পৃথিবীতে সম্মানের যোগ্য সেই ব্যক্তিরাই হয় যারা অন্যের সম্মান করতে যানে। তারা কখনোই হয়না, যারা অন্যের অসসম্মান করে নিজেদের সম্মান অর্জন করে, তারা কখনো সম্মানীত ব্যক্তি হতে পারে না। তারা করো না কারো চোখে, কোননা কোন কালে অযোগ্য এবং অসম্মানের পত্র হয়ে থাকে।
পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা পৃথিবীতে অনেক সম্মান অর্জন করেছেন। তাদের নাম, জস, খ্যাত আজীবন মানুষ মুখে মুখে উচ্চরিত হয়। তাদের শিক্ষায় মানুষ শিক্ষিত হয়। কিন্তু ঠিক তারাই আবার পৃথিবীতে এমন কিছু কথা বলে গেছেন যা তাদের ভবিষৎ জীবনের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। তাদের পরবর্তী প্রজন্মদের চোখে যে তারা ঘৃর্ণা সৃষ্টি করে গেছেন সেটা হয়তো তারা বুজতে পারেননি। আমি আজ তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনের নাম উল্লেখ্য করবো। তারা হলেন- বীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেপোলিয়ান, অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, শংকর, মেনানডার, সমরেশ মজুমদার। আমরা জানি এরা খুবই বিখ্যাত ব্যক্তি, কিন্তু এরা যে সমাজে উক্তি বলে গেছেন সেটা তাদের প্রতি ঘৃর্ণা ছাড়া সম্মানের প্রশ্নই আসে না। তাদের নিয়ে আমরা মাতামাতি করি ঠিকই, কিন্তু তারা যে আমাদের সমাজে নারীদের নিয়ে নোংরা উক্তি উপহার দিয়ে গেছেন সেই সব কি ইতিহাস থেকে কেউ মুছে ফেলতে পারবেন, পারবেন না।
এই সব গুণি লোকেরা মেয়েদের নিয়া যেসব উক্তি বলিয়া গিয়াছেন সেসব উক্তিগুলো নিচে দেয়া হইলো। এরপরও কি করে এদের মতো মানুষদের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা মন থেকে দেখাবো সেটার উক্তি আমার কাছে নেই। আজ হয়তো মেয়েরা বোঝে কম তাই হয়তো এদের প্রতি এতো শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা উতরিয়ে পরে তাদের জন্য। তাই ভালোবাসাপ্রতী মানুষগুলোর কু-উক্তিগলো দেখে নিতে পারেন। আপনরা নিজের চোখেই।
১। মেয়ের সম্মান মেয়েদের কাছেই সবচেয়ে কম, নারী দাসী বটে, কিন্তু সেই সঙ্গে নারী রানীও বটে। ... রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২। পুরুষেরা মেয়েদের খেলার সামগ্রী এবং মেয়েরা শয়তানের খেলার সামগ্রী। মেয়েরা সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র বৈ কিছু নয় ...নেপোলিয়ান
৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের চুইংগামের মতো চাবাতে ইচ্ছে করে। ... অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ
৪। কম বয়েসী মেয়ে হলো রসগোল্লার মতো, যেখানে রাখবে সেখানেই পিঁপড়ে ধরবে। ...শংকর
৫। পৃথিবীতে বা সমুদ্রে যতো হিংস্র প্রাণী আছে, সবচেয়ে বৃহত্তম প্রাণী হল মেয়েরা। ...মেনানডার
৬। মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেললেই তো পার, ফ্রিতেই যদি গাভীর দুধ মেলে তাহলে কোন মূর্খ টাকা খরচা করে ঘরে গাই পোষে? ...সমরেশ মজুমদার
কেউ হয়তো বলবেন, এরা খারাপের থেকে ভালোর দিকটা বেশিই দিয়ে গেছেন জাতিকে। কিন্তু আমি বলবো- এক বালতি গাইয়ের দুধের মধ্যে এক ফোটা লেবুর রস হলেই যথেষ্ট।
ঠিক আমার মতো হয়তো একদিন ঠিক এই ভাবে ভবিষতে, কোন কালে, কোন যুগে বা কোন একসময়, এই আজকের বাংলাদেশের মানুষদের প্রতি ঘৃর্ণায় চোখ ফিরিয়ে নিবে আগামী প্রজন্মরা। ইতিহাসে সাক্ষী হয়ে থাকবে আজকের স্বাধীন বাংলা, পরাধীন বাংলাদেশ হয়ে থাকাটা।
আমিও একদিন গল্প করবো আগামী প্রজন্মের নিকট। গল্পটা হবে এই রকম- আমাদের একটা দেশ ছিল, নাম ছিল বাংলাদেশ, একদিন এদেশে স্বাধীন করেছেন ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়। তারা স্বাধীনাত ছিনিয়ে এনেছেন ঠিকিই কিন্তু তা রক্ষা করতে পারেনি কেউ, তারপর থেকেই দেশের, আমি প্রতিদিন পেপারে শুধু ধর্ষণ, ধর্ষণ, খুন, গুম, হত্যা, অত্যাচার-নির্যাতন, অপমান, অপদস্ত, দুনীর্তী দেখেছি কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি, দেশে আইন ছিলো না, দেশে সঠিক বিচার ছিলনা, সেই দেশেরই মেয়ে আমি।ওরা তখন আমাকে প্রশ্ন করবে তারা কারা?, যারা এই সব কিছুর প্রশ্রয় দিয়েছে?-সেই প্রশ্নের জবাবটা তখন কি হবে? কি হবে! সেটা হয়তো সবাই বুঝে গেছেন। আর সবার কাছেও সেটার উত্তর স্বর্ণের অক্ষরে অক্ষরিত হয়ে থাকবে জনম জনম।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:১৪