একজন মানুষ হয়ে অন্য আরেকজন মানুষের ক্ষতি করা! এরকম অন্যায়ের বিচার কেনো হয়না? আচ্ছা মানুষ হিসাবে আমাদের কতটুক দায়বোধ, মানুষত্ব, দায়িত্ব-কর্তব্য আছে? মানুষ হয়ে নিজের ছাড়া অন্যের জন্য আমরা কতটুক দায়িত্ব পালন করি? মানুষ হিসাবে আমরা মানুষের জন্য কতটুক উপকারে আসি?
আচ্ছা একজন সৃষ্ট্রিকে শরীরের গঠন দেখলেই কি আমরা তাকে ‘মানুষ’ হিসেবে উপাধি দিতে পারি? তাহলে কেনো দেই? আমরা মানুষকে দুই ভাবে ভাগ করতে পারিনা? ১) যারা অমানুষ তাদের উপাধি হবে হিংস্র পশু ২) যারা ভালো তারাই শুধু মানুষ হিসাবে উপাধি পাবে। এরকমটা কি হতে পারে না? কেনো পারে না?
এই পৃথিবীতে কেউ কি আছে যে, মানুষের দুটি ভাগ করবে? এই পৃথিবীতে কেউ কি আছে, যারা খারাপ মানুষদের সমাজ থেকে আলাদা করে দিবে? এই পৃথিবীতে কেউ কি আছে, খারাপ মানুষদের ঘৃর্ণার পাত্র হিসেবে একঘরে করে রাখবে? কেউ কি আছে?
উপরের কথা গুলো কেনো বললাম আমি? আমার কি হয়েছে? বিশ্বাস করুন আমি পাগল হয়ে গেছি, আমার মন ঘৃর্ণায় ভরে গেছে, আমি দিশেহারা হয়ে গেছি। আমি কি করবে আমি ভেবে পাচ্ছিনা। এই সমাজ আমাকে পাগল বানিয়ে দিয়েছে, আমাকে দিশেহারা করে দিয়েছে, আমার মন ঘৃর্ণায় ভরিয়ে দিয়েছে। বিশ্বাস করুন এই পৃথিবীতে যদি আমি এমন একটা উপায় খুজে পেতাম যেখানে আমি আমার পরিবার-পরিজনদের নিয়ে চলে যেতে পারবো তাহলে সেখানেই চলে যেতাম।
তাহলে উপরের কথাগুলোর ব্যাখ্যা শুনুন-
আমি আমার পরিবার,পরিজন, সংসার জীবনে বেশ সুখি। বলতে পারেন পৃথিবীর শেষ্ট্র সুখি মানুষ আমি আর আমার পরিবার। আমি আমার পরিবারের মানুষগুলোকে চিনি জন্মের পর থেকেই। কিন্তু আজও পর্যন্ত অন্যায় কাকে বলে, অশান্তি কাকে বলে তা খুজে পাইনি। এমনকি আমর পূর্বপুরুষদেরও না। যদি থাকতো তাহলে আসেপাশের মানুষই বলে দিতে আর আমি সেটা জানতে পারতাম। কারণ সত্যিটা কখনো লুকিয়ে থাকে না। তাই আমি ঘরে শান্তি পেলেও বাহিরের জগতে আমার মন অশান্তিতে ভরা, কিন্তু কেনো? কারণ সমাজ আমাকে এই অশান্তি থেকে মুক্তি দিতে পারে না, পারবে না, আর কোনদিন সেটা সম্ভবও হবে না।
পড়া শেষে আমি একটা জব করি। জবটা সরকারি বড় একটি প্রতিষ্ঠানে নাম প্রকাশ করতে চাই না। কিন্তু আমর জবটা সরকারি না কারণ আমি গ্রাজুয়েশন শেষ না করার আগেই আমি জবটা পেয়েছি। জবের পজিশনটা ভালোই ছিলো- ‘কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইন’ হিসেবে। জবটা অনেকদিন ধরে করি, পড়াশুনার পাশাপশি।
বলে রাখা ভালো- অনেকেই হয়তো বলবে পড়াশুনা আবার জবও! তাহলে মনে হয় ফ্যামিলি গরিব! হ্যা আমার ফ্যামিলি গরিব মধ্যবিত্ত। প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ানোর ক্ষমতা আমার বাবার দুর্নীতি যুক্ত, ঘুষের টাকা নেই যে আমি হাই-হিল ভাবে পড়াশুনা করবো, ঢাকার শহর ফ্ল্যাটে থাকবে আর উড়ে উড়ে চলবো। তাই আমার ব্যাকগ্রাউন্ট খুবই সাদাসিদে। নিজেকে গুটিয়ে চলতে খুব ভালোবাসি, নিজেকে সাহসিক হিসেবে পরিচয় দিতেও ভালোবাসি, নিজেকে সাধামাটা রাখতেও পছন্দ করি, নিজের উপর্জনায় খেতে, চলতে পছন্দ করি, অন্যের উপর নির্ভর করতে একেবারেই পছন্দ করিনা। এবং অন্যেকেও অন্যের উপর নির্ভরশীল দেখতে পছন্দ করি না।
কারণ ছোটবেলা থেকেই আমার একটা ইচ্ছা ছিলো যে আমি পড়াশুনা করবো, অনেক বড় হবো, পাশাপাশি জব ও করবো। সেই আশাটি সৃষ্ট্রিকর্তা পুরণ করে দিয়েছেন। ১১ বছর বয়সে মাকে কথা দিয়েছিলাম- ‘মা আমি তোমাকে অনেক বড় ভালো একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে তারপর টাকা দিবো” সেই দিনের সেই কথাটি সৃষ্ট্রিকর্তা কবুল করেছেন নিজ হাতে আমার ভাগ্যে লিখে দিয়েছেন। তাই ১৯ বছর বয়সেই আমি আমার টার্গেটে চলে আসতে পেরেছি। ১৯ বছর বয়সে আমি চাকিরি পেয়েছি, তারপর ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। এখন ভার্সিটি শেষ পর্যায়ে চলে আসছে।
কিন্তু আমার সাথে যে মানুষগুলোরা অন্যায় করছে তার প্রতিদান কে দিবে? শুধু মাত্র নিজেদের ভালোর জন্য, নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্যের পেটে লাথি মেরে, অন্যের আহার কেড়ে নিয়ে ভালো থাকতে পারবে তো? একজন মানুষ নিজের প্রোমেশনন পাওয়ার জন্য, নিজের পরিচিত মানুষ আমার স্থানে আনার জন্য- আমার এবং আমার সাথের তিন জন ব্যক্তির চাকরিটা খেয়ে ফেলবে। এটা কেমন নিয়ম বলতে পারবেন?
কেনো মানুষ এতো খারাপ হয় বলুন না? আমার সাথে দুই বার একমনটা হয়েছে আমার স্থানে তাদের পরিচিতজনদের চাকরি দিয়ে আমাকে বাদ দিয়ে দিবে। কারণ আমার মামা নেই, চাচা নেই, খালু নেই। আমি একা তাই আমার সাথে এতো বড় অন্যায়, আমার আহার কেড়ে নেওয়া তাদের কাছে কিচ্ছু না।
এটাই যদি হয় তাহলে এদের বিচার এই সামাজে কেনো হয় না? বলুন না। এদের এতটাই ক্ষমতা যে তারাই দেশের রাজা আমরা কিছু না। তারা ভিতরে হিংস্রটা লুকিয়ে মানুষের মুখোশ পরে থাকে। আমার সবার কাছ থেকে সম্মান ভিক্ষা চায়। অন্যেরা তো সম্মান করেই না তাই সম্মান হাত পেতে পেতে ভিক্ষা নেয়। এরকম সবাই হয় কেনো বলতে পারেন?
এটাতো সামান্য একটা বাস্তব ঘটনা। এরকম হাজার হাজার অন্যায় অবিচার করে যাচ্ছে, করছে এদের বিচার কেনো হয় না বলুন না। কেনো এদের এমন শাস্তি দিচ্ছে না যেটা দেখে আর কেউ এমন অন্যায় করবে না। আমি খুব নিরুপায়, আমার চাকরি টা চলে গেলে কি করবো, এই আজব শহরে থাকা, খাওয়া, বাস করা, পরিধান করা, পড়াশুনা করা হবে তো? আমার এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কার কাছে পাবো।
এই আজিব শহরে যে এতো এতো খারাপ মানুষ লুকিয়ে থাকে তাদের কেউ খুজেও বের করে না, দেখেও দেখেনা, বলতে যেয়েও বলেনা। তাই আমার মনটা ঘৃর্ণায় জর্জরিত হয়ে গেছে। সত্যিটা বললেও মানুষ নানা কথা শুনায়, সত্যিটা বলতে গেলে তখন সমাজের কীট হয়ে যায়। আর স্বার্থলোভি মানুষগুলো সমাজে ভালো থাকে, সুখে থাকে। হায়রে স্বার্থপর মানুষ। পৃথিবীতে আর কতদিন রাজত্ব করবি তোরা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:০০