১। সেদিন সিউল থেকে গিম্পো যাচ্ছিলাম লং ড্রাইভ এ। নদীর ধারে বাধানো এই খাচা গুলো ও দেখিয়ে আমার সাথে থাকা কোরিয়ান মহিলা, বলতো এই গুলো কি?? বুঝলাম উওর কোরিয়ার বর্ডারের খুব কাছাকছি চলে এসেছি। তিনি ব্যাখ্যা করলেন, যুদ্ধ চলাকালিন বা কোন ঝামেলা হলে উওর কোরিয়ার লোকজন যাতে নদী পথে প্রবেশ করতে নাহ পাড়ে, তাই নদীর পাশ এভাবে বাধাই করে দেওয়া হয়েছে। ওনার মা অবশ্য যুদ্ধের কথা শুনলে কেমন হোকচকিয়ে যান। ৮০ উদ্ধা মহিলার ২য় বিশ্ব যুদ্ধ ও কোরিয়ার ওয়ারের ভয়াভহতা নিজ চোখে দেখা। তাই কোন রকম যুদ্ধ যাতে নাহ বাধে ওনি প্রানপন আশা করেন।
২। উওর কোরিয়ার এই এক ঘেয়ামি গুটিয়ে দেওয়ার সেরা সুযোগ ছিল ৯০ দশকের মাঝামাঝি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাংগার পর। আমেরিকা একটি সামরিক হস্তখেপ এর মাধ্যমে কিম পরিবার কে ক্ষমতাচূত্য করে দুই কোরিয়াকে জার্মানীর মত এক করে দিতে পারতো।
কিন্তু আমেরিকা দুই কোরিয়াকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করে শুধু মাএ জাপান আর দক্ষিন কোরিয়া উপকূল নিজেদের হাতের ইশারায় নাচানো আর বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বেচার জন্য। সেই উওর কোরিয়া আজ আংগুল ফুলে কলাগাছ। পারমানবিক শক্তির অধিকারী এই দেশটিকে এখন এত সহজে বধে আনা সম্ভব নাহ।
৩। উওর কোরিয়ার নিকট বিশ্ববাসীর উপকৃত হবার নিছু নেই। নিজের মানুশ মেরে হলে ও তারা পারমানবিক বোমা বানাবে। কিন্তু বিশ্বর বৃহৎ দুই অর্থনীতি জাপান ও দক্ষিন কোরিয়া ধুলোয় মিশিয়ে যাবে। টোয়োটা, স্যমসাং, হুন্দাই, এল জি, নিশান ইলেকট্রনিক কোম্পানিগুলো
এই দুই দেশ কেন্দ্রিক যা সমগ্র দেশের ইলেকট্রিক চাহিদা পূরন করে থাকে। একটি যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অভাব পড়বে তা পূরোন করবে কে?? কাগজে কলমে দক্ষিন কোরিয়া ও জাপান সামরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকলে একটি পারমানবিক বোমা মুছে ফেলতা পারে সবকিছু। আর কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে বর্ডার মাএ মাইল দশেকের পথ। উওর কোরিয়ার সমস্ত মিসাইল গুলো তাক করা এই শহরকে ঘিরে। কেননা কোরিয়ার অর্থনীতি আর অধিকাংশ মানুশের বসবাস এই সিউলে।
৪। শুধু যে আমেরিকার নোংরা প্রভাব তা কিন্তু নয়, জাপান ও দক্ষিন কোরিয়ান নিজেদের কিছু সামরিক ব্যর্থতা ও আছে। ইরাক পারমানবিক বোমা বানানোর পূর্বে ইসরাইলে মোসাদ গোপনে তাদের নিউক্লিয়ার চুল্লিগুলি ধংস করতে সক্ষম হয়। ইরান ও সিরিয়া ইসূতে তারা খুব সোচ্চার মধ্যপ্রাচ্য নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য। অন্যদিকে জাপান, কোরিয়া এত সামরিক ব্যয় করে উওর কোরিয়ার পারমানবিক বোমা প্রকল্প বাধা গ্রস্থ করতে পারলো নাহ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:০৪