কে এল টাওয়ার
মিনারা কুয়ালা লামপুর বা কুয়ালা লামপুর টাওয়ার হচ্ছে ৪২১ মিটার উঁচু কমিউনিকেশন টাওয়ার। এটা বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম টাওয়ার। শহরের কেন্দ্রস্থলে বুকিট নানাস (আনারস টিলা/পাহাড়)-এর মাথায় গড়ে তোলা হয়েছে। মাহাথির মোহাম্মদের নির্দেশেই এটা তৈরি করা হয়েছে এটা।
এই টাওয়ারের ২৭৬ মিটার উচ্চতায় আছে রিভলভিং রেস্তোরাঁ। পাখির চোখে কুয়ালা লামপুরকে দেখার জন্য এটাই সব চেয়ে ভালো জায়গা। টুইন টাওয়ারের স্কাই ব্রীজে উঠলেও প্রায় সব দেখা যায়। তবে ভবনের আড়ালে থেকে যায় কিছু।
আমাদেরকে আয়োজকরা নেবার আগেই আমি সদ্যপরিচিত স্থানীয় এক কনসালটেন্ট ভদ্রলোকের সাথে রাত ৮টায় উঠলাম কেএল টাওয়ারে। তবে দেরীতে যাওয়ায় খাবারের জন্য টিকিট পেলাম না। যাই হোক, বিশাল দলে আমাদের তোলা হলো লিফটে। প্রায় ঝড়ের বেগে উঠে গেলো লিফট। প্রতি ৫০ মিটার পর পর উচ্চতা জানান দিচ্ছিলো। আমার মনে হয়েছিলো লিফটের উর্ধ্বমুখি টানে রক্তপ্রবাহে ভিন্ন চাপ বোধ করছিলাম।
ওপরে ওঠার পর হেডফোনসহ একটা এমপিথ্রি জাতীয় জিনিস দিলো। তাতে ধারাবর্ণনাসহ কুয়ালা লামপুরের সচিত্র বিবরণ আছে। রাতে প্রকৃত দৃশ্য চোখে না পড়লেও লাইটের কারণে শহরের প্রকৃত ব্যাপ্তি ভালোই বোঝা যাচ্ছিলো। রাস্তা ভরে পিঁপড়ারমতো ছুটে চলেছে হাজার হাজার গাড়ী।
পরে আমি আবার দলের অন্য সবার সাথে দিনের বেলায়ও উঠেছিলাম কেএল টাওয়ারে। দিনের আলোয় আবার অবলোকন করলাম কুয়ালা লামপুরের বিশালতা আর সবুজের সাথে নগরের মেলবন্ধন।
সেদিন নীচে এসে একটা ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁয় রাতের খাবার সারলাম। দু'ভাবে খাওয়া যায়। আইটেম পছন্দ করে নিলে আইটেমওয়ারী বিল। আর না হয় বুফে সিস্টেমে খাওয়া যায়। ত্রিশ রিঙ্গিত জনপ্রতি। দক্ষিণ ভারতীয় খাবার বলে সব আইটেম আমার ভালো লাগেনি।
ওপরে ওঠার জন্য মালয়ীদের জন্য লাগে ২০ রিঙ্গিত আর বিদেশীদের জন্য ৩৮ রিঙ্গিত। নাস্তা বা খাবারসহ প্যাকেজ ৮০ রিঙ্গিত+ আপনার বাড়তি পছন্দের জন্য আলাদা বিল।
এই টাওয়ারের সাথে আমাকে বাড়তি আকর্ষণ করেছে বুকিট নানাস ফরেস্ট রিজার্ভ। মহানগরের কেন্দ্রস্থলে একটা ছোট বন। কল্পনা করুন মতিঝিল বা দিলখুশায় একটা রিজার্ভ ফরেস্ট। এই ফরেস্টে আছে মালয়েশিয়ার সব চেয়ে বড় সাইজের কিছু রেইনট্রি। পাহাড়ের চূড়ায় টাওয়ার। সেখানে যাবার রাস্তা বাদে বাকী পাহাড়জুড়ে রয়েছে বন। সত্যিই অন্যরকম।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৫৫