করোনা একটি মহামারি রোগঃ
করোনা বা কেভিডি-১৯ ভাইরাসটি ভয়াবহ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এশিয়ার এবং ইউরোপিয় দেশ গুলোতে দ্রুত ছড়িযে পড়ছে। তাই সাধারণ সতর্কতা বজায় রেখে আপিনি বা আমরা এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সকলের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ভাইরাস থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে নিজেদের এবং অন্যদের সর্তক থাকা অতি জরুরি।
কিছুদিন আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে ইবোলা ভাইরাস সারাবিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৩০,০০০ হাজার মানুষের প্রাণ ছিনিয়ে নিয়েছে প্রায় ১১,০০০ মানুষের। কিন্তু এই ইবোলাকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি কিন্তু সেই ইবোলাই হলো সারা বিশ্বব্যাপী রেড এলার্ট, এই ভাইরাস ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ হয়ে মরণঘাতিতে। আর সেই ভয়বাহ নিয়ে এসেছে এক বছরের মধ্যে ২০২০ সালে করোনা বা কেভিডি-১৯।
করোনা ভাইরাসের ইতিহাস-
করোনা বা কেডিভি-১৯ অনেকে মনে করেন এই ভাইরাসটি নতুন এসেছে পৃথিবীতে। আসলে এটি নতুন ভাইরাস নয় এই ভাইরাস ১৯৬০ সালে প্রথম এসেছে সাপ থেকে। করোনা ভাইরাস একটি SARS গ্রুপের। এটি সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে মানুষের মধ্যে ধরা পরে যা HUMAN CORNAVIRUS 229E নামে পরিচিত। এরপর ২০০৪, ২০০৫, এবং ২০১২ সালে জেনেরিক মোডিফিকেশন লোপ পায়। করোনা সর্বশেষ ২০১৯ সালে WHO নোভেল করোন ভাইরাস আবিষ্কার করেন যা n-COV নামে পরিচিত।
সবথেকে ভয়ংকর বিষয় হলো, করোনা মানুষের সংস্পর্শে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। করোনা সর্বপ্রথম চীনের হুবাই প্রদেশের উহান শহরে সী ফুড মার্কেট ধরা পড়ে ২০১৯ সালে ৩১ ডিসেম্বরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির প্রাতিষ্ঠানিক নামকরণ করে ”২০১৯-এনসিওডি”। উহান শহরে সামুদ্রিক একটি খাবারের কথা বলা হয়েছে। এই শহরের যেসব মানুষ বাজারে গিয়েছে সেই সব সব ব্যক্তিদের মধ্য হতে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কারণ ঐ বাজারে সকল ধরনের অবৈধ বন্যপ্রাণী বেচাকেনা হতো, এবং সামুদ্রিক প্রাণী যেমন বেলুগা জাতীয় তিমি করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে। উহানের ঐ বাজারে মুরগি, বাদুড়, খরগোশ এবং সাপও বিক্রি হতো। তাই এই গোত্রীয় প্রানীবাহিত কারণে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে।
করোনা বা কেভিডি-১৯ ভাইরাসের লক্ষণ-
এই ভাইরাসের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলো হলো- প্রথমতো
জ্বর
অবসাদ
শুষ্ক কাশি
বমি হওয়া
নিউমোনিয়া
শ্বাসকষ্ট
গলা ব্যাথা
অঙ্গ বিকল হওয়া
কিডনি ফেইলিউর এবং
সবশেষে মৃত্যু।
বিদ্রুপ: কোন কোন ক্ষেত্রে রোগীর উপরোক্ত সকল উপসর্গ দেখা গেলেও জ্বর থাকেনা
এরপর ২০২০ সালে চীনের সাথে সাথে ১২২টিরও বেশি দেশে করোনা বা কেভিডি-১৯ আক্রান্ত হয় লক্ষাধিক মানুষ। সারা বিশ্বের প্রায় ১,৩৫,১৬৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০০০ জনের বেশি।
কতটা সর্তকতা থাকতে হবে আমাদেরঃ
করোনা একটি ভয়ংকর ছোয়াছে জনিত ভাইরাস রোগ। এই ছোয়াছে ভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় নিজেকে সেফ রাখা, নিজে এবং অন্যকে সর্তক করে রাখা। করোনা বিশ্বে এখন একটি মহামারি রুপ ধারণ করেছে। এটি মানুষের অতি সহজেই প্রাণ কেড়ে নেয়। তবে বয়স্ক এবং অসুস্থু রোগীদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস মারাত্মক আকার ধারণ করে। ভাইরাসটি একবার কারো শরীরের প্রবেশ করলে সেই ব্যক্তির শরীর থেকে আরো কয়েকজন ব্যক্তি আক্রান্ত হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আ্ক্রান্ত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশি উপর প্রভাব বেশি পড়বে।
যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণ গুলোর কোনটি দেখা যায় তবে তাকে দ্রুত আলাদা নিজস্ব কোন কোয়ারেন্টিনে বা হাসপাতাল কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনভাবে জনসমাবেশ, অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ, যেতে না দিয়ে তাকে দ্রুত চিকিৎসাধীনে নিয়ে যেতে হবে।
আসা জাগাচ্ছে জাপান ও চীনঃ
জাপানি একটি প্রতিষ্ঠান ফুজিফিল্মের সহযোগী সংস্থা ইনফ্লুয়েঞ্জার ওষুধ দিয়ে “ফ্যাভিপিরাবির” ওষুধ উদ্ভাবন করেছেন। তারা উহান ও শেনজেনের ৩৪০ জন রোগীর শরীরে প্রয়োগ করে সাফল্য লাভ করেছেন। ১৭ মার্চ চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ঝাং জিনমিন এক কথা জানান। এছাড়াও ইতোমধ্যে আমেরিকা ও ব্রিটেনের দুটি বিশেষায়িত টিম এই রোগের প্রতিষেধকটি বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:০৫