন্স নাই। অনেক দিন পর তা প্রায় ৬ মাস পর আমি তাকে এস এম এস দিলাম যে- দেখ এভাবে ঝুলিয়ে রেখে তোমার কোন লাভ নাই।হ্যা কিংবা না বলে দাও।আমি আর এভাবে থাকতে পারছিনা। সে ফিরতি এস এম এস এ দিল- No. I am sorry. আমার দিল ভেঙ্গে চুরচুর হয়ে গেল।পরে খোজ নিয়ে দেখি তাঁর এখন দুইটা বয় ফ্রেন্ড আছে। আমার টাতে যদি সে সারা দিত আমি তিন নাম্বার হতাম। আমার আশার একে বারেই চলে গেল। ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা হওয়ার কোন ইচ্ছে আমার আর থাকলো না।
To Be Continue … … …