অতিরিক্ত ওজন এখন প্রতিটা মানুষের প্রধান সমস্যা । ম্যগাজিন - ওয়েব পোর্টালে আমরা ওজন কমানো বিষয়ক অনেক নিবন্ধ পাই কিন্তু বাস্তবে তা অনুসরন করা অনেক কঠিন। আমার যেহেতু নিজের ওজন অত্যাধিক ছিল এবং আমি তা রিডিউস করতে পেরেছি ওই অভিজ্ঞতাই আজ আপনাদের শেয়ার করব । ওজন কমানোর জন্য স্বাভাবিক হাঠা-চলা-কাজকর্ম এবং একটি সমন্বিত ডায়েট প্ল্যানই যথেষ্ট। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এক্সারসাইজের চেয়ে বেশী কার্যকরী হলো ডায়েট। ধরুন আপনি ২ ঘন্টা এক্সারসাইজ করে দেড় হাজার ক্যালরি বার্ন করেছেন। কিন্তু আপনি ডায়েটে গ্রহন করলেন ৩-৪ হাজার ক্যালরি তাহলে কিভাবে আপনার ওজন কমবে ? সে ক্ষেত্রে আপনাকে সারাদিন ই এক্সারসাইজের উপর থাকতে হবে কিন্তু কৃষক অথবা শ্রমজীবী মানুষের মত অমানুষিক পরিশ্রম যেহেতু সম্ভব নয় সেহেতু ডায়েট কন্ট্রোল ই প্রধান উপায়। ঐ ক্ষেত্রে লো -কার্বোহাইড্রেট এবং হাই প্রোটিন একটি ডায়েট চার্ট আমাদের অবলম্বন করা উচিৎ।কেননা মানুষের মোটা হবার মেইন কারন অধিক পরিমানে কার্বোহাইড্রেট গ্রহন অর্থাৎ ভাত/রুটি/ডাল/চিনি/মিষ্টি অধিক পরিমানে গ্রহন। যারা স্বাভাবিক কায়িক পরিশ্রম করে তাঁরা নিয়ম গুলো পালন করলে আমি আশা করি এক সপ্তাহের মাঝে পরিবর্তন ফিল করবেন। তবে যারা স্বাভাবিক কায়িক শ্রম করেন না তাদের ক্ষেত্রে আরো কঠোর ডায়ট চার্ট লাগবে। আমি যেভাবে ওজন কমিয়েছি তা ক্রমানুসারে দিলাম।
১. আমি কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে প্রোটিন বেশী খেয়েছি সাথে ভেজিটেবল। যেমন সকালের নাস্তায় আমি ৪ কাপ ভাত/৩পিছ রুটি+ একটি ডিম+সবজি। তবে একটা কথা মেনে চলতে হবে সকালের খানা লেট করে খাওয়া উচিৎ নয় সে ক্ষত্রে শরীর দীর্ঘক্ষন অভুক্ত থাকার কারনে একবারেই বেশী ক্যালরি গ্রহন করে নেয় কিন্তু শরীর যা অত্যাবর্শকীয় তা নিয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি চর্বি রুপে শরীরে জমা রাখে। দুপুরের খবারে ৩ কাপ ভাত+ ২ পিছ মাছ/মাংস+সবজি ও ডাল। রাতের খাবার ২ কাপ ভাত+ একটি ডম+সবজি।
২. একটা জিনিষ মনে রাখতে হবে আপনি যদি ভাত-রুটি কমিয়ে খান সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই প্রোটিন (মাছ-মাংস-ডিম জাতীয় খাবার) আনুপাতিক হারে বাড়াতে হবে তবে তার মানে এই নয় আপনি সকালের নাস্তায় ৪ কাপ ভাত না খেয়ে শুধু ৪ পিছ ডিম খেলেন ! তাহলে কিন্তু খবর আছে!
