কৈশোরের অনেক স্মৃতি ঘেটে-ঘুটে সবচেয়ে দুঃখের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। তাই দুঃখের পোষ্ট হিসেবে এটা দিলাম। যখন ক্লাশ ফাইভে পড়ি তখন জ্বর থাকার কারণে ২য় সাময়িকের অংক পরীক্ষা দেওয়া হলো না নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। কয়েকদিন পর ভালো হলে স্কুল থেকে বলা হলো আরো যারা অংক পরীক্ষা দেয়নি আমি যেন তাদের সাথে পরীক্ষাটা দিই। ফাঁকি দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু অংক টিচারের বদৌলতে তা আর হলোনা। সরকারি বয়েজ আর গার্লস স্কুলের প্রশ্ন পত্র একই রকম হয় বলে পরিচিত এক ক্লাশ-মেট ছেলের অংক প্রশ্ন এনে শুধু ঐ ১০/১২টা অংক করেই বিপুল উৎসাহে স্কুলে গেলাম। ভাবলাম আমাদের সেকশনের যেহেতু একাই সেহেতু আলাদা করে কি আর প্রশ্ন পত্র দিবে???এইবার আমার লেটার-মার্ক পাওয়া ঠেকায় কে???এমন মনোভাব নিয়ে পরীক্ষা দিতে বসলাম। কিন্তু প্রশ্ন পাওয়ার পর চেহারা বাংলা পাঁচের মতন হয়ে গেলো।মাত্র ২ টা অংক আর ১টা জ্যামিতি কমন পড়লো। বেশী টেনশনে জ্যামিতির আবার প্রথম অংশটুকুই ভুলে গেলাম। ৩০মিনিটে যা পারি তা দিলাম বাকি সময় কি করবো??? এর পর করলাম জীবনের সবচেয়ে জ্ঞানের কাজ। যে ১০/১২টা অংক মাথায় কপি করেছি তা উত্তর পত্রে পেস্ট করে দিয়ে আসলাম। রেজাল্ট দেওয়ার আগে মাকে নিয়ে আসতে বললো টিচার। কেমন ঝড় যে আসবে সেটা বুঝতে পেরে চুপ-চাপ আছি। টিচার যে কত বকা দিলো তা আর না--ই বললাম। এরপর যা করলো তাতে করে আমার ছোট হৃদ্য়টা ভেঙ্গে খান খান(ব্লগার ইউনুস খান না কিন্তু) হয়ে গেলো। অংকে যা-ও ২৪ পেয়েছিলাম টিচার আমার কপি-পেস্টের ব্যাপারটা বুঝতে পেরে উত্তর পত্রের প্রথম পাতায় এ---ত্তো বড় অনেকটা ডিমের চাইতে বড় আকারের ডাবল জিরো দিলো। সারা জীবন দেখলাম উত্তর পত্রের উপরের বাম দিকে নম্বর দেয় আর আমাকে দিলো উত্তর পত্রের মাঝখানে।
সেইসময়ের বেদনাদায়ক স্মৃতির কথা মনে করে এই সময়ে এসে অনেক হাসি। কারণ,সেই টিচারের সাথে এখন পারিবারিক ভাবে আত্মীয়তা হয়ে গেছে।আগের কথা বললে উনি যতটা বিব্রত বোধ করেন তা দেখে এরচেয়ে বেশী মজা পাই ।পরে এটা অনেকেই বলেছে উনি দরকারের চেয়ে বেশী বাজে ব্যবহার করেছেন। আর এটাই উনার বিব্রত বোধের কারণ। একেই কি বলে মধুর প্রতিশোধ ???