পানি পান করার সুফল কি কি আমজনতার তা একদম পানির মত মুখস্থ । কিন্তু এই পানির মত সহজ পানি যদি আপনি নিয়ম মেনে পালন না করেন তাহলে তা আপনার কঠিন রোগের কারন হতে পারে। এই সম্পর্কে লিখলাম আজ।
১। পানি কখনোই আপনার স্বাস্থ মোটা করবে না। কিন্তু অতিরিক্ত পানি পান আপনার স্থূলতা অথবা মোটা হবার কারন হতে পারে। কারন আপনি যখন একসাথে অনেক পানি পান করবেন এবং এটাকে আপনার অভ্যাসে পরিনত করবেন তখন পাকস্থলী বড় হয়ে যায়। একটা পর্যায়ে আপনি স্বাভাবিক খেলেও আপনার পেট ভরবে না , তাই পেট ভরার জন্য আপনি বেশী খাবেন যা আপনার স্থুলতার কারন। তাই সারাদিনে একবার অথবা দুইবারে পানি পান না করে ২ ঘন্টা পর পর ১-২ গ্লাস পানি পান করা উচিৎ এতে শরীর ব্যলেন্স থাকে।
২। অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে একেবারে ১ অথবা ২ লিটার পানি পান করে নেন, আপনি সর্বোচ্চ ১ লিটার পানি পান করতে পারেন যদি আপনি স্বাভাবিক কায়িক শ্রম/খেলাধুলা/পরিশ্রমের কাজ করেন। কিন্তু আপনি যদি স্বাভাবিক কায়িক শ্রম না করেন তাহলে কোনভাবেই এক সাথে ১ লিটার পানিও নয় । অনবরত শরীরের পানি ফিল্টার করতে করতে কিডনীর ম্যাকানিজম দুর্বল হয়ে যায়। এতে করে ধীরে ধীরে আপনার কিডনি ডেমেজ হতে শুরু করবে। যে বয়সে আমরা এরকম ভাবে বীরত্ব দেখাই অর্থাৎ কৈশোর থেকে যৌবন এই সময়টায় শরীর এই অনিয়মের প্রতিক্রিয়া দেখায় না, কিন্তু মাঝ বয়সে যদি টের পান আপনার কিডনী ডেমেজ হয়ে গেছে, আর যদি ভাবেন প্রতিদিন এক ঠ্যলায় ১ অথবা ২ লিটার পানি পান করেছেন কিন্তু কেন এরকম হলো? তা খুব দুর্ভাগ্যজনক!! আপনি বরং ১-২ গ্লাস পানি ২ ঘন্টা পর পর খেতে পারেন যা আপনার স্বাস্থ এবং কিডনীর জন্য হিতকর ।
৩। অনেকে খাবার খাওয়ার সময় অনবরত পানি পান করতে থাকেন অথচ আপনি যদি খাবার গ্রহনের সময় অতিরিক্ত পানি পান করেন তাহলে আপনার খাবার হজমের জন্য এসেনশিয়াল পাচক রস গুলো পাতলা হয়ে তার কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলে, অর্থাৎ আপনার হজম প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায়। তাছাড়া আপনি গলা জ্বলা, পেট ফাপা, গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। খাবারের আধা ঘন্টা আগে এক গ্লাস পানি, খাবার খাওয়ার সময় আধা গ্লাস পানি এবং খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা পর এক গ্লাস, এবং এক ঘন্টা পর থেকে স্বাভাবিক নিয়মে পানি পান করা উচিৎ।
৪। যাদের কিডনি দুর্বল তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করতে হবে।
৫। প্রতিদিন ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং আপনি যদি কম পরিশ্রম করেন, শীত প্রধান এলাকায় থাকেন তাহলে কম পানি পান করলেও চলবে। আবার আপনি যদি অধিক পরিশ্রম করেন, গরম প্রধান এলাকায় থাকেন, যদি প্রচুর ঘামেন তাহলে আপনার সারাদিনে ১৬ গ্লাস পানিও পান করা লাগতে পারে।
৬। তবে আপনি যখন ঔষদ খাবেন বিশেষ করে হাই পাওয়ার ড্রাগ নিবেন তার পর অবশ্যই বেশী বেশী পানি পান করবেন(তার মানে আবার এক লিটার করে নয়)। কারন আমাদের গ্রহন করা ড্রাগের ৯৫ % ছয় থেকে বার ঘন্টার মধ্যে প্রস্রাবের মধ্য দিয়ে বের হয়ে যায়। এখন আপনি যদি বেশী পানি পান করেন তাহলে কিডনীর ফিল্টার করতে সহজ হয় । আপনি যদি হাই পাওয়ার এন্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয় খেয়াল করেছেন প্রস্রাব কিভাবে হলুদ রং ধারন করে। সব ঔষদে প্রস্রাবের বর্ণ চেঞ্জ হবে তা নয়, কিন্তু আল্টিমেটলি কিডনীর উপর দিয়েই ধকল টা যায়। তাই কিডনীর উপর দিয়ে যেন ড্রাগের ধকলটা কম যায় তার জন্য ঔষধ খাওয়ার পর অবশ্যই পরিমিত পানি পান করা উচিৎ।
*কোন তথ্য ভূল হলে অথবা ভিন্নমত পোষণ করলে জানাবেন।
ব্লগ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
twitter.com/KhaanOfficial
instagram.com/khaanayuub
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০০