৩. এইখানে একটা বিষয় নিশ্চয় খেয়াল করেছেন ৪ কাপ, ৩ কাপ, ২ কাপ ভাত এর কথা বলেছি আমি। এতো সামান্য ভাত খেয়ে আপনি কিভাবে থাকবেন? এই ক্ষেত্রে আমি যা করতাম তা হলো প্লেটের অর্ধেক সবজি(লাউ,টমেটো,পুই শাঁক,বেগুন,শাঁক ) দিয়ে পূর্ণ করতাম, স্বাদ হয়তো পেতাম না কিন্তু কাজের কাজ ঠিক ই হতো। সবজির আরেকটা গুন হলো এর মাঝে থাকা ফাইবার যা আপনার মলের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। হজম ক্রিয়া স্বাভাবিক করে। তবে যাদের আইবিএস /আমাশয়/পাতলা পায়খানার সমস্যা আছে তাদের ভেজিটেবল গ্রহন না করাই উত্তম।
৪. সকাল থেকে দুপুরের এবং দুপুর থেকে রাতের মধ্যবর্তী সময় এক বাটি মুড়ি এবং প্রচুর পানি পান করা যেতে পারে।
৫. ওজন কমানোর ক্ষেত্রে যা একেবারেই বর্জনীয় তাহলো চিনি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার। এইগুলো একেবারেই খাওয়া যাবেনা । আপনার একদিনের পরিশ্রম নষ্ট করার জন্য ২ চামচ চিনি অথবা একটি মিষ্টিই যথেষ্ট। আর কোমল পানীয়র নাম একেবারেই ভুলে যেতে হবে !! কারন একটি ২৫০ এমএল এর কোমল পানীয়তে প্রায় ১০ চামচ চিনি থাকে।
৬. অনেকেই স্বাস্থ কমানোর জন্য ডিম খাওয়া ছেড়ে দেন যা একেবারেই ঠিক নয় । ডিমের মাঝে আছে ভিটামিন 'কে' যা উল্টো শরীর কে আঁটসাঁট রাখতে সাহায্য করে অন্য কোন প্রোটিনের এই গুন নেই । প্রতিদিন একটি ডিম কুসুম সহকারে খেতে পারেন!
৭. পানি পান করার ক্ষেত্রে অবশ্য্ই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ । সারা দিনে আপনি ১০ থেকে ১৫ অথবা ৩০ মিনিট পর পর ১ গ্লাস পানি পান করতে পারেন। তবে কখনোই এক সাথে এক লিটার অথবা ৩-৪ গ্লাস পানি পান করবেন না । কারন এক সাথে অনেক পানি পান আপনার শরীরকে হয়তো মোটা করবে না কিন্তু আপনার পাকস্থলীকে বড় করে দিবে। পরবর্তীতে স্বাভাবিক খাবার খেলেও আপনার পেট ভরবে না আপনাকে অধিক খেতে হবে ক্ষুধা নিবারনের জন্য !!
৮ চিকন হবার আরেকটি উপায় হলো ক্রাশ ডায়েট । তবে তা অস্বাস্থকর। যেমন সারাদিনে আপনি একটু পর পর সামান্য পানি পান করলেন সকালে শুধুমাত্র একটি ডিম খেলেন , দুপুরে এবং রাতে সবজি খেলেন! এতে হয়তো ২ দিনে ৩ কেজি ওজন কমানো সম্ভব তবে শরীরের উপর মারাত্নক প্রভাব পরে
**খুব রেস্ট্রিকটেড ডায়েট প্ল্যান এটা নয় তারপরো আপনার বয়স যদি ৩৫ এর মধ্যে হয়ে থাকে এবং কোন কঠিন রোগ না থাকে তবেই তা পালন করবেন । কেননা ৩৫ এর পর শরীর সেনসেটিভ হয়ে যায়, ঐ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের পরামর্শ অবলম্বন করা উচিৎ। তবে ১৮ থেকে ৩৫ পর্যন্ত শরীর ধকল সহ্য করতে পারে যা পরে রিকভারি করে নেয় অর্থাৎ আপনি খুব রেস্ট্রিকটেড ডায়েট চার্ট অবলম্বন করতে পারেন ইচ্চে করলেই।
twitter.com/KhaanOfficial
fb.com/AyuubOfficial
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫০