মাঝে কয়েকদিন গামছা-ফ্যাশনের ধুম পড়ে গিয়েছিলো। তা অনেকটা বিবি রাসেলের আর বুটিক শপ গুলোর কল্যাণে।কাদের সিদ্দিকী সাহেব কেও দেখতাম গলায় সব সময় গামছা ঝুলিয়ে রাখতো। সেটা ফ্যাশন নাকি উনার দেশপ্রীতি........তা আজো বুঝিনি। বাসায় ফেরার সময় একদিন দৈনিক বাংলার মোড়ে ফুটপাতে দেখলাম খুব সুন্দর,সুন্দর গামছা। সুন্দরের চেয়ে বড় কথা হলো গতানুগতিক গামছার তুলনায় লম্বা ও চওড়ায় বড়। ১ টা দিয়ে ফতু্য়া,২ টা দিয়ে অনায়াসে ভালো জামা বানানো যাবে। পছন্দ মতো কিনে এলাকার দর্জির কাছে গেলাম....... এ হলো সবচেয়ে চালাক ধরণের দর্জি। ক বললে ঙ পর্যন্ত বুঝে ফেলে। গামছা দেখে পন্ডিতের মত বলে.........
:"গামছা দিয়ে কেউ জামা বানাই নাকি?এটা তো ব্যবহার করার জিনিস"।
::"আমি বানাবো ।আপনার কি সমস্যা এতে?? গামছা জামা পড়ে থাকবো আর খাওয়ার পর জামাটা গামছা মনে করে হাত মুছবো। দরকার পড়ে তো শীতের দিনে পাতলা কম্বল কেটে জামা বানাবো"। (একবার তো এক মহিলাকে দেখেছিলাম কুমারখালীর বেট-শীট কেটে জামা বানাতে।)
দর্জি দেখলাম বেশ নাখোশ কারণ উনাকে বোল্ড করলাম বলে। যেদিন জামা আনতে গেলাম সেদিন দর্জি ব্যাটা খোশ-মেজাজে বললো...."আপনার গামছা জামা তো হিট,অনেকেই পছন্দ করেছে"। সেই মুহুর্তে নিজের ফ্যাশন জ্ঞান নিয়ে গর্বিত হলাম। অনেকেই গামছা জামা পড়লে প্রশংসা করতো। কয়েকজনকে কিনে ও দিয়েছি যেখান থেকে নিজে কিনতাম। বেশী খুশী হয়ে ঠিক করলাম আগামী ১ লা বৈশাখে গামছা শাড়ী পড়বো........।সবই ঠিক ছিলো। একদিন কাজের জন্য তড়িঘড়ি বাইরে যাচ্ছি রিক্সায় বসে আছি.... হঠাৎ করে দর্জির দোকানে চোখ পড়লো........একদম স্ট্যাচু হয়ে আছি........।একই রকম গামছা দিয়ে ফতুয়া বানিয়ে পরে আছে আবার দর্জি ব্যাটা সব কটা দাত বের করে হাসছে আর বলে......"ভালো আছেন? আপনার গামছা জামা তো এখনো পুরা হিট"।দর্জি পরে আছে গামছা ফতুয়া,সেটা কোন সমস্যা না। গামছা দিয়ে শুধু ফতুয়া কেন শার্ট,প্যান্ট আরো কিছু বানালে ও কোন সমস্যা নেই। কিন্তু কথা হলো উনি কেন একই কালারের,একই প্রিন্টের গামছা দিয়ে ফতুয়া বানালো???সেসময় মনে হলো সবাই ভাববে আমরা যুক্তি করে কাপড় বানালাম............প্রেস্টিজ টা রইলো কই?........পুরা পাংচার.......। পাশে রিক্সায় যে ছিলো হাসতে কোনমতে শুধু বলতে পারলো.."মানিকজোড় দেখলাম"।
অধিক শোকে পাথর হয়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই পোস্ট টাই লিখে ফেললাম...........