দেশ এখন গোল্লায় চলে গেছে। তাই দেশ নিয়ে এখন আপাতত কিছু ভাবতে মন চায় না। ভাবতে গেলে মনে হয় যেনে বুকের মধ্যে একটা করে হাতুড়ির দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে ইচ্ছে জাগে, শূণ্যে ভেসে চিৎকার করে বলি। শান্তি চাই, দেশে শান্তি ফিরিয়ে দেও, বাঁচতে চাই, বাঁচতে দেও মানুষদের, শান্তি চাই, শান্তি চাই, বাঁচতে চাই, বাঁচতে চাই। বুকটা বিষণ ভারি হয়ে আছে। কাঁদতে পারছি না। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। এদেশের মানুষের এমন করুণ অবস্থা দেখে।
ঘুম থেকে উঠতে মন চাইছিলো না, ঘুম ঘুম চোখে ভাবতে লাগলাম “যদি সকালের মিষ্টি সূর্য্যটা আর কখনো না উঠতো ।” তাহলে মানুষের এতো অপকর্ম শুনতে হতো না, গুনতে হতো না। রাতের ঘুমটাই যেনো পৃথিবীর সব শান্তি দিয়ে ভারিয়ে দেয় সৃষ্ট্রিকর্তা। তখন আর কাউকে দেখতে হয় না, কারো মুখেল প্রতিচ্ছবিও না। কারণ মানুষের মুখের প্রতিচ্ছবি দেখলেই মনে হয়, এ যেনো হায়নার দল।
প্রথম আলোর অনলাইন পত্রিকা খুলতেই চোখে পড়লো “শিশুটিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মেসে নিয়ে ধর্ষণ” বিস্তারিত পড়লাম না শুধু নির্বাক হলাম। নিউজটি ক্লোজ করে দিলাম।
এদেশের মানুষ বড়ই নিষ্ঠুর, কেউ কারো না, কেউ কারো কথা ভাবে না, কেউ কাউকে সামান্য একটু সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দেয় না। যার আছে ভূড়ি ভূড়ি সেই চায় আরো বেশি। অনেক পরিচিত, মানুষও ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে থাকে। কিন্তু সময়ের সাপেক্ষে তার মুখ উন্মুচন হয়। তখন বিশ্বাস করতে বিষণ কষ্ট হয়। তখন মনে হয় যেনো আমি হয়তো কোন ভিনগ্রহে আছে। মানুষ কি করে এতোটা অমানুষ হতে পারে।
মনের অনেকগুলো দুঃখ পুষিয়ে রেখেছি যা কাউকেই বলতে পারি না। বাবা মাকে বললে তাঁরা বিষণ কষ্ট পাবে, ছোট ভাই-বোনকে বললে ওরা কষ্ট পাবে। পাশে থাকা মানুষটিকে বলে কিছুটা ভার মুক্ত হই। তারপরও তাকে সব কিছু বলি না ইচ্ছে করেই। পাশের মানুষটিকে বললেই কষ্টগুলো বেরিয়ে যেতো। কিন্তু আমার কণ্ঠসরই বের হয় না। আমি যেনো নির্বাক হয়ে গেছি। আমার গলা কেউ যেনো চেপে ধরেছে। তাই কষ্টগুলো বের হতে পারছে না। কখন যেনো আমার মানসিক সমস্যা হতে পারে, বুঝতে পারছি না কি করবো।
দেশ, মানুষের আচারন, মানুষের বিবেক, দেখে সব মিলিয়ে আমি নিস্তদ্ধ, মনে হচ্ছে যেনো বাঁকশক্তি হারিয়ে ফেলিছি। আমি এমন একটি দেশে বাস করি, যে দেশ আমাকে আনন্দ, ভালোবাসা, সম্মান, দিতে পারে না, বেচে থাকার আশ্বাস দিতে পারে না, খেটে খাওয়া ব্যবস্থা করে দিতে পারে না, যে দেশ আমায় অধিকার দিতে পারে না, যে দেশ আমায় স্বাধিনতা দিতে পারে না। সে দেশে বাস করতে ভালো লাগে না। এর থেকে ভিনদেশে পরগাছা হয়ে থাকা ভালো। তারা আর কিছু না দিতে পারলেও মুখে খাবারটা তো দিতে পারবে।
আমি এমন একটা দেশে বাস করি, যে দেশ- আমার হাসি, আনন্দ, সুখ, সম্মান, ভালোবাসা, বিশ্বাস, খদ্য, বস্ত্য, শিক্ষা, বাসস্থান, স্বাধীনতা সব কিছু কেড়ে নেয়। এটা শুধু আমার বেলায়ই নয়, সারা বাংলার মানুষের বেলায় হয়। এটা তো আমি চাই না, এমনটা তো আমি দেখতে চাই না, এমনটা তো হওয়ার কথা নয়, তাহলে- কেনো? কেনো? কেনো হচ্ছে এমনটা।
আমি কার দোষ দিবো, আমি কাকে দোষারোপ করবো, বলুন না। আমার হাহাকার, আমার কষ্ট, আমার দুঃখ, আমার মনের যন্ত্রণা এসবের জন্য কাকে দায়ী করবো। আমার ভাগ্য নাকি এদেশর অকর্মা মানুষদের।
আমারা কি বেচে থাকার জন্য পারি না একটু দেশকে ভালোভাবে চালাতে, পারি না আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাস করতে। পারিনা আমরা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে, পারি না আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে। পারিনা প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার বঞ্চিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে। পারি না? কেনো পারি না?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:০৯