শাহবাগে একটা কম বয়সী মেয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্লোগান দিচ্ছে "রাজাকারের ফাঁসী চাই"
তাই দেখে শিবিরের মন্তব্য " মাইয়ার তো বুকটা পুরাই ওপেন, শাহবাগে মাইয়ারা সব পতিতা"
যে ছেলেটি জিন্স আর টি শার্ট পড়ে শাহবাগে একই শ্লোগান দিচ্ছে তার বেলায় শিবিরের মন্তব্য
" মুখে দাঁড়ি নাই, মাথায় টুপি নাই, নামাজ কালামের খবর নাই, যতসব, মুরতাদ, আওয়ামীলীগের সাপোর্টার আসছে শাহবাগে
বড় কোন আলেম যদি শাহবাগে সংহতি প্রকাশ করতে যান, তাই দেখে শিবিরের মন্তব্য
" শালা ভন্ড! ইহুদি নাসারদের এজেন্ট, ভারতের দালাল, মুনাফেক!!!"
এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। জামাত শিবিরের ইতিহাসই বলে দেয় তাঁরা কোন ধরনের মানসিকতা লালন করে।
কুরআন, হাদিস আর সিরাত গ্রন্থ পড়ে আমি যখন পৈতৃকসূত্রে পাওয়া ইসলাম ধর্মকে ভালবাসতে শিখি , একই সাথে আমি এই ধর্মকে সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার তাগিদ অনুভব করি।
দেশের সবচাইতে বড় ইসলামিক! দল জামাত আর শিবিরের নাম শুনে আমি তাদের প্রতি আগ্রহ দেখাই। শিবিরের হয়ে কাজ করতে উৎসাহী হই।
কিন্তু সে উৎসাহ বেশীদিন টেকে নাই। টেকার কথাও না।
শিবির একটা ভয়ঙ্করভাবে কম্পারটমেন্টালাইজড ( কক্ষে আবদ্ধ) দল।
তাঁরা কুরআন বুঝে, হাদিস বুঝে কিন্তু মানুষের মন বুঝে না।
একটা কক্ষে তাঁরা নিজেরা মিলিত হয়। নিজেদের কর্ম পদ্ধিত ঠিক করে। তাঁরা বিশ্বাস করে সারা বাংলাদেশ তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এই দেশে তাঁরা ছাড়া আর সাচ্চা মুসলমান নাই। মানুষ কি ভাবে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে নিজেদের মত করে তাঁরা রাজনীতি করছে। একে অন্যকে সাহস দিচ্ছে। সান্তনা দিচ্ছে। জান্নাতের আশা দিচ্ছে।
যে দেশে নারী পুরুষ উলঙ্গ হয়ে কাবা শরীফ তাওয়াফ করতো সে দেশে রাসুল ইসলাম প্রচার করেছেন। পতিতাকে হিজবি করেছেন, মদ্যপ কে নামাজি করেছেন, ব্যাভিচারিকে সংযত করেছেন।
রাসুল যদি তার সারা জীবন ভিন্ন মতাবলম্বীদের চলন, বলন, পোশাক , আশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করতেন তাহলে তিনি মানব জাতির কাছে অনুসরনীয় নেতা হতে পারতেন না।
রাসুল যে সমাজে ইসলাম প্রচার করেছেন সেই সমাজে ইসলাম প্রচারের দায়িত্তে আজ জামাত শিবির কে ছেড়ে দেয়া হত তাইলে সেই সমাজের ২ তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। কারন এত লোকের এত দোষ খুজে বের করে তাদের মুরতাদ, মুনাফিক প্রমান করার চাইতে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া সহজ কাজ হত এই ধরনের মানসিকতার গোষ্ঠীর কাছে।
ইসলামিক দল শিবিরের মিথ্যাচার যে পর্যায়ে গিয়েছে তাঁতে মানুষের মন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রতি আস্থা হারাবে এটাই স্বাভাবিক।
সারা জীবন রাসুলের সম্মান পুনুরুদ্ধার করতে আর নাস্তিকতার বিরুদ্ধে লিখার পরও এই স্ট্যাটাস হয়ত আমাকে বানিয়ে দিবে ভারত, ইজ্ররাইলের পেইড এজেন্ট, মুনাফিক, মুরতাদ কিংবা নাস্তিক।
একটি ইসলামিক দল হবে আদর্শভিত্তিক, নেতা ভিত্তিক নয়। আমাদের নেতা রাসুল ছাড়া আর কেউ নন। আর রাসুলের চরিত্রের বিপরীত চরিত্রের কোন মানুষ কোন ইসলামিক দলের নেতা হতে পারে না। যদি হয় তখন দলের অন্যান্যদের উচিৎ হবে সেই নেতাকে লাথি মেরে সরিয়ে দিয়ে সৎ আদর্শবান কাউকে নেতা বানানো।
আল্লাহ বা রাসুলের সম্মান রক্ষার্থে সংগ্রাম করছে না শিবির, সংগ্রাম করছে না দুঃখী, অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে।
তাঁরা সংগ্রাম করছে তাদের নেতাদের পিঠের চামড়া বাঁচাতে।
এই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা পুলিশের গুলিতে আহত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে।
জালেমদের বাঁচানোর আন্দোলনে মারা গেলে কেউ শহীদ হতে পারে না।
যারা আল্লাহ আর তার রাসুলের নামে অপরাজনীতি করে আল্লাহ ও তার রাসুলকে অপমান করবে তাদের আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া আর আখিরাতে অপদস্থ করুক।