বর্তমানে বিশ্বে চাঞ্চল্যকর খবরের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ১৬৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টেলিফোনে আড়িপাতা, পুলিশকে ঘুষপ্রদান সহ নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত মিডিয়া মোঘল রুপার্ট মারডকের সাম্রাজ্য। এত কিছুর পরও ‘দি ফোর্থ এস্টেট’ থেমে নেই। কখনও সত্যান্বেষীর ভূমিকায় সংবাদপত্র প্রতিনিয়ত আমাদের সচেতন করছে, ফাঁস করে দিচ্ছে গুটিবাজদের গোমর। আবার কখনো হলুদ সাংবাদিকতায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও তার কর্মীরা। এরকম দুর্দান্ত নায়ক আর ভিলেনের সমাগম যেখানে হলিউডের রূপালী পর্দায় তারা উঠে আসবে না তা কী করে হয়?? সংবাদপত্র নিয়ে নির্মিত সেরা ৫টি চলচ্চিত্রের তালিকা দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। আসুন জানা যাক।
সিটিজেন কেইন (১৯৪১)
পরিচালক: অরসন ওয়েলস
মৃত্যুর আগে মিডিয়া মোঘল চার্লস ফস্টার কেইন উচ্চারিত শেষ শব্দ ছিলো ‘রোজবাড’। আর তার মৃত্যুর পর রোজবাডের অনুসন্ধানে মিডিয়ায় পড়ে গেলো হৈ চৈ । জীবিতকালে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া বিপুল পরিমাণ ধন-দৌলতের প্রতি অনাকর্ষী কেইনের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো সংবাদপত্র। তাই সংবাদপত্রকে আকড়ে ধরে চেয়েছিলেন আকাশকে স্পর্শ করতে। এই কাহিনী নিয়েই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের তকমা পেয়েছে অরসন ওয়েলসের কালজয়ী সৃষ্টি সিটিজেন কেইন। চিত্রনাট্য, অভিনয়, নির্মাণশৈলী যেকোন দিক থেকেই এ ছবিটিকে শক্তিশালী বলে স্বীকৃত দিয়েছেন বিশ্ব চলচ্চিত্রের তাবৎ বোদ্ধারা। কিন্তু অবাক করা বিষয় তেমন কোন পুরষ্কার জুটেনি চলচ্চিত্রটির কপালে। ধারণা করা হয় খ্যাতনামা মার্কিন পত্রিকা প্রকাশ উইলিয়াম র্যাডলফ হার্স্টের জীবন অবলম্বনে ওয়েলস এ চলচ্চিত্রটি বানিয়েছিলেন।
আইএমডিবি
ডাউনলোড লিংক (টরেন্ট)
উইলিয়াম র্যাডলফ হার্স্ট
অল দ্য প্রেসিডেন্ট’স মেন (১৯৭৬)
পরিচালক: অ্যালান জে পাকুলা
চাঞ্চল্যকার ওয়াটারগেইট কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দেওয়া ওয়াশিংটন পোস্টের দুই সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড ও কার্ল বার্নস্টেইনের লেখা ‘অল দ্য প্রেসিডেন্ট’স মেন’ বই অবলম্বনে সাড়া জাগানো এ চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটিতে বব উডওয়ার্ড ও কার্ল বার্নস্টইনের ভূমিকায় অভিনয় করেন হলিউডের দুই ডাকসাইটে অভিনেতা রবার্ট রেডফোর্ড ও ডাস্টিন হফম্যান। ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারাভিযান চলকালে ক্ষমতাসীন রিপাবলিক দল ও প্রশাসনের পাঁচ ব্যক্তি ওয়াশিংটন ডিসির ওয়াটার গেইট ভবনস্থ বিরোধী ডেমোক্রাট দলের সদর দফতরে আঁড়িপাতার যন্ত্র বসায়। এ কেলেঙ্কারির কথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়ে যাওয়ায় চাপের মুখে তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন পদত্যাগ করেন।
আইএমডিবি
ডাউনলোড লিংক (টরেন্ট)
হিজ গার্ল ফ্রাইডে (১৯৪০):
পরিচালক: হাওয়ার্ড হকস
ক্যারি গ্রান্ট আর রোজালিন্ড রাসেল অভিনীত সর্বকারের অন্যতম সেরা রোমান্টিক-কমেডি চলচ্চিত্র। দি মর্নিং পোস্ট পত্রিকার সম্পাদক গ্রান্ট তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে পুনরায় ফিরে পেতে ব্যবহার করে তার পত্রিকা ও পত্রিকার সংবাদকর্মীদের। দারুন মজার ও হিউমার সংবলিত সংলাপ ও দৃশ্যের জন্য চলচ্চিত্রটি বোদ্ধা ও দর্শকদের গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলো। আমেরিকার ফিল্ম ইন্সটিটিউট শ্রেষ্ঠ কমেডি ছবির তালিকায় এ চলচ্চিত্রটিকে স্থান দিয়েছে ১৯ এ।
আইএমডিবি
ডাউনলোড লিংক (টরেন্ট)
এস ইন দ্য হোল (১৯৫১)
পরিচালক: বিলি ওয়াইল্ডার
সাফল্য ও খ্যাতির সন্ধানে পাগলপ্রায় এক সাংবাদিক নামী পত্রিকাগুলোর কাছ থেকে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়। হতাশায় মুষড়ে পড়া সাংবাদিকের কপাল খুলে যায় যখন পর্বতের গুহায় আটকে পড়া এক ব্যক্তির কাহিনী ছাপানোর সুযোগ পায় সে। কিন্তু উচ্চাভিলাষ ও একগুয়েমি তাকে ঠেলে দেয় অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ভয়ঙ্কর এক পরিস্থিতিতে। বিভিন্ন ঘরানার এবং বক্তব্যধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণের বিলি ওয়াইল্ডার বরাবরই মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন । এ ছবিটি তারই একটি নমুনা।
আইএমডিবি
ডাউনলোড লিংক (টরেন্ট)
ফ্লেচ (১৯৮৫)
পরিচালক: মাইকেল রিচি
একজন সাংবাদিক তার কাজের জন্য কী না করতে পারে!! ফ্লেচ সেরকমই একটি ছবি। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন চেভি চেজ। কমেডি ধারার এ চলচ্চিত্রটির কিছু সংলাপ আজও চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের মনে দাগ কাটে।
আইএমডিবি
ডাউনলোড লিংক (টরেন্ট)
(২৮ জুলাই দৈনিক সমকালে প্রকাশিত )
**চলচ্চিত্র বিষয়ক আমার যত পোস্ট**