স্নেহের রাসেল,
আমাদেরকে ছেরে যাচ্ছ তুই, ২ বছর তোকে দেখব না- যাবার কয়েকদিন আগ হতে এই ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে ছিলাম।আব্বা হঠাৎ মারা যাবার পর, তোকে ত পিতৃস্নেহ দিয়েই লালন করেছি।দেখেছি- কি ভাবে আস্তে আস্তে ছোট হতে বড় হয়ে গেলি তুই। মাঝে মাঝে মনে হত,তুই আমার ছোট ভাই না- আমারই সন্তান।
স্নেহ ও আদর নিস। কেমন আছ তুই ? গড়মের দেশের মানুষ হয়ে- বরফের মাঝে ভাল আছতো তুই ? চিন্তায় অস্হির থাকি আমরা, এই বুঝি ঠান্ডা লাগিয়ে ফেললি
কয়েকদিন আগে কথা বলেছি তোর সাথে। অনেক কথাই জমা হয়ে থাকে। বলা হয় না।সারাদিন বল্লেও শেষ হবে না।
বাসার ছোট্ট বাগানে ফুল ফুটেছে কিছু।বাহারি পাতাগুলো দেখতে ভালই লাগে এখন।কিন্তু খুব ভোরে পূজারী মেয়েরা ফুল চুরি করে নিয়ে যায় , আগের মতই
আব্বার লাগান নারকেল গাছ দুটোতে অনেক নারকেল হ্য়। খেয়ে শেষ করতে পারিনা। সবাইকে দেই , তারপর ও গাছ বোঝাই
সুপাড়ি গাছে আবার সুপাড়ি হয়েছে। গাছটা এত বড় হয়েছে যে ,ঐ সুপাড়ি গাছে এখন আর কেউ উঠতে সাহস পায়না। রাতের বাদুরের খাবার এখন ওসব।
আম গাছে এবার অনেক মুকুল হয়েছিল।কিন্তু প্রচন্ড গড়মে সব পুড়ে গিয়েছে প্রিয় খুবই কষ্ট পেয়েছে , এবার নিজেদের গাছের আম খেতে পারেনি বলে
তবে কাঠাল আর কলা গাছ আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে প্রিয় তো মহা খুসি।কাঠাল নাকি ও কাউকে খেতে দিবেনা,একা খাবে।
বাসার ক্রিসমাস ট্রিটাও বেশ বড় হয়েছে।এবছর নতুন মাটি দিয়েছি ওটার গোড়ায়।খুব খুসি আমরা
সুগন্ধা ধানসিড়ি নদী , তুই যেমন দেখেছিলি , এখনো তেমনিই আছে।প্রভাতে গায়ের বধুরা গোছল করে, সূর্য ডোবে ঠিক তেমনি। যেমনটা তুই দেখতি।
ধানসিড়ি নদীও তেমনি- পাগল করা রূপে।
গ্রামের বাড়ি যাবার ছোট্ট নদীটা আরো সুন্দর হয়েছে।
খেয়া পাড়াপাড় চলছে আগের মতই।
কিছুদিন আগে প্রিয় এসে বলল একটা বানরের কথা। বেবীদের দোকানের সামনে যে- হারমনিয়ামের দোকান,ওখানে এই বানরটা ছিল কয়েকদিন।এখন আর দেখিনা।
হেলালের বাসায় যাবার পর একদিন খুব বৃষ্টি।ওর গেটের বাইরে হঠাৎ এটা আসলো।হেলালের বউ বললো- ছাগল নাকি পানি ভয় পায়। ছবিটা হেলালের মেয়ের তোলা। ভাল আছে ওরা সবাই।
আমাদের সবগুলো ব্যবসা চলছে ভালই। নবগ্রামের ছোট্ট অফিসটা গাছের ছায়া ঘেরা থাকে সব সময়। চারদিকে লাগিয়েছি অনেক গাছ।সবুজে ঘিড়ে ফেলছে আমাদের এলাকা
এবার ঈদে সবাই এসেছিল স্বপ্নপুরে।খুব আনন্দ করেছি।শুধু ছিলিনা তুই।তোরও মন খারাপ ছিল, দেখেছি ওয়েব ক্যাম এ
কিন্তু প্রিয় যথারিতি আইসক্রীম কাউকে দেয় নাই।এতে অন্য পিচ্চিদের খুব মন খারাপ ছিল।আমি গোপনে ওদেরকে আইসক্রীম কিনে দিয়েছি পরে।
ঈদের জামায়াতে এবার উপস্হিতি ছিল কম।কারনটা বুঝতে পারিনি।
গতবার তুই যাবার দিন যে ফটো গুলো তুলেছিলাম, তা দেখি এখনো মাঝে মাঝে। ভাল লাগে দেখতে।
তুই যাবার ৩দিন পর , আমরা সবাই কক্সবাজার,ইনানী গিয়েছিলাম।খুব আনন্দ করেছি।
হেলালের এই ফটোটা গোপনে তুলেছি। ফোন করে আবার বলে দিসনা।তাইলে এডিট করে মুছে ফেলতে হবে।
আমার একটা ফটো, দেখ কেমন ঝাপসা। এত বল্লাম- পরিস্কার ছবি তোল। তোর ভাবি তা তুললই না। এটা নাকি আরটিষ্টিক ছবি তোর ভাবি আবার আরটিষ্টিক ছবিও বোঝা শুরু করছে
জুন মাসে কানাডা গিয়েছিলাম।দেখলাম স্বপ্নের নায়াগ্রাকে। বিমোহিত আমি।কাছেই ছিল একটা ফুলের বাগান।ওটাও দেখলাম।এই ফুলের ঘড়িটা কোন সিনেমায় যেন দেখেছিলাম।
টরেন্টতে একটা মজার স্ট্যাচু আছে। চার্চিলের। মুর্তিটার মাথায় পাখীতে হাগু করে । আমাদের দেশটা শোষন কারিদের একজনের মাথা এখন পাখীর টয়লেট- ভাবতেই আনন্দ।
কানাডার বাচ্চারা আমাদের দেশের মতই দুষ্ট। এই বাচ্চাটা আমাকে ৩ টা ঘুসি দিয়েছিল। আমি অবশ্য খুব ব্যাথা পাইনাই।বাচ্চার মার কাছ থেকে ৩টা সিগারেট জরিমান আদায় করেছি
আম্মা প্রায়ই খাবার সময় তোর কথা বলেন।কখনো রান্নাঘরে ঢোকোনি তুই। আর এখন নিজে বাজার করে, নিজের রান্না তুই ই কর। আম্মার চোখে পানি এসে যায়। আমাদেরও খারাপ হয় মন তখন
আম্মাকে তখন বলি- এই দেখেন রাসেল ভাল আছে। আপনি একটুও চিন্তা করবেন না। কিন্তু নিজের কষ্টটাকে লুকাতে পাড়ি না
তোর কম্পিউটার এখন প্রিয় ব্যবহার করে। আমাকে ধরতেও দেয়না। আমি নাকি নষ্ট করে ফেলব। ছবি এডিট করে নিজে নিজেই। সিসি ক্লিনার দিয়ে ক্লিন করে পিসি।এরপর সাটডাউন। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। সারাদিন দুষ্টামি। স্কুলেও যাচ্ছে নিয়মিত।
কিছুদিন আগে- নিজের এই ছবিটা আকলো কম্পিউটারে ও
পৃথু কয়েকদিন আগে একটা প্রগ্রামে হাছন রাজার গান গেয়েছে। লিংক পৃথুর গান দিলাম দেখিস।
তোর ভাবি আমার উপ্রে খুব খবারদারী করছে। ৩ ছেলেকে তার পক্ষে নিয়েছে।রাত ১১টার পর নেট ইউজ করলে নাকি- ল্যাপটপ ফেলেদেয়া হবে। সিগারেট খাওয়া চলবেনা।বেশি টেনশন নেওয়া যাবেনা।আরো অনেক কিছু। এত খবরদারী আমার ভাল লাগেনা ফোনে বলে দিস তুই।
আমরা সবাই ভাল আছি। তুই ভাল থাকিস।সময়মত খাওয়া দাওয়া করিস।ঠান্ডায় খুব বেশি গরম কাপড় পরবি।শরীরের দিকে খেয়াল রাখিস।
ইতি।
তোর দাদা।
অক:রাসেল এই অংশটা পড়বি না। শেষ পত্র লিখেছি বিয়ের আগে বউরে।অনেক আগে।তাই লেখা একটু আউলা জাউলা লাগতে পারে। অনেক বড় হওয়ায় সরি
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:১৯