somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাণ বন্ধুর সংগ নিলাম, ভালবেসে মনও দিলাম। আগে যাহা ভেবে ছিলাম , এখন দেখি তা না! :-*

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়েষ্টার্ন কালচার গুলি মানব-মানবীর সম্পর্ক কে কত সহজে ক্যাটেগোরাইজ করে ফেলেছে। “ ও হচ্ছে আমার নউ ক্রাশঃ – এরকম ১০১ টা ক্রাশ থাকাও কারো জন্যে দোষের না। ওদের সাথে তো আর প্রেম না! একটু আনন্দ, একটু দুষ্টামি আর ফ্লার্টিং! সিরিয়াস তো কিছু না! ট্রাই আউট নিউ রিলেশ্ন, মীট নিউ পিপল – এসব এনকারেজ করতে গিয়ে একটা ছোট সমস্যা অবশ্য নাম হম- কনফিউশন। একেতেই ভালবাসা জিনিসটাই কনফিউজিং। কোন সংজ্ঞা নাই, অবয়হীন একটা ব্যাপার। একেকজনার জীবনে এটা আসে একেক রুপে। এও রকম ফিলিংস মেশানো থাকে এতে, যে এর ভীড়ে হারিয়ে যায় আবেগী এশীয় ভালবাসার কনসেপ্ট। কোনটাকে বিশ্বাষ করবো? অতীত নাকি বর্তমান যুগের স্টাইল? কাওকে ভাওবাসলে তাকে কি সাথে সাথে বলা উচিত? তাকে ফুলে-গ্রীটিংস কার্ডে ভাসিয়ে দেওয়া উচিত? সময় কাটিয়ে দেখা উচিত সেই ভাল্বাসা করটা গভীর? ভালবাসা আদৌ কি এতটাই প্রকাশ নির্ভর?কাওকে ভালবেসেও তাকে সেটা জানতে না দেবার ব্যাপারটা কি উঠেই গেল পথিবি থেকে? তার চেয়েও বড় কথা হল- এ কেমন ভালবাসা, যেটা মুখে বলে বুঝাতে হয়? যেটা গিফট দিয়ে প্রমান করতে হয়? কখনো মনে হয়, এ হল টুয়েন্টি ফার্ষ্ট সেঞ্চুরীর ম্যাস-প্রোডাকশন ভালবাসা। এটা সেই যুগ, যে যুগে অতি জটীল পেইন্টিং/স্কাল্পচারো তৈরী হয় মেশিনে। কারন, হাতে বানালে প্রতিটা সৃষ্টি হবে নতুন আর তুলনাহীন, কিন্তু সংখ্যা তো যাবে কমে! সেরকমী যহি প্লেটনিক প্রেমই যদি সব হয়, তো প্রেমিক জুটিই তো যাবে কমে পৃথিবিতে! আরেবাবা তারচেয়ে ক্লাব-এ যাও, বারে যাও, নয়তো নেট-এ ঢুকে অন্তত চ্যাটীং তো কর! ভাল না বাস, ফ্লার্টিং তো কর! দরকার হলে এমেরিকান বার্গার, বি-এফ-সি তে কিছু পয়সা খরচ কর- আরেবাবা দেখ না কি হয়! তাতেও কাজ না হলে হলর্মাক্স, আর্চিস আছে কেন? দে আর এক্সপার্টস- সাক্সেস গ্যারেন্টিড! কসম! আর অবশ্যই ‘ ডিজুস নাইট প্যাকেজ ‘ এর কথা ভুলবেনা।

