সেদিন রাতে বাসায় ফেরার পথে পার্কের সামনে হটাৎ একটি কুকুর দেখেতে পাই। প্রথমে ভাবলাম কুকুরটির মালিক হয়তো আসে পাশে ই আছে। তাই এই সুযোগে এত সুন্দর নাদু পুদু একটা কুকুরকে একটু আদর করতে গেলাম। কুকুরটির গলায় হাত দিতে গিয়ে অবাক হলাম
কারন কুকুরটির গলার চেন ছেরা!!!!! তার মানে হয় সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে নাহ হয় মালিকের সাথে বাইরে হাটার সময় ছেন ছিড়ে হারিয়ে গেছে।
কুকুরটিকে নিয়ে অনেকক্ষন দারিয়ে থাকি, দেখলাম কেউ খুজতে আসে কিনা??? তাছারা কুকুরের ঘ্রান শক্তি খুব পখর, হারিয়ে গেলে তারা নিজে নিজে ঘ্রান শুকে ঠিক বাসা খুজে নিতে পাড়ে। কুকুরটি ও মাটি শুকে তাই করছে, কিন্তূ কোন কূল কিনারা করতে পারছে নাহ। এর মধ্য অনেকে আমার সাথে কুকুরটি দেখে ভাবলো এইটা আমার কুকুর। কিছু মেয়ে তো কুকুরটিকে জরিয়ে ধরে,চুমা দিয়ে ওমা!!! নাইস পাপি!!
তো কুকুরটার প্রতি আমার ও কিছুটা লোভ হল, আমার বাসা কাছেই, কুকুরটাকে সরিয়ে ফেলতে বেশি সময় লাগবে নাহ। আর সারর্বিয়ান হুউস্কি আর জাপানিজ আকিরা কুকুর বলতে আমি অজ্ঞান। কিন্তু এই প্রজাতির কুকুরের যে দাম তাই কিনবো কিনবো করে আর কিনা হউ নী। আর তাছাড়া এইসব কুকুর লালন পালন অনেক ব্যায় সাপেক্ষ। তাই সাধ থাকলে ও সাধ্য হয় নী
সারর্বিয়ান হুউস্কি প্রজাতির কুকুর। হারিয়ে যাওয়া কুকুরটা এই প্রজাতির কিছু হবে।
কিছুসময় পর বুঝলাম কুকুরটির খিদে পেয়েছে, আর ভুলিয়ে ভালিয়ে বাসায় নিয়ে যেতে খাবার এর কোন বিকল্ল্প নেই।তাই পাশের দোকান থেকে একটা ডগ ফূডের কেন কিনে এনে দিলাম। ওই মাহ গড!!!! খাবার দিতে কুকুরটি খাবার থেকে মুখ সরিয়ে নিল। বুঝলাম এইটা কোন ধনীর আলালের ঘরের দুলাল হবে। এইসব কম দামি খাবার খায় নাহ। নেট কুকুড়টির দাম সার্চ দিতে বুকটা কেমম যেন ঠান্ডা হয়ে গেল, এই প্রজাতির বাচ্চার দাম ই কোরিয়ান ২৫ থেকে ৩০ লাখ ওন মানে বাংলাদেশি টাকায় ২ থেকে ২.৫ লাখ টাকা। এর এইটা প্রাপ্তবয়স্ক নাদু পুদু কুকুর, এইটার দাম আরো বেশি।
কুকুরটা নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম। তাছাড়া আমি থাকি অফিস স্টল এ। ছোট রুমের বাসা, এত বড় কুকুর নিয়ে থাকা আমার পক্ষে কস্ট সাধ্য ব্যাপার। তাছাড়া আমার একটা পার্রসিয়ান জাতের বিড়াল আছে। কুকুর বিড়াল এক সাথে থাকতে পারে নাহ। আর এর বড় কুকুর লালন পালন করবো আমি গরিব মানুশ। আপনার হয়তো ভাবছেন কুকুর বিড়াল খায় মাংশের হাড় মাছের কাটা আবার কিসের ব্যায়?ওটা নাহয় একটু পড়ে বলি? তারচেয়ে বড় কথা বিড়াল নিজের যত্ন নিজে করতে পাড়ে, কোন প্রশিক্ষণ দিতে হয় নাহ,নিজের ইন্দিয় শক্তি দিয়ে বুঝে নেয় কোথায় হাগু মুতু ক রতে হবে কিন্তু প্রশিক্ষণ ছাড়া কুকুত তা পারে না, ঘর বাড়ি নোংরা করে ফেলে। আমি আর নয় ছয় চিন্তা নাহ করে কুকুরটা একটা ডগ রেস্কিউ সেন্টারে দিয়ে আসি।
আমার পার্রসিয়ান জাতের বিড়াল, ইংরেজি নাম জর্জ, ইংরেজ রাজা সপ্তম জর্জ নাম অনুসারে আর কোরিয়ান নাম গুমতিন যার মানে ভালু।বাংলা আপনারা হাসেম কাসেন যে যা নামে ডাকতে পারেন।
পরির্চযা: কুকুর বিড়ালের ঠিকমত যত্ন নাহ করলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়। এমনিতে কুকুর বা বিড়াল এর আয়ু ৭ থেকে ১০ বছর পযন্ত কিন্তু আপনি সঠিক যত্ন আর আর খাদ্য দিলে ১৪ থেকে ১৬ বছ র অবদি বাচাতে পারেন।
