somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গ সূর্যগ্রহণঃ সনাতন ধর্ম ও ইসলাম কি বলে??

১৯ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সনাতন ধর্ম মতেঃ

মহাভারত মতে ভগবান বিষ্ণু অসুর এবং দেবতাদের সমুদ্র মন্থন করে অমৃত নিয়ে আসার বুদ্ধি দেওয়ার পর দেবতা এবং অসুররা সমুদ্র মন্থনে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে এবং নানান ঘটনা দূর্ঘটনার মধ্যদিয়ে ক্ষীর সাগরে সর্পরাজ বাসুকী, কচ্ছপরাজ কূর্ম এবং মন্দার পর্বতের সাহায্যে অমৃত উত্তোলন করে।
সমুদ্র হতে প্রাপ্ত অমৃত সহ অন্যান্ন সম্পদ দেবতারা যখন তাদের ভাগ বাটোয়ারায় নিয়ে মহাব্যাস্ত সেই সুযোগে অসুররা সুধার কলসীটা কবিরাজ ধন্বন্তরীর কাছ থেকে নিয়ে নিল। এবার দেবতাদের টনক নড়লো। একি! যার জন্য এত কিছু সেই অমৃতের কলসী দেখি অসুরদের হাতে । এরপর সেই অমৃতের অধিকার নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে শুরু হলো তুমুল কলহ। সেই ঝগড়া দেখে শিবঠাকুর এসে উভয়পক্ষকে শান্ত হতে নির্দেশ দিলেন। এরই ফাকে নারায়ন অপরূপ এক নারী মুর্তি ধারন করে সেখানে এসে হাজির ।তার সেই অপুর্ব মোহীনি রূপে সবাই যখন বাকরূদ্ধ হয়ে তাকে দেখতে ব্যাস্ত, সেই সুযোগে দেবতা বিষ্ণুর বাহন বিশাল পাখি রূপী দেবতা গরুড় এসে অসুরদের কাছ থেকে অমৃতের কলসী নিয়ে উড়ান দিল।

কিন্ত মেয়ে রূপী নারায়ন গরুড়ের কাছ থেকে অনায়াসেই কলসীটা নিয়ে নিল এবং অমৃত পানের জন্য সবাইকে সার বেধে বসতে অনুরোধ করলো। পুর্বপরিকল্পনা মাফিক প্রথমেই দেবতাদের দিয়ে শুরু হলো অমৃত পান। অসুররা দেখলো যে ভাবে অমৃত বিলি করা হচ্ছে তাতে শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগে আর কিছুই থাকবে না।
এটা দেখে এক অসুর লুকিয়ে দেবতাদের সারিতে ঢুকে অমৃত পান করতে শুরু করলো যা সুর্য্য আর চন্দ্র এর নজরে পড়ে যায়।
তারা এই ঘটনা দেবতা নারায়নের নজরে আনলে তিনি সাথে সাথে তার সুদর্শন চক্র নামক অস্ত্র দিয়ে তার গলা কেটে ফেলে।কিন্ত অমৃত পানের ফলে সেই অসু্রও এখন অক্ষয়, অমর হয়ে গেল আর গ্রহ হয়ে আকাশে আশ্রয় লাভ করলো। এই গ্রহের মাথার নাম হলো রাহু আর দেহের নাম কেতু।
চন্দ্র আর সুর্য্যের উপর আজীবন এক তীব্র আক্রোশ সৃষ্টি হলো অসুর রাহুর। আর তার ফলেই যখনই সুযোগ পায় তখনই তাদের গিলে খেয়ে ফেলতে চেষ্টা করে সে। কিন্ত গলা কাটা থাকায় অল্প কিছুক্ষন পরই তারা গলা দিয়ে বেরিয়ে আসে। এটাই হিন্দু ধর্ম মতে চন্দ্র এবং সুর্য্য গ্রহনের কারন।


ইসলাম ধর্ম মতেঃ
ইসলাম ধর্মমতে সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে আমি বেশি কিছু বলবো না। শুধু পবিত্র কুরআন শরীফের দু-একটি আয়াতের বর্ণনা দিব। বাকিটা আপনারা আপনাদের জ্ঞান-বুদ্ধি,বিচার-বিবেচনা করে সূর্যগ্রহণের ব্যাখ্যা দাড় করিয়া নিবেন।
পবিত্র কোরআনে যখনই চন্দ্র আর সূর্যের কথা বলা হয়েছে তখনই অত্যন্ত গুরত্বের সহিত উল্লেখ করা হয়েছে যে, চন্দ্র আর সূর্য দুটিই নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান অবস্থায় রয়েছে।
”কসম বহু পথ আর কক্ষপথ বিশিষ্ট আসমানের।” --- সুরা যারিয়াত, ৫১.৭
”আর তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং চন্দ্র ও সূর্য। সবাই নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণ করে।”--- সুরা আম্বিয়া, ২১.৩৩

”আর সূর্য স্বীয় গন্তব্য স্থানের দিকে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বাজ্ঞ, আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ” ---- সুরা ইয়াসিন, ৩৬.৩৮
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পালনকর্তার কসম, তোমাদের কথাবার্তার মতই এটা সত্য।---সুরা যারিয়াত, ৫১:২৩
সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী আমাদের সৌরজগতের অংশ। সূর্য নক্ষত্র,পৃথিবী গ্রহ এবং চন্দ্র উপগ্রহ এবং যেহেতু গ্রহ নক্ষত্র নিজস্ব কক্ষপথে ঘুরছে সেহেতু একই সরল রেখায় আসতেই পারে আর সূর্যগ্রহণের সময় চন্দ্রটি পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে বলে সূর্যগ্রহণ হয়। ব্যাস এতটুকুই!
----------------------------------------------
প্রত্যেকের ধর্মের বিশ্বাস নিজের জায়গায়। কাউকে ছোট কিংবা বড় করা অথবা কারোর অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই লেখা নয়। শুধু মাত্র জ্ঞান বিতরণের উদ্দেশ্যে লেখা।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×