হারাধন বাবু খুব টেনশনে ছিলেন,কি জানি কি হয়!শেষকালে একগাদা ছেলে -মেয়ে পয়দা করিয়াছিলেন বহু ব্যয় করিয়া। টেস্ট টিউব পদ্ধতিতে উৎপন্ন ওই গুলিকে দুনিয়ার আলো দেখানো হইয়াছিল বিনা কস্টের সিজারিয়ানের মাধ্যমে।ট্যাগের স্বাস্থ্য খারাপ হইলেও নিজের মুখরক্ষা হইয়াছিল এইটা ই পরম শান্তি।তা না হইলে চৈত্র মাসে কেউ এত ব্যয় করে ?
মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক।ছেলে-মেয়েদের কথা ভাবিয়া আজ হারাধন বাবুর মনেও শান্তি নেই।
* একটা ছেলে এনালগ।ওইটার খালি হাত চলে,। যারে তারে চপেটাঘাতে ওস্তাদ ।বড়-ছোট মানেনা।
* একটা আবার ১০০% ডিজিটাল।হাতে যন্ত্র নিয়া ঘোরাঘুরি করে।আর পথে প্রান্তরে চাঁদমারি খেলে।
*একটা হইয়াছে পশুপ্রেমী।বিলাই বড়ই ভালবাসে।হারাধন বাবু কালো রং একেবারে দেখিতে পারেন না।কিন্তু ব্যাটার আবার কালো বিলাই ই চাই।কি আর করা ?অগত্যা মানিয়া লইলেন ছেলের সাধ।
* একটা বাউল কিসিমের.... পথে পথে ঘোরে সারাদিন।নাওয়া-খাওয়ার সময় নাই।আহারে ! ছেলেটার মুখের দিকে চাওয়া যায় না।
* একটাকে বহু শখ করিয়া দর্শন শাস্ত্র পড়াইয়া ছিলেন।ব্যাটায় কি শিখিয়াছে, বুঝেননা হারাধন বাবু।বাছা চারিদিকে শুধু ষড়যন্ত্র দর্শন করে।
*একটা ছেলে হইয়াছে মাতাল.. খালি ভ্যাট খায়।তাও ভাল ছিল কিন্তু ইদানিং সে নাকি আবার কি সব নিয়ন্ত্রন-বিতরণ লইয়্যা মাতিয়াছে।শেষমেষ কি মানুষের কাছে মুখ দেখাইবার জো ও থাকিবেনা ? হায় ঈশ্বর।
*একটা আবার নন্দলালের ন্যায় সমাজ সেবক।জাতিকে শিক্ষিত করিয়াই ছাড়িবে।কি কঠিন ব্রতরে বাবা ! হারাধন খালি ভাবেন।
আর কাহাতক বলিবেন ছেলেদের কথা।এইবার একটু মেয়েদের দিকে নজর দিলেন।
* বড় মেয়েটা গায়ে গতরেও তেমনই।গলাটাও দিয়াছেন বিধাতা... সমস্যা হইল যেইখানে সেইখানে গানাবাজানা শুরু করিয়া দেন।স্থান-কাল-পাত্র-মিত্র খেয়াল রাখেনা।
*একটার আবার মুখে বিষ।অবশ্য মেয়েটারইবা দোষ কি? ছোট বেলায় মুখে মধূ দিতে গিয়া ভুলে নিমের রস খাওয়াইয়া দিয়াছিলেন দাইমা।ওর আবার ডুগডুগি বাজাইবার বড় সাধ ছিল।আহারে !সাধ মিটিল না।
*একটা বড় একরোখা মেয়ে আছে,সকলের সাথে খালি পাল্লা দিতে চায়।উনি সিম উদ্ধারে নামিয়াছেন।সিম,লাউ লইয়া মাতামাতির কি আছে বুঝিয়া উঠিতে পারেন না হাবাধন বাবু।
নাহ আর ভাবিয়া কাজ নাই।ব্লাড প্রেসার আর রক্তের সুগার বাড়িয়া যাইতে পারে।একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া হারাধন বাবু বলিয়া উঠিলেন... হইল না... কিছুই হইল না....।।
অলক্ষ্যে হাসেন বিধাতা।