somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কলিমুদ্দির কোরিয়া ভ্রমণ। (কোরিয়া ডায়েরী)

৩১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইনচন এয়ারপোর্ট।

আপনি যদি ভ্রমন পিপাসু হয়ে থাকেন, কোরিয়া হতে পারে আপনার জন্য বিনোদনের অন্যতম স্থান। সি এন এন নিউজ জরিপে কোরিয়ার ৩৫ টি স্থানকে অন্যতম দশনিয় স্থান বলে তুলে ধরা হয়েছে।

কলিমুদ্দির কোরিয়াতে আসা হইছে এই নিয়ে দুই বার। প্রথমবার,সে যখন কোরিয়াতে আসে তখন ছিল নভেম্বর মাস। যখন চরম ও হার কাপানো শীত। সেবার বিমানে এসে কোরিয়াতে নামে সন্ধায়। জাতি ও দেশ হিসেবে কোরিয়া কত পরিস্কার উন্নত তা কলিমুদ্দি কোরিয়ান ইনচন এয়ারপোর্ট দেখে বুঝতে পারে। যে কয়েকটি দেশের এয়ারপোর্ট তার দেখা হইছে, তারমধ্য ইনচন এর মত এত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর ইকোফেন্ডলী আর কোথাও দেখে নাই। এর মধ্যে আবার যখন ইমিগ্রেশন আসলো, তখন অফিসার তার পাসপোর্ট স্কেন করার সাথে সাথে, কম্পিউটার থেকে বাংলায় বলে উঠলো বদ্ধা আঙুল দিয়ে দুই হাত প্রেস করুন। কলিমুদ্দির মনে মনে কয় বাপরে!!! কি প্রযুক্তি? এর পড়ে আরো দেখলো, ওদের এ টি এম বুথগুলো ও বাংলাসহ আরো কিছু বিদেশি ভাষা আছে। সেই অবস্থা!!!


এ টি এম বুথ।

সবকাজ শেষ করে কলিমুদ্দির এয়ারপোর্ট এর বাইরে আসতে, তার মনে হল শরীরে কেউ বরফের ছুরিকাঘাত করলো। বাপরে!!! এত ঠান্ডা। যতদুর মনে পড়ে সেদিন তাপমাত্রা ছিল -৩ এর মত। আর কলিমুদ্দির গায়ে দেশীয় শীতের কাপড়,তাই দফাদারের রফা ঠাণ্ডা হয়ে যায়।



এর মধ্য দফাদার সাহেবের কোরিয়ান বন্ধু তার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছিল। বন্ধুর সাথে এরপর সোজা বাসে। কোরিয়ান এয়ারপোর্ট লাইনারের লিমোজিন বাস সিউল এর প্রায় সব জায়গা তে যায়, এবং খুবই আরামদায়ক এর সিটগুলো, তাই কলিমুদ্দি বাস ও সীট দেখে বলে, যে এয়ারলাইন আইছি তার বিজনেস ক্লাস ও এত আরামদায়ক না।

কোরিয়াতে ঠান্ডাছিল কলিমুদ্দির ধারনার চেয়ে ও বেশী। তাই সেদিন রাতে ই চলে গিয়েছিল কিছু গরম কাপরর কেনার জন্য। সিউলের রাস্তাঘাট, শপিং মল গুলো খুবই আলোকময়।


কলিমুদ্দি ভাবছিল, কোরিয়া আইসা খাবার দাবার নিয়ে তার খুব ঝামেলা হইবো। তার ধারনা ছিল এরা যা খায়, সাপ বিচ্ছু, শুকর তা সে কি করে খাবে? কিন্তু এমন কিছুই হয় নাই। এরা বিফ খুবই পছন্দ করে। সব খাবারে এমন কি সুপ গুলোতে ও বিফ থাকে। আর কোরিয়া আইসা কোরিয়ান বারবিউ খাবেন না তা কি করে হয়?

নিচে কোরিয়ান বারবিকিউ।




র সিরম্প সাথে স্যয়াসস।



সী সেল ফুড।



হান নদী কলিমুদ্দি খুবই প্রিয় জায়গা। সিউল শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলে গেছে এই নদী। তার যতদুর চোখে পড়ে এই নদীর উপর প্রায় ৮ থেকে ১০ খানা সেতু সে দেখতে পায়। কোন এক বিড্রজ এর উপর থেকে সে পাহাড়ের সাথে ঘেষে থাকা উচ্চ অট্যালিকার আলোক জলময় রাতের দৃশ্য মুগ্ধ হয়ে দেখে আর মনে মনে পড়ে বাল্যকালের সেই কবিতা!
"থাকবো নাকো বধ্য ঘরে, দেখবো এবার জগৎ টাকে
কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে"

