ভূমিকা :
আমাদের জনপ্রিয় ব্লগার ত্রিভুজ কিছুক্ষন আগে একটা পোস্ট দিয়া ইতিহাস বিষয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছেনউনি সাধারনত:নিজের লেখার লিংক দিয়া জ্ঞান বিতরন করেন,এইবার দেখলাম সচলায়তনের পোস্ট(বাংলা সাইট সচলায়তন না,এইটা নিক সচলায়তন) নামের আরেক পোস্টের প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছেন।তবে খারাপ মানুষরা সচলায়তন কেও ত্রিভুজ ভাইয়ের আরেক নিক বলতে পারে,আমি সেই চিন্তা আপাতত:মাথা থেকে বাদ দেই।
তবে ত্রিভুজ ভাইয়ের পোস্ট দেখে কিছুটা দিলে দাগা খেয়েছি,উনি নিজে ইতিহাস বিশারদ মানুষ ,পুরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়া উনি একটি বিশাল কাজ করতেছেন,চানপুরের চানমিয়ার বয়ান শুদ্ধা সঠিক মুক্তি যুদ্ধ ইতিহাস লিখতেছেন,আর উনি কিনা ইতিহাসে মুজিবের অবদান নিয়া নিজেই তথ্য জানতে চান।আমরা অধম উনারে কী তথ্য জানাবো,উনি নিজেই তো তথ্যের ভান্ডার।
------------------------------------------
আসেন কিছু হোসেইনীয় কথাবার্তা বলি এইটা নিয়া:
১/.ত্রিভুজ এর কথা :
(কিন্তু যখন এই ঘটনা ঘটেছিলো তখন কি হয়েছিলো? বয়স্কদের কাছে জানতে চাইলেই যে কেউ এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।)
হোসেইন বললেন :বয়স্কদের কাছে জানতে চাইলে যে উত্তর পাই,সেই উত্তর কিন্তু ত্রিভুজের বয়স্কদের উত্তরের চাইতে ভিন্ন হয়।তার চাইতে আমি বলি সবাই দয়া করে ইতিহাসের কিছু বইপত্র পড়েন,কতো আর না পইড়া শুনা কথা দিয়া চালাবেন?
২/ত্রিভুজ এর কথা :
(বাস্তবতা হলো শেখ মুজিবের মৃত্যুতে দেশের একটি কুকুর বেড়ালও কাঁদেনি।)
হোসেইন বললেন : সত্যি কথা।কুকুর বেড়াল,ছাগল,শুওর এই সব ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরে গর্তে লুকাইয়া ছিল।মুজিব হত্যার মাঝ দিয়া তারা গর্ত থাইকা বাইরাইল।তার কেন কাদঁবে ?
এখনও তো কোন কুকুর বেড়াল,ছাগল,শুওর এইটা নিয়া কাদেঁ না। তারা বরং ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চালায়া যায়।
৩/ত্রিভুজ এর কথা :
(পাকিরা এদেশে তাদের সব্বোর্চ শক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার পরেও শেখ মুজিব কেন পাকিদের কাছে আত্মসমর্পন করেছিলো তা আমার কাছে অস্পষ্ট। আমার পড়া কোন বিপ্লবের কাহিনীতে আমি এরকম নজির দেখিনি। তাহলে কি শেখ মুজিব ছিলেন একজন গা বাঁচিয়ে চলা বিপ্লবী? নাকি অন্য কিছু?)
হোসেইন বললেন :
ত্রিভুজের পড়া বিপ্লবের কাহিনীগুলো কোনটা কোনটা একটু বললে বুঝতে সুবিধা হয়। কয়েকটা বিপ্লবের কাহিনী বলেন,আলোচনা করে দেখি।
যাউক,মূল কথা হইলো,এই পুরো বিষয়টি বুঝতে হলে পুরো ইতিহাসকে একসাথে আলোচনা করতে হইব।তখন ভুট্টো,ইয়াহিয়া গং ঘ্যানর ঘ্যানর কইরা চলতেছিল যে মুজিব ইন্ডিয়ার সাপোর্ট নিয়া পাকিস্তানে অশান্তি তৈরী করছে।এখন মুজিব যদি পালিয়ে ইন্ডিয়া যাইতেন,তাইলে সেই প্রচারনাটা জোর পাইত,আন্তর্জাতিক সাপোর্ট তখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যাইতো।
পাকি সরকার কইতো যে মুজিব নিজেই এই গন্ডগোল চালাইতাছেন আওয়ামীলীগরে নিয়া,এইখানে অন্যদলের সমর্থন নাই। কিন্তু মুজিব গ্রেফতার হওয়ার কারনে সেইটা বলা সম্ভব হলো না।তখন যুদ্ধটা জনমানুষের যুদ্ধে রূপান্তরিত হলো।
৪/ত্রিভুজের কথা :
(যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে বঙ্গবন্ধুর ভালো রকম ধূর্ততার পরিচয় দিয়েছেন। সকল আওয়ামীলীগাররা এরজন্য তাঁকে মনে মনে অবশ্যই ধন্যবাদ দিয়ে থাকে।)
হোসেইন বলেন :
হা:হা:হা:!
মুজিবকে মার্কটালি প্রশ্ন করেছিলেন যে 'মি:প্রাইম মিনিস্টার,আপনার কোয়ালিফিকেশন কী?"
মুজিবের উত্তর :আমি আমার মানুষদেরকে ভালোবাসি।
মার্কটালি :মি:প্রাইম মিনিস্টার,আপনার ডিসকোয়ালিফিকেশন কী?"
মুজিবের উত্তর :আমি তাদের অতিরিক্ত ভালোবাসি।
এখন বিষয়টি হলো যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দেয়া হয় নাই মুজিব আমলে।জামাতের পান্ডা নেতাদের বেশির ভাগই পলাতক ছিল নয়তো জেলে ছিল।গোলাম আযম মার্কা নেতারা তখন পাকিস্তানে ভাগছিল।
মাপ করে দেয়া হয়েছিল সাধারন রাজাকারদের।যারা মাসে দেড়শ টাকা বেতনের লোভে পুল-ব্রিজ-গুদাম পাহারা দিত।এদের কোন রাজনৈতিক চেতনা ছিল না,এরা ছিল জামাতিদের নিয়োগকৃত সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ।এদের নিয়ে কিন্তু এখনও আওয়ামীলীগ কোন উচ্চবাচ্য করে না।
-----------------------------------------------
৭৫ এর পটপরিবর্তন নিয়ে অনেক দীর্ঘ কথা লেখা যায়।আপাতত:এর সবগুলার দরকার দেখছি না।প্রশ্ন করলে উত্তর দিব।
সত্যি সত্যি যদি কারো ইতিহাস নিয়ে জিজ্ঞাস্য থাকে,তারা
টাইমস পত্রিকার রিপোর্ট নিয়ে হাসান মোরশেদের বিশ্লেষন ও অনুবাদটি পড়ে দেখলে কিছু তথ্য পেতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৪