বেশ কয়েক মাস আগে রাউন্ড ট্রিপে কোরিয়া ফিরে যাবার পথে বাংলাদেশ থেকে ট্রানজিট ছিল হংকং। দেশে আশার আগে আমাকে এয়ারপোর্ট টিকিট কাউন্টার থেকে বলে দেওয়া হয়েছিল ফিরতি পথে টিকেটটা যেন পরির্বতন করে নেই। কোন বাংলাদেশী নাকি হংকং এ ভিসা ছাড়া ট্রানজিট এর জন্য এলাউ নাহ। বিষয়টা আমার কাছে খুব পরিস্কার ছিল নাহ। পুর্বে আমি ফিরতি পথে থাইল্যান্ড ও চায়নাতে বিনা ভিসাতে ট্রানজিট এর জন্য ছিলাম। ভিসা কেন নিব? আমিতো আর এয়ারপোর্ট এর বাইরে যাচ্ছি নাহ! আর বাংলাদেশে ছিলাম শুধু ১ সপ্তাহ, তাই একটু ব্যস্ত থাকায় আর হংকং এর ভিসার জন্য আবেদন করতে পারিনী। যেদিন ফ্লাইট এয়ারপোর্ট এ আসতে আমাকে চেকিং করতে দেওয়া হল না ট্রানজিট ভিসা না থাকার কারনে। পড়ে বাধ্য হয়ে টিকিট চেঞ্জ করে থাইল্যান্ড হয়ে যেতে হয়েছে।
এবার আসি মূল বিষয়ে, বিগত কয়েক দশক বাঙালীদের ভাবমূর্তি এত খারাপ বাইরের দেশগুলোত্ , যে ইন্ডিয়া,শ্রীলংকার মত দেশ ভ্রমনের জন্য ভিসা নিতে হয়। অনিয়ম, দূনীতি, অবৈধ্য আদম ব্যবসা বিদেশের মাটিতে করে আজকে এই দশা। বাংলাদেশিদের এখন বাইরে কোন দেশে ভ্রমনে যেতে হলে ও ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।ব্যাংক স্টেটমেন্ট, মেডিকেল ইন্সুরেন্স সহ নানারকম ডকুমেন্ট দেখানো লাগে, এরপর অনেকে ভ্রমনের জন্য ভিসা পায় নাহ। কিছু দুরের দেশ মালেশিয়ার জনগন সারাবিশ্ব অবাধে ভ্রমন করতে পাড়ে শুধু ভিসা অন এরাইভাল সুযোগ নিয়ে।
রাশিয়ান, ইউক্রেন শিক্ষার্থীরা ভ্রমনের সাথে বিভিন্ন দেশে কাজ করে আবার ভিসা শেষ হবার পুর্বে চলে যায় নিজ দেশে। এই রকম আরো অনেক নিম্ন আয়ের দেশ যেমন মালেশিয়া, চায়না, মংগোলিয়ানরা ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে গিয়ে কাজ করে। আর এদের ব্যক্তিত আর বাঙালী কোন নিম্ন মধ্যবিত্ত ছেলেকে দেখুন! বাঙালীতো বিদেশ থেকে আসার সময় না পাড়ে পুরো বিদেশটা ব্যাগে মধ্য নিয়ে আসে। কম্বল, বালিশ, উট, দুম্বা ভেড়া সব কিছু ভাই-জানেরা নিয়ে আসতে চায়।
বাঙালীদের অবাধে দেশ ভ্রমন করার সুযোগ ছিল ৯০ দশকে। কিন্তু আমাদের দেশ প্রেমিক একদল বাঙালী মাশাল্লা একবার গিয়েছে তো নিজ ভুবনে আর ফিরে আসে তাই। এখন ভিসা তো দুরের কথা সামান্য এয়ারপোর্ট ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। আমাদের দেশে এখনো হাজারো ছেলে মেয়ে বেকার। তাছাড়া পড়াশোনারত অবস্থায় বিভিন্ন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ছুটিতে বিদেশে যেয়ে কাজ করার সুযোগ টা বাংলাদেশির ছিল যা গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে।
সরকার, আমলা বা বিরোধিদলের এইসব নিয়ে ভাবার কিছু আছে বলে মনে করি না, কারন ওনারা ভি আই পি পাসপোর্ট দিয়ে যে কোন দেশের ভিসা দিয়ে দেয় যা ভিসা অন এরাইবল থেকে সোজা। সেই লাগান ছবির বিখ্যাত ডায়লগটি মনে পড়ে গেল আন্ড্রে রাসেলের করা উপমহাদেশীয় নিয়ে- “তুম সালেহ লোগ হামারি পায়ের নিচে ই রাহেগা”
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৪৫