এইসব ওয়েষ্টার্নাইজড ল্যাব চেইনের ভীড়ে প্লেটনিক লাভ যদি ব্যাকডেটেড হয়ে গিয়ে আত্মহত্যাও করে, তাতে সো-কল্ড লাভ গুরুদের কিই বা আসে যায়? একটা সময় ছিল, যখন প্রেমীক হৃদয়গুলিতে এই আত্মবিশাসটা বেচে ছিল যে, ভালবাসা যদি সত্যি থাকে দুই আত্মার মাঝে, তা লুকিয়ে তাখে সেই সাধ্য কার নাই! আবার সেই বোধটাও টিকে ছিল, যে অনেক ভালবাসাই প্রকাশে তার পবিত্রতা হারায়। তাই বলে সেইসব ধীর-পায়ে চলা ভালবাসা কালের অতলে হারিয়ে গেছে কি? চাওয়া পাওয়ার নেশাহীন সেসব ভালবাসা পরিণতি পায়নি কি? এফেয়ার ম্যারেজ-টার্ন্ড-টু-ডিজাষ্টার এন্ড ব্রেক আপ এটা আজকে এত বেশী কেন?

নতুন মানুষ খুঁজে নিজেকে ভালবাসায় ভেজাতে চাওয়া, অথবা মনের আবেগ নানা রঙ্গে প্রিয় মানুষের কাছে তুলে ধরা-এর কোনটাই দোষের না হয়তো। কিন্তু, কেন জানি মাঝে মাঝে মনে হয় যে চারিদিকে আজকাল বড় বেশি লাভ গুরুদের আনাগোনা! তারা পদে পদে আমাদেরকে ভালবাসার এ টু জেড শিখাচ্ছে! প্রেমকে অনেক বেশী মার্কেটাইজ করা হয়ে গেছে – এবার কাজ হল আমাদেরকে ঠেলে ঠুলে ওই মাস প্রোডাকশন প্রেমের ফরম্যাটে ঢুকিয়ে দেওয়া।

তারপরের কথা পরে দেখা যাবে জাষ্ট ট্রাই ইট আউট বেবী! যদি না হয়... ওয়েল, নো বিগ ডীল! লগ অন টু ফেসবুক অর হাই-ফাইভ! কত কর অপ্সহ্নস তো রয়েই গেছে! আর ব্রেক-আপ? “১০১-ষ্টেপস টু হ্যান্ডেল ব্রেক-আপস – গাইড হ্যায় না?!

ভালবাসার শাখা-প্রশাখাগুলো আজকে কোটি কোটি ডলারের পণ্য। আর আমরা অনেক সময়ী তার বলি। হয়তো সময় আসবে আমাদের সামনে, যখন ১০০ বছ্র আগের প্রেমের কবিতায় খুজতে হবে প্লেটনিক লাভকে। প্রেমের ঠিক কোন রুপ্টা আজকে আমরা মেনে নিয়েছি, আর তার কতটা ঠিক বা কতটা ভুল, তা জানিনা। তবে যখনি আপনি এই ডিলেমায় পড়বেন যে, “ আমি কি একে ভালবাসি? নাকি ওকে?” অথবা “ কে আমার ভ্যালেন্টাইন? উনি ? নাকি তিনি?” তখনি বুঝে নিয়েন, যে আপনি সম্ভবত শত-অপশন্স এর মার্কেটাইজড লাভ ফরম্যাটে আটকা পড়ে গেছেন। ইওর হার্ট বীন সাক্সেসফুলী পুট ইন অপশন!

সত্যিকার ভালবাসা কখনও অপশনস কে পাত্তা দেয় না। কাওকে ভ্যালেন্টাইন বানালেই সে আজীবন ভালবাসায় শত্তি অর্জন করে না!। কোন জিনিসের যখন কোন গভিরতা থাকেনা তখনই বাহ্যিক চাকচিক্যের প্রয়োজন দেখা দেই ওই গভিরতা হীন বৃত্তকে পুরণ করতে। তখন-এ বার বার ভালবাসি উচ্চারন করতে হয়। আর কনফিউশন কখন আসে? ভিব্রান্তি সৃষ্টির দুটি এবং শুধুমাত্র দুটি কারন, - নিজেকে না জানা, এবং নিজের সাথে সৎ থাকতে না পারা।

পুনশ্চঃ ধন্যবাদ অজানাপথকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:৪৩
১৩টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×