আমাদের সমাজে ডিগ্রী, অনার্স পড়ুয়া কিংবা সমাপ্ত করা মৌলিকজ্ঞানহীন একাংশ মানুষ রয়েছে। এদের প্রতি আমার লেশমাত্র অভিযোগ নেই। এসব শিক্ষিতরা গৃহ শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে জীবনাচরণ করেন। অধিকাংশ যেহেতু মৌলিকজ্ঞানহীন তাই এরা গাইড কিংবা নোট বই'য়ের ওপর শতভাগ নির্ভরশীল। সৃজনশীল কাঠামো বিষয়ে এদের তেমন ধারণা নেই। না থাকাটাই স্বাভাবিক। জানা বা শেখারও এদের ইচ্ছা নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর পন্থা হলো "এত নম্বর অধ্যায়ের এত নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর মুখস্ত করে আসবা। এ paragraph ঐ letter মুখস্ত করবা"। এরা কিন্তু পরীক্ষায় পাশ করানোর শর্টকাটেও পটু। শিক্ষার্থীদের মাঝে "জ্ঞানের সিন্ধুতে স্পৃহা তৈরি করে দেওয়া, শিক্ষার রসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, অজানাকে জানার ক্ষুধা বাড়িয়ে দেওয়া, প্রত্যেকটি বর্ণ অর্থসহ বুঝে বুঝে পড়িয়ে দেওয়া" এ বিষয়গুলোর উপলব্ধি করার ধারণা উক্ত গুরুদের ক্ষমতার বাহিরে। আমার ক্ষোভ এখানেই, আমার বিদ্রোহ এখানেই। মেধাকে শান দিলে, যত্ন-সেবা নিলে উজ্জ্বলিত হতে থাকে অনুরূপভাবে এমনটি করতে ব্যর্থ হলে সে মেধায় ঘুণপোকা ধরে, ধীরে ধীরে ক্ষয়ে আসে।
গুটিকয়েক মাসিক মাইনের জন্য শিক্ষার এ অপকৌশল যদি কয়েক বছর ধরে বা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অনবরত চলতে থাকে তাহলে উক্ত বিষয়ে অজ্ঞাত অভিভাবক তার হতভাগা-পোড়াকপালি নন্দন-নন্দিনীর জন্য কোনো উপায়ান্তর খুঁজে না পেয়ে মেধাসম্পন্ন সন্তানটিকে "তোকে দিয়ে কিচ্ছুই হবে না" খেতাবটি দিয়ে দেয়। হায়রে ! অবুঝ মাতা-পিতাদ্বয়, এত বছরের মৌলিকজ্ঞানহীন অযোগ্য শিক্ষয়িতা-শিক্ষয়িত্রীর যাঁতাকলে আপনার শিশুর মেধার যে ক্ষতিসাধন হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার করাটা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো কাজ। এ রকম কোচিং ও গৃহশিক্ষক-শিক্ষিকারা সমাজের অনবরত অপূরণীয় ক্ষতি করে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। এরা লক্ষ লক্ষ সুন্দর-দীপ্তিমান ভবিষ্যৎগুলোকে আবর্জনায় রুপান্তর করে ডাস্টবিনে ফেলে চলেছে। এরা মূলত সমাজের কাছে অপরাধী। এদের প্রতি আমার দ্রোহ, ক্ষোভ, অতুষ্টি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:১০