বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান, মিসর,তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশকে এর বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে। পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী এই বিচারের বিরোধীতা করে সেখানেবিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারত -- এই তিন দেশেই জামায়াতের আধ্যাত্মিক নেতা ভারতের মওলানা আবুল আলা মওদুদী। ফলেএই তিন দেশের জামায়াতের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি সবার জানা।
এর বাইরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তুরস্কের একে পার্টির সাথে সম্পর্কের কথাওস্বীকার করেন।
পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক মইদুল ইসলাম জামায়াতসহ ইসলামপন্থী দলগুলোর ওপর গবেষণা করেছেন। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই সক্রিয় ছিল।
“মিশরের ব্রাদারহুড, তুরস্কের একেপি এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জামায়াত স্ব স্ব দেশে সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় গিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। মতাদর্শের এমন মিল থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক।”
ইরানের সাথে সম্পর্ক এগোয়নি
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সিনিয়র সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবির বলেছেন, জামায়াত একসময় ইরানের সাথেও সম্পর্ক তৈরি করেছিল। কিন্তু ইরানে শিয়াদের প্রাধান্য থাকায় জামায়াত সেই সম্পর্ক থেকে সরে এসেছে।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে জামায়াতের সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে তারা সৌদি আরবের সহযোগিতা বেশি পেয়েছে। তবে এসব সম্পর্কের ক্ষেত্রে মতাদর্শই একমাত্র ভিত্তি নয় বলে তার ধারণা।
“১৯৭১ সালে জামায়াত সক্রিয়ভাবে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছিল যেটা মুসলিম লীগও অতটা করতে পারেনি। সেকারণে পাকিস্তান এখানকার জামায়াতকে সবসময় ওন করে।”
আমানউল্লাহ কবির মনে করেন, সম্পর্কের কারণে পাকিস্তান সরকার এবং পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে যে কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।
আমানউল্লাহ কবির মনে করেন, এই সম্পর্ক জামায়াতের জন্য বুমেরাং হয়েছে, কারণ এরফলে বাংলাদেশের জামায়াত ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে যে সহযোগিতা করেছিল, সেটাই প্রমাণ হয়েছে।