যেমন আমার বিড়াল এর বয়স এখন ৬। আর তাদের খাবার মানে মাছের কাটা, দুধ মাংশের হাড় পচা বাসি এইসব নাহ। পেট হাসপাতল তাদের জন্য স্পেশাল ডগ ফুড কেট ফুড দেওয়া। দারান আপনাদের কিছু নমুনা দেখাই-
এইগুলো স্পেশাল কেন, এরমধ্য টুনা ফিস, চিকেম, সেলমন, ফ্রোজেন ইদুর ইত্যাদি থাকে। এইগুলো এর মধ্য বিড়ালের পাকস্থলী কোন কোন ভিটামিন কতটুকু নিতে পারবে তা নিধ্যারন করা আছে।
এইগুলো কেট বিস্কিট। এইগুলা খেতে খুব ভালবাসে কিন্তু এইগুলো ফ্যাট যুক্ত খাবার তাই পরিমান মত দিতে হয় নাহলে ওজন বেড়ে যায়।
এইগুলো আমাদের ভাতের মত তাদের ডেইলি খাবার। যত ইচ্ছা তত খাওয়ান ০ ফ্যাট।
তাছারা আপনার সঠিক জ্ঞান থাকা লাগবে গৃহপালিত প্রানি সম্পকে। যেমন বিড়াল পানি পছন্দ করে নাহ এদের গোসল করাবার প্রয়োজন নেই,নিজের জিহবা দিয়ে চেটে এরা গ্রোমিং করে।
চিকিৎসা : প্রতিমাসে একবার ডাক্তার কাছে তাদের পরিক্ষা নীরিক্ষা ওজন বদ্ধি, খাবার ইত্যাদি চেকাপ করাতে হয়। ডাক্তার এই অনুযায়ী খাবার দাবার ও পরার্মশ দিয়ে থাকে। আপনি হ য় তো ভাবছেন ক ত্তা বিড়ালের আবার ডাক্তার। আমাদের দেশে নাহ হ১লে বিদেশে একজন পেট চিকিৎসক এর আয় ও সম্মনা সাধারন ডাক্তার থেকে বেশি। মানুসষের মেডিকেল ইন্সুরেন্স থাকে কিন্ত্য প্রানীদের তা নেই। যেমম দু মাস আমার বিড়ালের ঘন ঘন বমি করার ফলে ডাক্তার কাছে যেতে হয়, পড়ে লিভারে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ইঞ্জেকশন ও খাদ্য চেঞ্জ ক রে দেওয়া হয় সবকিছুর জন্য।
এরপর গৃহপালিত কুকুর বা বিড়াল কে যৌনাঙ্গ কেটে সার্জারি কড়াতে হয়, যাতে কারো সাথে মিলিত হতে না পাড়ে। এইসব কিছু কিন্তু করতে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করতে হয়।
এবার কিছু মজার ঘটনা শুনুন! কখনো শুনেছেন বিড়াল বা কুকুরের থাকার জন্য হোটেল। হ্যা!!! এমন ব্যাবস্থা আছে। ধরুন আপনি কোন কাজে বাড়ির বাইরে থাকবেন, কিছুদিনের জন্য আপনার বিড়াল বা কুকুরের দেখাশোনা কে করবে?? আপনি তাদের রেখে আসতে পাড়েন পেট হোটেলে, সেখানে তারা খাবার-দাবার খেলাধুলা সহ সব ব্যবস্থাই আছে।
আমি দেশে আসলে অবশ্য আমার বিড়াল আমার বন্ধুর মায়ের কাছে রেখে আসি। ওনার বিশাল আলিশান ফ্যালট আর নিজের রাস্তা থেকে তুলে আনা বিড়াল, তাই বলে আদর যত্ন কোন কিছুর কমতি নেয়! একদম নিজের ছেলের মত করে পালেন, বিড়ালের খেলার জন্য ৩৫০০০ টাকায় খেলার সরঞ্জাম কিনে রেখেছে। সেই সুযোগে আমার বিড়াল টা একটু খেলাধুলার সুযোগ পায়।
ভদ্র মহিলা ধনী হওয়ার ফলে ওনার রাস্তার বিড়াল ও এখম বস্তির ছেলে কোটিপতি হওয়ার দশা।
সবকিছু শুনে, আপনার একটু বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। বাংলাদেশ ভাবলে ভূল কিছু বলে মনে হবে নাহ, কিন্তু বাইরে পশুপাখি ব্যপার নিয়ে আপোস করে না। একটি কুকুর-বিড়ালের এর পিছনে যে পরিমান অর্থ খরচ করা হয়, আমাদের দেশের অনেক পরিবার এর মাসিক ব্যায় ও এত না। কারন আপনি যখন কারো দায়িত্ব নিবেন সর্বষ দিয়ে তার যত্ন করার চেষ্টা করবেন।
খেলার সরঞ্জামাদি।
বিড়ালের স্ক্যাচ বোর্ড। এইটার মধ্য বিড়াল নখ দিয়ে আচর কাটে।
শেষ করবো, সৈয়দ মুজতবা আলীর গল্পের উদ্ধিতি দিয়ে, “লাট সাহেবের তিন পা অলা কুকুরের পেছনে মাসে যদি ৭৫ টাকা খরচ হয়, আর আমি, আমার স্ত্রী, বিধবা বোন, দুই ছেলে মেয়েসহ আমার বেতন যদি ২৫ টাকা হয়, তবে লাটসাহেবের কুকুরের কয় পায়ের সমান আমার পরিবার”?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৩৮