আজন্ম লালিত স্বাধ ছিল মেঘনার তীর ঘেষা
পিতার বসত ভিটায় গিয়ে দাড়াই একবার,
ভোর ভোর সকালে কুয়াশা ঘেরা উঠোন কোনায়,
কামরাঙ্গা গাছের নীচে সদ্য লেপা মাটির চুলোতে
আমার জন্য পিঠে বানাতে বসবেন প্রিয়মুখ ফুফু ভানু।
পিড়ি পেতে বসে সেই ধোয়া ঊঠা পিঠে হাতে নিয়ে,
ফুঁ দিতে দিতে কান পেতে শুনবো
আমার বাবার গল্প ..অনাদরে বড় হওয়া
মাতৃ পিতৃহীন শিশু বাবার সেদিনের কথা।
খুব ইচ্ছে করে কাচারীঘরের পেছনে
মজা পুকুরের ভেঙ্গে যাওয়া ঘাটলায় বসি,
কচুরির দাম ঠেলে বের হওয়া কাকচক্ষু জলে
ছিপ ফেলে ধরি বাবার মত খলসে, পুটি
আর অচেনা সেই খুদে খুদে ডানকুনি মাছ।
ইচ্ছে হয় আদিগন্ত ফসলের মাঠে হেটে চলি আল ধরে
সুর্যাস্ত এর কাছে। মিশে যাই গোধুলীর ধুলো ভরা মেঘে।
আজন্ম জলের তৃষায় যে জন জল বিভ্রমে মরিচীকার মত
আমিও খুজ়ে খুজে ফিরি আমার শেকড়।
বড় স্বাধ ছিল থাকুক সবার মত
আমারও এক পিতৃপুরুষের ভিটে
যেখানে মিশে আছে সোঁদা মাটির গন্ধ
কিংবা বাবার মুখে শোনা এক অজানা সুবাস।
দুকুল ভাসিয়ে নেয়া মেঘনার জলে,
ভেসে গেছে সে সুবাস বহুকাল আগে।
কি এক সুতীব্র টান ফিরে ফিরে ডাকে।
ঘোলা জলে চোখ রেখে আজও খুজি তাকে,
কোথা সেই লাঙ্গল আর ভেঙ্গে পড়া হাল?
কোথায় মাটির দেয়াল তার শনে ছাওয়া চাল ।
কই সেই ভিটে ছিল জন্মজন্মান্তর ।
দিঘীর পাড় ঘেষে নিঝুম শুন্যতায়
বাশের কঞ্চি ঘেরা, অযতনে পরে থাকা
অদেখা আমার সেই দাদার কবর !
ছবিঃ নেট