বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারনা নিয়ে আমাদের দেশে মাঝে মাঝে কথা উঠলেও বিষয়টি এখনো এখানে ধারনার ভেতরই সীমাবদ্ধ। এটা বাস্তবতার মুখ দেখেছে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশের। এর একটি আছে মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের সেমেনিহ ( Semenyih)তে। এটি কোর কম্পিটেন্সিস সেনডিরিয়ান বেরহাডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। নাম রিসাইকেল এনার্জি লিমিটেড।
দীর্ঘ যাত্রা শেষে সেলাঙ্গরে অবস্থিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছাবার প্রথমে স্বাগত জানালেন এর সিইও।
এরপর বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন একজন প্রকৌশলী।
সবাই ছিলাম খুব মনোযোগী শ্রোতা
বিদ্যুৎ উৎপাদনের তরিকা
পার্শ্ববর্তী শহর থেকে আসে বর্জ্য। নগর কর্তৃপক্ষের ময়লাবাহী লরীগুলো ময়লা নামিয়ে দেবার পর বর্জ্য থেকে পাওয়া পানি পরিশোধন করে সেই পানি দিয়ে লরী পরিষ্কার করে দেয়া হয়। পাশাপাশি দেখুন সেই দৃশ্য।
বর্জ্য পাবার পর প্রথমে শুরু হয় বাছাই। প্লাস্টিকের বোতল আর লোহা/স্টীলের জিনিস আলাদা করে ফেলা হয়। আলাদা করা পাস্টিক বোতল আর লোহার জিনিসগুলো বিক্রি করে দেয়া হয় রিসাইকেলিং করার জন্য এ সম্পর্কিত অন্য প্লান্টে।
প্লাস্টিকের বোতল
টিনের কৌটারা
পলিথিনের ব্যাগগুলোকে আলাদা করে প্রসেস করে প্লাস্টিকের গুটি বানিয়ে বিক্রি করা হয় প্লাস্টিক তৈরীর কারখানায়।
সাথে থাকা ময়লা পানিকে পরিশোধন করা হয়। ট্রাকসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যবহার করা হয় সে পানি। পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করা হয না।
এর পর যে সব কঠিন বর্জ্য (solid waste) বাকী থাকে সেগুলোকে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে উৎপাদন করা হয় বিদ্যুৎ। বর্জ্যের পরিমানের ওপর নির্ভর করে উৎপাদনের পরিমান। এখানে সাধারণত ৪ থেকে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। (ধারণা করা হচ্ছে ঢাকার বর্জ্য দিয়ে ৩০/৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু ঢাকা সিটি করপোরেশন নাকি বিদ্যুতের জন্য বর্জ্য দিতে রাজী হচ্ছে না। তারা এইসব বর্জ্য জমি ভরাটের কাজে ব্যবহারে বেশী আগ্রহী)
বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই প্রক্রিয়া পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি বলে গণ্য হয়। কারণ এই জিনিস যে না পোড়ালে কী সুগন্ধীময় (!?) হয় তার নমুনা দেখুন-
বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সেই দুর্গন্ধ থেকে প্রকৃতিকে বাঁচানো হয়। এই সেই পরিবেশ-বান্ধব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো ভবন-
এটা নবায়ন যোগ্য জ্বালানী ( Renewable Energy)-এর অন্তর্গত। তেল গ্রাসের মতো ফুরাবার ভয় নেই; বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, চীনের মতো জনবহুল দেশে।
(চলবে)