দশ দিনের সফরে মালয়েশিয়া ঘুরে এলাম। মালয়েশিয়ার অর্থনীতি এখন নিম্নমুখী। মুদ্রামান দিন দিন পড়ে যাচ্ছে। দূর্নীতি উপরের দিকে খুব বেশী হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী "ম্যাডাম ১০% " নামে ইতোমধ্যে (কু)খ্যাত হয়েছেন। এগুলো সব আমাদের চেনা ছবি। তার মাঝেও অল্প ক'দিনের সফরে যা ভাল লেগেছেঃ
সে দেশের কৃষি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে বাংলাদেশীদের অবদান, মানুষের ভদ্রতা, মালয়েশীয় মেয়েদের হিজাবী হওয়া সত্তেও স্মার্টনেস, দর কষাকষি ছাড়াই ন্যায্য ভাড়ায় ট্যক্সি পাওয়া, চকোলেটসহ অন্যান্য সবকিছুর সুলভমূল্য, ঘড়ির কাঁটা ধরে মালিন্দো এয়ারের বোয়িং এর উড্ডয়ন ও অবতরণ ইত্যাদি।
তবে, সব ভালো যার শেষ ভালো তার। দশ দিনের সফরের আনন্দটা কিছুটা হলেও ম্লান হয়ে গেলো যখন নিজ দেশে ফিরে এসে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে লাগেজ নিতে এসে দেখি কনভেয়র বেল্টটা তখনো নিথর। সবার দৃষ্টি ঐ মৃত বাহকটার প্রতি নিবদ্ধ, কখন সে আবার জেগে উঠবে। পঞ্চাশটা মিনিটের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যখন ওটা গা ঝারা দিয়ে নড়া শুরু করলো, ক্লান্ত যাত্রীদের চোখে তখন আনন্দের অভিব্যক্তি। লাগেজ খুঁজে পেতে আরও পনেরো মিনিট ব্যয় হলো।
কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে চেক ইন এর সময় ঝামেলা মনে করে শেষ মুহূর্তে হাতের ব্রীফকেইসটা থেকে বেঁচে যাওয়া কিছু ডলার আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পকেটে ঢুকিয়ে নিয়ে ওটাকে লাগেজে দিয়ে দিয়েছিলাম। তাড়াহুড়োর মধ্যে কম্বিনেশন লকটার কম্বিনেশন চেঞ্জ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। সহযাত্রী বন্ধু বলেছিলো, ঢাকায় ঐ ছোট জিনিষটা ফেরৎ নাও পেতে পারি। বন্ধুকে মিথ্যা প্রমাণিত করে ওটাকেও খুঁজে পেলাম। তবে একদিকের ক্লিপ খোলা। খুলে দেখি ভেতরের জিনিষপত্র লন্ডভন্ড, তবে কোন কিছু খোয়া যায় নি। চোর মহাশয়ের পছন্দসই কোন জিনিষ ভেতরে হয়তোবা ছিলনা, এই বলেই।
ঢাকা বিমান বন্দরের ট্রলীগুলোর মত এতটা জং ধরা ও জরাজীর্ণ ট্রলী বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না। এমনকি নেপালেও না। ফেরার সময় তো তবু ট্রলী পাওয়া যায়, যাবার সময় এগুলো সিন্ডিকেটবদ্ধ শ্রমিকদের হাতে বন্দী থাকে। নগদ নারায়ন ছাড়া এদের সন্ধান পাওয়া যায় না। এগুলো দেখার মত কাজীর গরু নিশ্চয়ই খাতা কলমে আছে, কিন্তু গোয়ালে নেই!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৮