যৌনবাহিত মারাত্মক রোগ সিফিলিস।ইওরোপে প্রথম পেনডেমিক আকারে দেখাদেয় পঞ্চদশ শতকে।১৪৯৫ সালে ফ্রান্সের রাজা অস্টম চার্লস পঞ্চাশ হাজার সৈন্য নিয়ে নেপলস অবরোধ করেন।একসময় পতন হয় নেপলসের।শুরু হয় লুটতরাজ,ধর্ষন,মানুষহত্যা.. যুগের নিয়ম অনুযায়ী।রাজার সৈন্যদলে ছিল ইওরোপের নানা দেশের সৈন্যসমাবেশ।এদের পিছন পিছন এসে হাজির হয় নানাদেশের বার বণিতারা ।কয়েক মাস পর শোনাগেল নতুন রোগের কথা।
নতুন রোগের নামকরণের ইতিহাসও তেমন বিচিত্র।রোমান সম্রাট ম্যাক্সিমিলিয়ান ঘোষনা দিলেন এ ব্যাধি আগে কখনো দেখা যায়নি,এ নিশ্চয়ই ঈশ্বর নিন্দাজনিত পাপের ফল।রোগের নাম কিন্তু তখনো ঠিক হয়নি।শুরু হলো উদোর পিন্ডি বুধোঁর ঘাড়ে চাপানোর খেলা।তাই ফ্রান্সে এই রোগকে বলা হতো ‘ইটালিয়ান ব্যাধি’,হল্যান্ডে ‘স্প্যানিশ ব্যাধি’, ইংল্যান্ডে ‘ফরাশি ব্যাধি’,রাশিয়ায় ‘পোলিশ ব্যাধি’,ইটালীতে ‘জার্মান ব্যাধি’।একসময় ভাস্কোডাগামার জাহাজে চেপে চলে এলো ভারতবর্ষে । সংগতকারণে এদেশে এর নামকরণ হলো ‘ফিরিঙ্গি ব্যাধি’।মানে হল,আমরা ভাল,অন্যদের থেকে রোগটার উতপত্তি।রোগের নাম কিন্তু তখনো অজানা।
ষোড়শ শতাব্দীতে একজন ইওরোপিয়ান কবি একটি কাব্য লিখেন।সেখানে একটি ফরাসি ব্যাধির উল্লেখ দেখা যায়।কাব্য অনুসারে নায়কের নাম সিফিলিস একজন মেশপালক।ইশ্বর নিন্দার ফলে সে অ্যাপোলোর কোপে পড়ে।দেবতার অভিশাপে অভিশপ্ত হয়।সেই থেকেই ইওরোপে পূর্বেরে ঐ যৌনবাহিত নাম না জানা রোগের নাম হয়ে গেল সিফিলিস।
রাজনীতির সাথে সিফিলিসের সম্পর্ক কোথায় ? আছে, দূরবর্তী একটা সম্পর্ক আছে।অন্তত আমাদের দেশে এইমূহুর্তে।ওই যে,দোষ চাপানোর খেলায়।অতীত অভিজ্ঞতায় বলে-রাজাকার,র এর দালাল,জজমিয়া আর হালের বড়ভাই তত্ত্ব সবই রাজনীতির এক নাম না জানা রোগের সাময়িক নামকরণ মাত্র।কোনদিন হয়তো কোনকবি,গল্পকার এগিয়ে আসবেন,লিখবেন নতুন কাব্য-গল্প ।আর একটা যুতসই নাম পেয়ে যাব আমরা।ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা।