সৃষ্টি
বিসর্জন দেবে জেনেও এতো যত্নে কেন গড়ো আমায়?
ঈশ্বরও একদিন তোমাকে অমন যত্ন করেই গড়েছিল,
তুমি হয়তো ভুলে গেছো। তোমার হাতের নিপূণ ছোঁয়ায়
সামান্য কাদা-মাটি থেকে আমি যখন প্রতীমা হয়ে উঠি
ভাবি-আহা, ঈশ্বরের কী মহান সৃষ্টি তুমি! আমি তোমার
মাঝেই ঈশ্বরের ছায়া খুঁজে পাই। ভক্তি আর শ্রদ্ধায় আমি
নত হয়ে যাই। কি সৌভাগ্য আমার, তুমি আমাকে মন্ডপে
সাজিয়ে পূজো দাও, ফুল দাও। অথচ কি অথর্ব আমি!
কি নির্বাক আমি! দশভূজা হয়েও আশীর্বাদের তিলক
ছোঁয়াতে পারিনা তোমার ললাটে, দেবীর আসন ছেড়ে
বসতে পারিনা এই মাটির ধরণীতে। হে মানব পুরোহিত,
মনে মনে আমিও তফাৎ খুঁজি। একই মাটিতে গড়া তুমি
আমি দুজনেই- অথচ হাঁড়, মাংশ আর রক্তের বৈভবে তুমি
কত বিত্তশালী। তোমার হৃদয়ে আছে প্রাণের স্পন্দন,
মস্তিষ্কে ক্ষুরধার বুদ্ধি, জ্ঞানের আলোয় তুমি কতো দীপ্তময়।
অথচ আমি! একই মাটিতে গড়া- শুধুই এক প্রতীমা।
ভেবে অবাক হই, কী ভীষণ ক্ষমতা ধরেন তোমার ঐ ঈশ্বর!
সৃষ্টির অপার মহীমায় তিনি অতুলনীয়, পরম পূজোনীয়।
হে আমার কারিগর, আমাকে রঙে-রূপে সাজিয়ে সৃষ্টির
আনন্দে বিভোর হলেও আমি যে মুগ্ধ তোমারই ঈশ্বরে।