হান নদী।





ভালবাসার এক নিদশন এর নাম কোরিয়ান লাভ হোটেল। আমদের দেশের প্রেমিক প্রেমিকাদের মত এরা লিটনের ফ্যাল্ট এ যায় না। তাদের মনোরঞ্জন জন্য এই সু ব্যবস্থা। দাম অনুযায়ী ৫ তারকা হোটেলের মত সব সুযোগ সুবিধা পাবেন এখানে।

লাভ হোটেল।



কোরিয়ানরা গরম শীত প্রায় সারাবছর গরম পানি দিয়ে গোসল করে। এর মদ্ধে সাওনা খুবই বিখ্যাত। সাওনাতে অনেকগুলো সুগন্দীযুক্ত গরম পানির চৌবাচ্চা থাকে। এতে তারা সবাই হয়ে গোসল করে।

কলিমুদ্দি তার বন্ধুকে বলে সেখানে যেতে চায়। কিন্তু বন্ধু বলে সেখানে নাকি সবাই লেংটা হয়ে গোসল করে। কলিমুদ্দি বলে সেইটা কেমন কথা?? এখানে তোর বাপ দাদারে আইসা ও দেখতে পারস, তখন কি হবে?? বন্ধু বলে আরে এইটা কোন ব্যাপার নাকি? আগে বাবা দাদা সবাইরে নিয়া আইসা অনেক গোসল করছি এখন তেমন আসা হয় না। আর আমার বাপ দাদার "ইয়ে" আমি অনেক দেখছি, একসাথে গোসল করা এইডা আমাগো কালচার। কেন তোরা যাছ না? কলিমুদ্দি "থ" হয়ে কয়, আমরা আমাদের বাপের সাথে ঈদের নামাজ পড়া ছাড়া আর কোথায় যাই না। পড়ে ব্যাপারটা নিজে যেয়ে দেখার জন্য কলিমুদ্দি সাওনায় গিয়ে একদিন এর জন্য কোরিয়ান হয়ে যায়।

কোরিয়ান সাওনা। এখানে ঠুকার আগে লকার জামা কাপড়, ফোন সব রাখতে হবে। ছবি তোলা নিষেধ। তাই এইগুলো গুগল থেকে নেওয়া।


স্টীম বাথ।



সেখানে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। এছাড়া আছে স্টিম বাথ,বডি ম্যাসাজ। এখানে কিছু লোক থাকে, যারা সারা শরীর স্কাব করে ময়লা তুলে দিবে। কলিমুদ্দি তার সব গুলো ই করে আর অবাক হয়ে দেখে, বাপ, দাদা, কচি খোকা বালকসহ সবার "ইয়ে"।

গোসলের পড়ে কলিমুদ্দি তার বন্ধুসহ রেস্ট রুমে যায়। বিশাল বর রুম। মহিলা পুরুষ সবাই এখানে গোসল শেষে রেস্ট নেয়। অব্শ্য সবাই টাওয়াল পড়ে থাকে। তাই কলিমুদ্দির একটু মন খারাপ। তাই খারাপ মনে, কোন এক সুন্দরী রমনির কাছে যেয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

রেস্টিং রুম।



একদিন বন্ধুসহ কলিমুদ্দি কোরিয়ান সুপারসপ দেখতে যায়। যাকে কোরিয়ান ভাষায় ই মারট বলে। বিশাল বড় মারট।। টিভি ফ্রিজ থেকে বাচ্চাদের চাড্ডি সবই আছে। সেখান থেকে দুইখান সুইট ওয়ান ও কিনে কলিমুদ্দি। কিন্তু একটা জিনিস দেখে তার চোখ আটকে যায়। সে দেখে কিছু গরু মাংসের দাম অন্যান্য গরু মাংসের দাম থেকে খুবই কম। কলিমুদ্দি তার বন্ধুর কাছেঘটনা কি জানতে চায়? বন্ধু বলে এই মাংস গুলো এক মাস ধরে এখানে, কিছুদিন পড় মেয়াদ শেষ আর কোরিয়ানরা এইসব নিয়ে খুব হাইজেনিক।পুরানো কিছু তারা খায় না তাই এমন দাম। কলিমুদ্দি বলে, আমাদের দেশেতো কোরবানির গরু জবাই দিয়ে ৩ মাস ফ্রিজে রেখে খাই আমাদের তো কিছুই হয় না। বন্ধু কথায় না পেড়ে বলে চল এইদিকে যাই।

ই মারট।





কলিমুদ্দি এখনো কোরিয়াতে আছে তাই তার ভ্রমন কাহিনি ও চলব


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১০





যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×