আদিযুগে সভ্যতা বলতে কিছু ছিল না। সেই সমাজব্যবস্থায় অন্ধকারে ছিল মানুষ। কিন্তু যুগের সাথে পাল্টেছে সবকিছু। পাল্টায়নি সেখানের সামাজিক ব্যবস্থাপনা যেখানে এখনো আদিযুগের সামাজিক ব্যবস্থাপনা বিদ্যমান।
রক্তের সম্পর্কের মধ্যেও চলে শারীরিক সম্পর্ক। মায়ের পেটের বোনের সঙ্গে বিয়ে হয় সেখানে, যেখানে খুড়তুতো, পিসতুতো, মাসতুতো, মামাতুতো এ রকম তুতো বোনকেই বিয়ে করেন যুবকরা। অবশ্য বিয়ের আগে এক বছর সংসার করতে হয়।
তারপর পছন্দ না হলে বোনকে ছেড়েও দেয়া যায়। এক বছর একসঙ্গে থাকার পর যদি সন্তানের জন্ম হয় তাহলেও বোনকে ছাড়া যায়। তবে নিয়মমাফিক ভাইকে করতে হয় প্রায়শ্চিত্ত।
এ আজব নিয়ম এখনো টিকে আছে টোটো নামে ভারতের এক জনজাতির মধ্যে। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোটো জনজাতি টোটো। তাদের মধ্যেই এ বিয়ের প্রাচীন নিয়ম আজো বিদ্যমান।
তবে টোটোদের জনসংখ্যা কমতে কমতে এখন তলানিতে। বর্তমানে টোটোদের জনসংখ্যা ১,৫৭৪। তার মধ্যে পুরুষ ৮১৯ জন ও মহিলা ৭৫৫ জন।
অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার মাদারিহাট ব্লকের টোটোপাড়ায় টোটো জনজাতির বাস। টোটোদের মধ্যে শিক্ষিতের হার কম। সে কারণেই নাকি তাদের মধ্যে প্রাচীন এ প্রথা এখনো চালু আছে। নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন মেয়েকেই বিয়ে করতে হয় যুবকদের।
কোনো টোটো যুবক রাতের অন্ধকারে তার আত্মীয় অর্থাৎ মামার মেয়ে বা পিসির মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে চলে আসেন নিজের ঘরে। এরপর মেয়েটির বাড়িতে খবর দেয়া হয়।
এক বছর মেয়েটির সঙ্গে ঘর করার পর যদি যুবকের মেয়েটিকে পছন্দ না হয় কিংবা এক বছর সংসার করার পর যদি মেয়েটির সন্তান হয় তাতেও মেয়েটিকে ছেড়ে দিতে পারবে ওই যুবক।
এরপর মেয়েটিকে ফের বাপের বাড়ি চলে যেতে হবে। আর যুবকটিকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় পশুবলি দিয়ে।
সম্প্রতি সুজন টোটো তার মামাতো বোন গোপী টোটোকে মামারবাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে চলে এসেছেন। একবছর সংসার করার পর গোপীকে বিয়ে করেন সুজন।
টোটো কল্যাণ সমিতির প্রধান গোকুল টোটো বলেন, ইদানিং ছবিটা বদলে গেছে।
যারা লেখাপড়া শিখছে তাদের অনেকেই এখন এ রীতি মানছে না। এখন ভিন জাতিতে বিয়ের প্রবণতা বাড়ছে।